উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টা করছে: জাহাঙ্গীর
ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন।
তিনি বলেছেন, ‘বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এখানে ভোটের পরিবেশ নেই। আমরা শুনেছি, আওয়ামী লীগ বিভিন্ন থানা থেকে লোক এনে ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টা করছে। তারপরও জনগণ আমাদের সাথে থাকায় আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করি সফল হবো।’
বুধবার (১১ নভেম্বর) নিজ নির্বাচনী কার্যালয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সাথে নিয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীরের সাথে ছিলেন, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক আমান উল্লাহ আমান,সমন্বয়ক আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্মমহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, জলবায়ু বিষয়ক সহ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, সাবেক সংসদ সদস্য এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল বাছিত আনজু, এজিএম শামসুল ইসলাম প্রমুখ।
জাহাঙ্গীর বলেন, ‘গত ২৪ অক্টোবর থেকে প্রশাসনের অনুমতি নিয়েও কর্মসূচি করতে পারিনি, প্রতিটি গণসংযোগে আওয়ামী লীগ বাধার সৃষ্টি করেছে।’
তিনি জানান, গত ৭ নভেম্বর গভীর রাতে ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটি ব্যানার নির্ভর ঘরে আওয়ামী লীগ নিজেরা আগুন দিয়ে ঢাকা-১৮ আসনের বিএনপির ২৩৫ জন নেতার নামে মামলা দেয়া হয়েছে। পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের ঘরে ঘরে গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। এমনও বলা হচ্ছে, ১২ তারিখের আগে যদি কাউকে এলাকায় দেখা যায় তাদের মেরে ফেলা হবে। মহিলাকর্মীরাও নিস্তার পাচ্ছে না। এভাবেই চলছে।
আওয়ামী লীগের নানা সন্ত্রাসী ঘটনার চিত্র তুলে ধরে ধানের শীষের প্রার্থী বলেন, ‘আমরা যখন পুলিশকে বলি এসব ঘটনায় মামলা কেন নিচ্ছেন না? জবাবে তারা বলে, উপরে যোগাযোগ করেন। নির্বাচনের সময় উপর বলতে যা বুঝি-নির্বাচন কমিশন। আমরা তাদের সাথেও দু’বার মিটিং করেছি, কোনও সহযোগিতা পাইনি। নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ প্রশাসন সবাই পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। এ কারণে ভোটারাও শঙ্কিত।’
তিনি বলেন, ‘তারপরও আমরা জানি, ভোটাররা দীর্ঘদিন ভোট দিতে পারছে না। আশা করছি, ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যাবে। ক্ষমতাসীনদের সন্ত্রাস, দুর্নীতি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে তারা ভোট দেবে। আমাদের পোলিং এজেন্টরাও প্রতিটি বুথে থাকবে। নেতাকর্মীরাও কেন্দ্রের আশাপাশে থাকবে। আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। জনগণের ভোটে ধানের শীষের বিজয় হবে। এখান থেকেই জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ ও গণতন্ত্রেও উত্থান হবে।’
‘বিদ্যমান বাস্তবতায় ঢাকা-১৮ আসনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়’ উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘জনগণ যেহেতু আমাদের সাথে আছে তাই চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করি, আমরা সফল হবো।’
অপর এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ‘ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যেতে চায়। কিন্তু তাদের যেতে দেয়া হয় না। একজন সাধারণ মানুষ ভোট দিয়ে বাসায় ফিরে আসতে চায়। যখন দেখে সন্ত্রাস-পুলিশি হয়রানি তখন ভোট দিতে যেতে তারা ভয় পায়। আমরা জনগণের কাছে গিয়ে বলার চেষ্টা করেছি, যতই বাধাই আসুক আপনারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন।’
তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ১৩৬ কেন্দ্রে কোনও ভোট পড়েনি। সেখানে কি আওয়ামী লীগ-বিএনপি নেই? তার মানে আওয়ামী লীগ বিনাভোটেই নির্বাচিত হতে চায়। তারা ঢাকা-১৮ আসনেও সেই চেষ্টা করছে।’
দেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও বিএনপিকে সমর্থন করে উল্লেখ করে ধানের শীষের এই প্রার্থী বলেন, ‘কিন্তু যখন একটি রাষ্ট্র ভোটাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে সেখানে আমরা নিরুপায় হয়ে যাই। তারপরও জনগণকে সাথে নিয়ে এসব সন্ত্রাস প্রতিহত করার চেষ্টা করবো। ভোটাদের যদি ভোট কেন্দ্রে যেতে দেয়া না হয়, আমাদের পোলিং এজেন্টদের যদি বের করে দেয়া হয় তাহলে জনগণ যে সিদ্ধান্ত নেবে সেই অনুযায়ী কাজ করবো।’
সংবাদ সম্মেলনে আমান উল্লাহ আমান ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ওয়ার্ড-থানার নেতাকর্র্মীদের বাড়িতে পুলিশি হানা দেয়ার একটি চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘নির্বাচনের যে পরিবেশ তা এখানও পাচ্ছি না। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আপনারা দেখেছেন এর আগে ঢাকা-৫ আসনে কীভাবে নির্বাচন হয়েছে। সেখানে পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে, ভোটাদের কেন্দ্র যেতে দেয়া হয়নি।’