গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান যদি না থাকে তাহলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে পারে না: মির্জা ফখরুল
আমেরিকার নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগ ও নির্বাচন কমিশনের শিক্ষা নেওয়া উচিত জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের ও নির্বাচন কমিশনের শিক্ষা নেওয়া উচিত যে নির্বাচন কমিশন কাকে কলে। আজকে আমেরিকার নির্বাচনের যে অথরিটি তারা সমস্ত চাপের মুখেও অবিচল থেকেছে। অবিচল থেকে তারা জনগণের রায়কে সমুন্নত রেখেছে। দ্যাট ইজ ডেমোক্রেসি। এটাই গণতন্ত্র। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান যদি না থাকে তাহলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে পারে না।
মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। চলমান দুটি আসনের উপ-নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী হতে হবে। বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ শক্তিশালী হতে হবে। প্রশাসনকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ এবং জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে আমিরকার জনগণ অনেকে কাঁদছে তারা ভয়ঙ্কর একটা অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে। স্বস্তি পেয়েছে। সারা পৃথিবীর মানুষ আজকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। একটা মাত্র কারণ কতৃত্ববাদীতার যে চাপ, যে অসহায়ত্ব অবস্থা সেখান থেকে তারা বেরিয়ে আসতে চায়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের প্রধান কারণই হচ্ছে মিডিয়া স্যুড রাইজ আপ। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে আপনারা দেখেছেন জাস্ট মিডিয়া-ওয়ানলি মিডিয়া, যারা কোনো কিছু ঘটতে দেয়নি। তারা অনেক চাপকে পরাজিত করে শক্ত হয়ে দাড়িয়েছে। সিএনএন এর ওপরে কত অত্যাচার গেছে। আমরা সবাই জানি পত্রিকায় এসেছে। কিন্তু তারা শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
তিনি বলেন, আজকে আমাদের মিডিয়াকে শক্ত হয়ে দাঁড়াতে হবে। আমরা রাজনৈতিক দল চেষ্টা করছি। শত বাধাবিপত্তি মোকাবিলা করছি। শত মামলা মোকদ্দমা, সহকর্মীদের মৃত্যু, নেত্রীর অন্যায়ভাবে কারাবাস, নেতা নির্বাসিত, তারপরও আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু সমস্যাতো আমাদের একার না, আমি বার বার বলেছি, এই সমস্যা শুধু বিএনপির সমস্যা না। এটা দেশের সমস্যা, জনগণের সমস্যা।
বাংলাদেশের এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে আর সম্ভব না জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা ডেস্ট্রয় হয়ে গেছে। ঢাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে পিস্তল ধরে নেতাদের স্ত্রীকে বলেছে তাকে বলবেন বাড়িতে না থাকে। সিরাজগঞ্জে বাড়ি থেকেই বের হতে দেয় না। সেখানে প্রয়াত নাসিম সাহেবের ছেলে নির্বাচন করছেন। তারা অত্যন্ত প্রভাবশালী। কাউকে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতেই দিচ্ছে না। সেখানে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে, প্রচারণাই চালানো যাচ্ছে না।
ঢাকা-১৮ আসনে একই অবস্থা চলছে। তারপরও সেখানে বের হয়ে এসে প্রচার করছে। আপনারা দেখেছেন হাজার হাজার মানুষ বেরিয়ে প্রচার করছে। আমরা অনেক আশাবাদী, কিন্তু আবার ওই আশঙ্কায় থাকি যে ২০১৮ সালের আগের রাতে যে নির্বাচন, অন্যান্য উপ-নির্বাচনগুলোতে যে অবস্থা, মেয়র ইলেকশনের যে অবস্থা, তাতে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তারপরও আমরা বলবো, জনগণের রুখে দাঁড়াতে হবে। তাদের অধিকারের জন্য তাদের লড়াই সংগ্রাম করতে হবে। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও কথা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ঢাকা-১৮ আসনে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক আমান উল্লাহ আমান। তিনি ঢাকা-১৮ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় তুলে ধরেন। তিনি হামলা-মামলার বিবরণ দেন।
এছাড়া বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুও সেখানে বিভিন্ন অনিয়ম ও প্রচারণায় বাধাদানের বিষয়ে তুলে ধরেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় দপ্তরের চলতি দায়িত্বে থাকা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনে আগামী ১২ নভেম্বর ভোটগ্রহণ করা হবে।