হাসপাতাল কর্মচারীদের চার মিনিটের মারধরে এএসপির মৃত্যু!
রাজধানীর একটি হাসপাতালের কর্মচারীদের মারপিটে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ আনিসুল করিমের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৯ নভেম্বর) আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। তিনি কিছুদিন থেকে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন।
এ ঘটনায় পরিবার অভিযোগ করেছে, ভর্তির পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে চিকিৎসা না দিয়ে মারপিট শুরু করে। এতেই তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হাসপাতালের ব্যবস্থাপকসহ ছয়জনকে আটক করেছে।
অন্যদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করার চেষ্টা করছিলেন আনিসুল করিম।
আনিসুলের ভাই রেজাউল করিম জানান, পারিবারিক ঝামেলার কারণে আনিসুল মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার সকালে তাকে হাসপাতালটিতে ভর্তি করা হয়। এরপর কর্মচারীরা তাকে নিয়ে একটি কক্ষে যায়। এরপর তারা জানায় আনিসুল অজ্ঞান হয়ে গেছে। সেখান থেকে তারা তাকে দ্রুত হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ওই হাসপাতাল থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ জব্দ করেছে পুলিশ। ফুটেজে দেখা যায়, তাকে টেনে হিঁচড়ে কর্মচারীরা হাসপাতালের ভেতরে নিয়ে যাচ্ছে। এরপর একটি কক্ষে ঢোকানো হয়। আনিসুলকে হাসপাতালের ছয়জন কর্মচারী মিলে মাটিতে ফেলে চেপে ধরে এবং আরও দুজন কর্মচারী তার পা চেপে ধরে বসে আছেন। অন্য দুজন তার মাথায় কনুই দিয়ে আঘাত করছে।
ওই সময় হাসপাতালটির ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। একটি নীল কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুলের হাত পেছনে বাঁধা হয়। এর কয়েক মিনিট পরেই আনিসুল নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
পরে এক কর্মচারী নিহত আনিসুলের মুখে পানি ছেটান। তার কয়েকজন মিনিট পর সাদা এপ্রোন পরিহিত এক নারী কক্ষে প্রবশে করেন। কক্ষে ঢুকে ওই নারী তার বুকে পাম্প করার চেষ্টা করছিলেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মৃত্যুঞ্জয় দে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে। আনিসুলের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
আনিসুল করিম ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। সর্বশেষ তিনি বরিশাল মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি এক সন্তানের জনক। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন।