সু কির অধীনে গণতন্ত্রের পরীক্ষা হচ্ছে মিয়ানমারের নির্বাচনে: যে পাঁচটি বিষয় জানা দরকার

0

৮ নভেম্বর মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২০১৫ সালের ভূমিধস বিজয়ের পর এই প্রথমবারের মতো পরীক্ষায় পড়তে যাচ্ছে স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু কি আর তার ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি। 

এ বিষয়ে যে পাঁচটি বিষয় জানা দরকার। 

কিসের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে?

মিয়ানমারের ভোটাররা পার্লামেন্টের উচ্চ ও নিম্নকক্ষের জন্য ভোট দেবে। প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থী বিজয়ী হবেন। উচ্চকক্ষে ১৬৮টি এবং নিম্নকক্ষে ৩৩০টি আসন রয়েছে। তবে ইউনিয়ন ইলেকশান কমিশন ঘোষণা দিয়েছে যে, ‘নিরাপত্তাজনিত কারণে’ বেশ কয়েকটি আসনে নির্বাচন হবে না। এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা হয়েছে এবং স্বচ্ছতার অভাবের অভিযোগ উঠেছে। 

নির্বাচনের পর উভয়কক্ষের যৌথ ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। পার্লামেন্টে সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। 

https___s3-ap-northeast-1.amazonaws.com_psh-ex-ftnikkei-3937bb4_images__aliases_articleimage_2_4_7_6_30276742-3-eng-GB_20201030-Myanmar-parliament-pie

অং সান সু কি আর তার এনএলডি কি আবার জিতবে?

এনএলডি সবচেয়ে বেশি ভোট পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

মিয়ানমারের জাতীয় বীর জেনারেল অং সানের মেয়ে এবং নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী সু কি দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক। ২০০৮ সালের সংবিধান অনুসারে কোন ব্যক্তির সন্তানের বিদেশী নাগরিকত্ব থাকলে সে প্রেসিডেন্ট হতে পারবে না। সু কির প্রয়াত স্বামী ব্রিটিশ ছিলেন এবং তাদের দুই ছেলের বিদেশী নাগরিকত্ব রয়েছে। 

সু কি এখনও সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। বিশেষ করে জাতিগত বামার ও সংখ্যাগুরু বৌদ্ধদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা অনেক। সন্দেহ নেই যে, নির্বাচনে এনএলডিই সবচেয়ে বড় দল হিসেবে আবীর্ভূত হবে। 

জাতিগত দলগুলো কি নির্বাচনে ফলে প্রভাব ফেলবে?

জাতিগত সংখ্যালঘুরা মিয়ানমারের জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ। সামরিক জান্তার অধীনে যে সব সশস্ত্র গ্রুপের আবীর্ভাব হয়, তারা স্বায়ত্বশাসন ও কনফেডারেশানের জন্য সংগ্রাম করছে। 

এনএলডির ব্যাপারে সংখ্যালঘুদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেছে। শান্তি ও জাতীয় সমঝোতার আশ্বাসে ২০১৫ সালে এনএলডিকে সমর্থন দিয়েছিল তারা। কিন্তু শান্তি অর্জনে ব্যর্থ হয়েছেন সু কি। শান্তি সম্মেলন হলেও বহু জাতিগত মানুষ গৃহযুদ্ধের মধ্যে আছে। ২০১৮ সাল থেকে বিভিন্ন জাতিগত দলগুলো একজোট হয়েছে এবং নভেম্বরের নির্বাচনে একটা বিকল্প সামনে নিয়ে আসবে। 

সামরিক বাহিনীর কি এখনও রাজনৈতিক ক্ষমতা আছে?

উভয় কক্ষেই সামরিক বাহিনীর ২৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রয়েছে। সে কারণে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলো এনএলডিকে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হবে। তাছাড়া সবচেয়ে বড় বিরোধী দল ইউএসডিপি হলো সামরিক বাহিনীর মদদপুষ্ট। বিভিন্ন বিলে ভোটাভুটির ক্ষেত্রে এই দলটি সাধারণত সামরিক বাহিনীর পক্ষে অবস্থান নেয়। 

সত্যিকারের গণতান্ত্রিক বিবর্তন যারা চান, তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সংবিধান সংশোধনের বিষয়টি। কিন্তু ৭৫ শতাংশ ভোট পেলেই কেবল সংবিধান সংশোধন সম্ভব। আর এখানেই সামরিক বাহিনীর ভেটো দেয়ার ক্ষমতা রয়ে গেছে। 

নির্বাচনের ফল কি অর্থনৈতিক নীতি ও বিদেশী বাণিজ্যের উপর প্রভাব ফেলবে?

২০১৮ সালে যে মিয়ানমার সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট প্ল্যান (এমএসডিপি) গ্রহণ করা হয়, সেটা আসলে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক আধুনিকায়নের পরিকল্পনা। এতে অবকাঠামো উন্নয়নের উপর মনোযোগ দেয়া হয়েছে এবং নির্বাচনের পরেও এটা অব্যাহত থাকবে। 

তবে এনএলডি যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হয় এবং জাতিগত সংখ্যালঘু দলগুলোর সাথে জোট গড়ে যদি থাকে ক্ষমতায় থাকতে হয়, তাহলে আইনি প্রক্রিয়ার গতি কমে যাবে। জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, খনি এবং অন্যান্য প্রকল্পের কাজও বাধাগ্রস্ত হবে, কারণ জাতিগত জনগোষ্ঠির উপর এগুলো সরাসরি প্রভাব ফেলে। 

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com