উন্নয়ন নয়, নেতাদের লুটপাটের সুযোগ দিতেই কোটি কোটি টাকার প্রকল্প!
দেশে কথিত উন্নয়নের নামে শত শত প্রকল্পের সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাত নতুন কিছু নয়। সরকারের মন্ত্রী-এমপি, উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান-মেম্বাররাই এসব লুটপাট-আত্মসাতে জড়িত।
দেখা গেছে, শেখ হাসিনা সরকার সারাদেশে প্রতিদিন যেসব উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করছেন, সেগুলো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চেয়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় বেশি করা হচ্ছে। এসব উন্নয়ন প্রকল্প থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই বেশি ফায়দা নিচ্ছে। এভাবে দেশের প্রতিটি এলাকায় কথিত উন্নয়ন প্রকল্পের নামে শত শত কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে দলের নেতাকর্মী রাতারাতি কোটিপোতি বোনে যাচ্ছেন।
সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ৭ প্রকল্পে বরাদ্দের ৬৮ কোটি ১৬ লাখ টাকার মধ্যে ৩৭ কোটি ৭ লাখই আত্মসাৎ করা হয়েছে। এর পরিমাণ মোট অর্থের প্রায় ৫৪ দশমিক ৪ শতাংশ। এই দুর্নীতিতে বিভিন্নভাবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর যোগসাজশ আছে। এসব প্রকল্প রাজনৈতিক সুপারিশের ভিত্তিতে অনুমোদন দেয়া হয়। ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী থেকে শুরু করে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বাররাও এসব দুর্নীতির সাথে জড়িত।
জানা গেছে, রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকার জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ৭ প্রকল্পে ৬৮ কোটি ১৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। এর মধ্যে ৩৭ কোটি ৭ লাখ টাকাই আত্মসাৎ করা হয়েছে। এর পরিমাণ মোট অর্থের প্রায় ৫৪ দশমিক ৪ শতাংশ। এই দুর্নীতিতে বিভিন্নভাবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর যোগসাজশ আছে। এসব প্রকল্প রাজনৈতিক সুপারিশের ভিত্তিতে অনুমোদন দেয়া হয়।
বাংলাদেশে ১৯টি উপকূলীয় জেলা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবগুলো জেলার অধিবাসীরাই বিভিন্নভাবে চরম হুমকির মুখে রয়েছে। কিন্তু এই সমস্যাগুলো বর্তমান সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জোরালোভাবে তুলে ধরতে পারছে না।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উপকূল অঞ্চল গুলোতে যে বাঁধ দেওয়া হয়েছে তা প্রায় বয়স প্রায় ২০ বছররের পুরনো এরপর সরকারি উদ্যোগে নতুন কোন বাঁধ নির্মাণ করা হয়নি। কোন প্রকার দুর্যোগ দেখা দিলে এলাকার মানুষের স্বেচ্ছাশ্রম ও কয়েকটি এনজিওর সহায়তায় বাঁধ মেরামত করা হয়। যা টেকসই হয় না বরং আরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। সরকার বলছে, বাঁধের জন্য আলাদা কোন বরাদ্দ নেই নিজ উদ্যোগে নির্মান করতে হবে বাঁধ। কিন্তু বাস্তবতা দেখা যায়, এত দিন পর্যন্ত ভুক্তভোগীরা নিজ শ্রম দিয়ে ক্ষণিক সংস্কার করলেও প্রতিবছরই স্বীকার হচ্ছে বন্যায়। হাজার হাজার মানুষ হারাচ্ছে বসতভিটা। আর এসব দুর্যাগ দেখা দিলেই সরকারের অপরিকল্পিত বিভিন্ন প্রকল্প স্থানীয় ক্ষমতাসীন নেতাদের ধনবান করে তোলে। প্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কোন উন্নতি হয়না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার প্রতিবছর উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য শত শত কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও এসব টাকার কোনো কাজ হচ্ছে না। সরকারের বিভিন্ন মহল এনজিও’র নামে দোকান খুলে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়ে এগুলো লুটপাট করছে। শুধু উপকূল নয় শেখ হাসিনা সরকার সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে একটি দুর্নীতির মডেল হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্য উন্নয়ন নয় বিভিন্ন অপরিকল্পিত প্রকল্পের নামে নেতাদের সুবিধা দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা।