১০ মাস বিদ্যালয়ে না গিয়ে বেতন তুললেন এমপি রতনের দ্বিতীয় স্ত্রী
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের দ্বিতীয় স্ত্রী তানভী ঝুমুর।
অভিযোগ এসেছে, গত ১০ মাস ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন তানভী ঝুমুর। কিন্তু বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থেকেও বেতন ঠিকই তুলে নিচ্ছেন তিনি।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অসুস্থতাজনিত কারণ দেখিয়ে মাত্র একদিনের ছুটি নিয়েছিলেন তানভী ঝুমুর। অথচ এর পর থেকে গত ১০ মাস ধরে বিদ্যালয়ে আসছেন না এ শিক্ষিকা।
অনুপস্থিত থেকেও কীভাবে নিয়মিত বেতন নিয়ে যাচ্ছেন এ শিক্ষিকা সে বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের কয়েক সদস্য জানিয়েছেন, এমপির স্ত্রী হওয়ায় এ বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা মুখ খুলতে নারাজ।
আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন এমপি রতনের দ্বিতীয় স্ত্রী তানভী ঝুমুর।
তানভী ঝুমুর এখন কোথায় প্রশ্নে তারা জানান, বর্তমানে সুনামগঞ্জেই থাকেন না তানভী ঝুমুর। ঢাকায় ন্যাম ভবনে স্বামী এমপি রতনের ফ্ল্যাটে থাকছেন তিনি।ঠিক কতদিন ধরে তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত আছেন তানভী ঝুমুর, প্রশ্নে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, আমি এই বিদ্যালয়ে এসেছি ছয় মাস হলো। এসে উনাকে পাইনি। তবে উপস্থিতির খাতা দেখে জানতে পারলাম, তানভী ঝুমুর গত ৭ জানুয়ারি একদিনের ছুটি নিয়ে আর বিদ্যালয়ে আসেননি।
এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকবার তাকে ফোন দিয়েছি। তিনি একবারও ফোন রিসিভ করেননি। তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এনামুর রহীম বাবর জানান, উপজেলায় তানভী ঝুমুর নামে কোনো শিক্ষিকা আছেন বলে জানা নেই আমার।
এদিকা শিক্ষিকা তানভী ঝুমুরের বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে বেতন তুলে নেয়ার বিষয়টি নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি তাহিরপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিপ্লব সরকার।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকা তানভী ঝুমুর ও তার স্বামী সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বক্তব্য নেয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত তাহিরপুরের দক্ষিণ শ্রীপুরের মৃত আবুল কাশেমের মেয়ে তানভী ঝুমুর। তিনি তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের তরং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ পান। প্রাথমিক শিক্ষা দফতরে তদবির করে তিনি ডেপুটেশনে আসেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি অসুস্থতাজনিত কারণ দেখিয়ে একদিনের ছুটি নেন তিনি। কিন্তু এরপর থেকে আর স্কুলে আসেননি তানভী।