মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টকে উৎখাতের হুমকি সেনাপ্রধানের!

0

মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমক্রতভসি (এনএলডি)- নেতৃত্বাধীন সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনী হুমকি দিয়ে বলেছে যে সরকার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে প্রেসিডেন্ট উ ইউন মাইন্তকে ইমপিচ করা হবে।

চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে সেনাবাহিনী প্রথম বাক্যবাণটি ছোড়ে ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) লক্ষ্য করে, এর নির্বাচন প্রস্তুতিতে নানা ভুল পদক্ষেপের জন্য। আগামীকাল রোববার ৮ নভেম্বর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেনাবাহিনী হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলে যে, ইসির ভুলের দায় এনএলডি সরকারকে নিতে হবে। এই হুঁশিয়ারির পর সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ইসির অবস্থাপনার কারণে তিনি এবারের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে উদ্বিগ্ন।

বুধবার মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট অফিস থেকে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলা হয়, নির্বাচন নিয়ে সেনাবাহিনীর মন্তব্যগুলো অস্থিতিশীলতা উসকে দিচ্ছে এবং জনগণের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করছে। আর এটা ২০০৮ সালের সংবিধান ও আইনের লঙ্ঘন। এতে আরো বলা হয়, ইসি হলো স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানকে সরকারের নির্দেশে চলতে হবে এমন কোনো আইন নেই।

পরদিন এর পাল্টা জবাব দেয় সেনাবাহিনী। প্রেসিডেন্টের দফতরের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে সেনাবাহিনী দীর্ঘ এক বিবৃতিতে বলে, ইসির কাজের ব্যাপারে সরকার তার দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সদস্যদের নিয়োগ ও ইমপিচ করেন। তাই ইসির ব্যর্থতার জন্য সরকারের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।

সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি কর্মকর্তারা সংবিধান অনুযায়ী শপথ নিয়ে থাকেন যে, তারা তাদের সাধ্যমতো সততার সাথে দায়িত্ব পালন করবেন। এতে আরো বলা হয়, মনে রাখতে হবে যে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট যদি তাদের দায়িত্ব পালনে অসমর্থ্য হন বা পালন না করেন তাহলে সংবিধানে তাদেরকে ইমপিচ করার বিধান রয়েছে। সেনাবাহিনী সংবিধানের দোহাই দিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে তাদের হস্তক্ষেপকে যৌক্তিক করারও চেষ্টা চালায়। সংবিধানে সেনাবাহিনীকে দেশের অভিভাবক বলা হয়েছে।

এ দিকে আইনজীবী উ তিয়েন থান ও বলেন, সেনাবাহিনী ও সরকারের মধ্যে সাম্প্রতিক বিরোধ বলে দিচ্ছে যে, তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক নেই। তিনি ইসির ভুলগুলো সংশোধনের জন্য সেনাবাহিনী ও সরকারকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান। পরস্পরকে দোষারোপ করে কোনো লাভ হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. ইয়ান মিও থিয়েন বলেন, সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্পর্কে টানাপড়েন তীব্র হয়ে উঠছে। তার মতে, ইসির সংবিধানেই দুর্বলতা নিহিত। তাতে সুস্পষ্ট সংজ্ঞা নেই। ফলে দুই পক্ষ নিজ নিজ দাবিতে অটল থাকায় সঙ্ঘাত তীব্র হয়ে উঠছে। তবে নির্বাচনের আগে ইসির কাজগুলো যে সন্তোষজনক নয় তাতে কোনো সন্দেহ নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সূত্র : দ্য ইরাবতী

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com