ইরাক যুদ্ধের বিরোধিতা কেন করেছিলেন বাইডেন?

0

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক আমেরিকান সিনেট কমিটিতে কাজ করেছেন দীর্ঘ দিন।

সিনেটের এই কমিটির সভাপতি হিসেবে ২০১২ সালের অক্টোবরে আমেরিকার রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের ইরাক যুদ্ধে যাবার বিষয়টিকে অনুমোদন দেবার সিদ্ধান্ত ছিল তার ওপর।

এর ১১ বছর আগে উপসাগরীয় যুদ্ধের প্রাক্কালে প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডাব্লিউ বুশকে সাদ্দাম হুসেনের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অনুমোদনের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন বাইডেন ।

“কুয়েতের মুক্তির জন্য আমেরিকানদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবার আগে আমাদের উচিত দেখা কোনরকম বিকল্প পথ আমরা চেষ্টা করেছি কিনা, “সিনেট কমিটির শুনানিতে বলেছিলেন বাইডেন। “আমরা করিনি।”

বাইডেনের হুঁশিয়ারি স্বত্ত্বেও উপসাগরীয় যুদ্ধের পক্ষে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং ওই যুদ্ধে আমেরিকান মারা যায় অল্প সংখ্যক।

এরপর থেকে বাইডেনকে পররাষ্ট্র ও জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতির ক্ষেত্রে দুর্বলচিত্ত বলে তুলে ধরা শুরু হয়।

ওই ভোট নিয়ে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হবার পরবর্তী কয়েক বছর বাইডেন আন্তর্জাতিক বিষয়ে কট্টর অবস্থান দেখাতে শুরু করেন, যেমন বলকান গৃহযুদ্ধে আমেরিকান অবস্থান, ইরাকে বোমা হামলা এবং আফগানিস্তানে দখলদারিত্ব কায়েমের প্রতি তার সমর্থন প্রকাশ করে।

প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ ইরাকের কাছে ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র আছে এই অভিযোগে যখন ইরাকে নতুন করে যুদ্ধ শুরুর প্রস্তাব করেন, তখন মি. বাইডেন তাতে জোরালো সমর্থন দিয়েছিলেন।

“আমি মনে করি না এটা যুদ্ধ করার জন্য একটা হুজুগ, আমার বিশ্বাস এটা শান্তি ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে অভিযান,” তিনি বলেন।

বাইডেনের ইরাক যুদ্ধে সমর্থন নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাতা মার্ক ওয়েসব্রট বলেছেন, “যেসব ডেমোক্র্যাট এই যুদ্ধ সমর্থন করেছিলেন, তাদের মনে হয়েছিল এই যুদ্ধ সমর্থন না করার ঝুঁকিটা হলো, যুদ্ধটা যদি সফল হয়ে যায়, তাহলে তার থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার ক্ষেত্রে তারা পেছিয়ে পড়বেন। “

তবে তার ওই সমর্থনের কারণে অনেক ডেমোক্র্যাট সমর্থকের সমালোচনার মুখে তিনি পড়েন।

তার আত্মকথায় ২০০৭ সালে ইরাক যুদ্ধ নিয়ে অধ্যায়ের শিরোনাম তিনি দেন – “আমার ভুল” । তিনি লেখেন : “তাদের আন্তরিকতা ও দক্ষতা আমি বুঝতে ভুল করেছিলাম।”

ইরাক যুদ্ধের পর তিনি বামপন্থার দিকে ঝোঁকেন। তিনি ইরাকে আমেরিকান সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধির বিরোধিতা করেন এবং সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।

ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনী জোরদার করার এবং ওসামা বিন লাদেনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর বিপক্ষে পরামর্শ দেন।

আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হবার লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দেবার পর তিনি ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে সৌদি আরবের প্রতি আমেরিকার সমর্থন বন্ধ করার পক্ষে মত তুলে ধরেন।

ইরানের সাথে পরমাণবিক কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখা, জলবায়ু নিয়ে প্যারিস চুক্তি সমর্থন, চীনে মার্কিন স্বার্থ বজায় রাখা এবং ইউক্রেনের গণতান্ত্রিক সংস্কার উৎসাহিত করা সহ নানা বিষয়ে তিনি গত কয়েক বছর কংগ্রেসের ওপর চাপ দিয়েছেন।

তবে চীন ও ইউক্রেন নিয়ে বাইডেনের অবস্থানকে বিভিন্ন প্রচারণায় কড়া ভাষায় আঘাত করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, মবাইডেন চীনের বেশি ঘনিষ্ঠ এবং ইউক্রেন নিয়ে তার আগ্রহ মূলত ইউক্রেনে তার ছেলে হান্টারের ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষার খাতিরে।

সূত্র : বিবিসি

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com