জনগণের সমর্থনহীন ভোটারবিহীন ভোট ডাকাত আ.লীগ সরকার এখন ‘লাইফ সাপোর্টে’: গয়েশ্বর
ভোটারবিহীন বর্তমান অবৈধ জুলুমবাজ সরকার সরকার ‘লাইফ সাপোর্টে’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেছেন, ‘কারো দুঃসময়ে তার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া চাওয়ার মানসিকতা সেটা আমাদের মধ্যে এখনও আছে। আমরা আপনজনকে আপন ভাবতে পারি। আপনজনকে আপন ভাবতে পারলেই আমাদের মাঝে সুদৃঢ় ঐক্য গড়ে উঠে।’
করোনা পরিস্থিতিতে দেশের স্বাস্থ্যখাতের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘দেশের স্বাস্থ্যখাত এখন ভেন্টিলেশনে। সরকারও কিন্তু ভেন্টিলেশনের খুব একটা বাইরে না। ভেন্টিলেশনের যে একটা পাইপ থাকে, সেই টিউবটা খোলার লোক নাই। এটা খুললে কিন্তু যারা লাইফ সাপোর্টে থাকে, সাথে সাথে তার মৃত্যু ঘোষণা হয়। বর্তমান সরকারে অবস্থা তাই মনে হয়। জনগণের সমর্থনহীন ভোটারবিহীন ভোট ডাকাতের সরকার লাইফ সাপোর্টে থাকা ছাড়া অন্য কোথাও থাকার সুযোগ নাই। এই লাইফ সাপোর্টের টিউবটা খোলার দায়িত্ব যদি জনগণ নিয়ে নেয় তাহলে সরকারের মেয়াদ খুব বেশি থাকার কথা না।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আজকে আমাদের এই দুরাবস্থা থেকে পরিত্রাণের একটামাত্র পথ, একটা জাতীয় ঐক্য। দলের নেতাকর্মী, নানা ভাবনা, নানা চিন্তা, নানা মতের লোক থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের মধ্যে একটি ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস থাকতে হবে।’
শুক্রবার (৬ নভেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমাতুল্লাহসহ দলের সকল অসুস্থ নেতাকর্মীদের রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর বলেন, ‘২০০৯ সালে কাউন্সিলে বিএনপির একটা স্লোগান ও লক্ষ্য ছিলো- “নানা মানুষ নানা পথ, দেশ বাঁচাতে ঐক্যমত”। সেকারণে আমাদের দেশ বাঁচানোর কথা বলতে হবে।’
করোনায় আক্রান্ত দলের নেতাদের স্মরণ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আজকে অনেক সহকর্মী বিশেষ করে মির্জা আব্বাস ও বেগম আফরোজা আব্বাস, মোহাম্মদ শাহজাহান, ইকবাল হাসান টুকুসহ অনেকে করোনায় আক্রান্ত। আজকে আমরা অধিকারহারা মানুষের পর্যায়ে, তাই স্বাস্থ্যবিধি যেভাবে মানার কথা সেভাবে মানতে পারি না। জীবনের তাগিদে আমাদের রাস্তায় বের হতে হয়, কথা বলতে হয়, মানুষের কাছে যেতেও হয়।’
‘এ রোগমুক্তির জন্য শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে চলবে না, রাজনীতি ও গণতন্ত্রের বিধি মেনে গণতন্ত্রকে অনুসরণ করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে’- বলেন গয়েশ্বর।
তিনি বলেন, ‘আমি কোনও স্বপ্ন বা গল্প বলছি না। পারিপার্শিক অবস্থা, রাজনীতি সবকিছু বিশ্লেষণ করলে এখানে কখনও কোনও এস্টোলোজারের কাছে যাইতে হয় না। রাজনীতি যারা করে তারা দূরে দেখে, সামনে দেখুক বা না দেখুক। যে রাজনীত বা রাজনীতিবিদ দূরে দেখে না তার কোনও ভবিষ্যত নাই।’
গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে নির্ণয় করা আছে। আমরা রোগটা বুঝতে পারছি, কিন্তু ওষুধটা দিতে পারছি না। অধিকারবিহীন রাষ্ট্রের বড় বড় পদ আমাদের জন্য বোঝা-ই হয়। এটা আমাদের কোনও অহংকার বা সম্মানের হয় না।’
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করবো আমাদের ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া বির্জন দিয়ে মূল লক্ষ্য জনগণকে মুক্তি দেয়া, স্বাধীনতার চেতনার গণতান্ত্রিক যে রাষ্ট্র সে রাষ্ট্রটি যদি আমরা ফেরত আনতে পারি তাহলে জনগণ আমাদের পুরস্কৃত করবে। তারচেয়ে বড় প্রাপ্তি আমাদের আর কিছু থাকতে পারে না।’
আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, জাগপা (একাংশের) সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন ও শফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।