পিটিয়ে আ’লীগ নেতার পা ভেঙে দিল কর্মীরা

0

পিরোজপুরের ইন্দুরকানীর পত্তাশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাওলাদার মোয়াজ্জেম হোসেনের সমালোচনা করে বক্তব্য দেয়ায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কুমার মজুমদারকে (৫১) পিটিয়ে তার পা ভেঙে দিয়েছে কর্মীরা। বুধবার রাতে গুরুতর অবস্থায় তাকে খুলনার সিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সরেজমিন জানা যায়, বুধবার বিকালে উপজেলার চরনী পত্তাশীপাড়ের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে পত্তাশী ইউনিয়ন যুবলীগের কর্মিসভায় বক্তব্য রাখেন পত্তাশী ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কুমার মজুমদার।
বক্তব্যে তিনি বলেন, মোয়াজ্জেম ভুল করতে পারে। কিন্তু আমার নেত্রী শেখ হাসিনা তো ভুল করতে পারেন না। তিনি উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন। দল থেকে মোয়াজ্জেমকে মনোনয়ন দেয়া হলে আমরা আগামী নির্বাচনে তার হয়ে কাজ করব।

এ বক্তব্য দেয়ার পর উত্তেজিত হয়ে ওঠে মোয়াজ্জেম ও তার লোকজন। তাই রঞ্জন সভাস্থল ত্যাগ করেন। সভার মধ্য থেকে কয়েকজন নেতাকর্মী রঞ্জনকে মোয়াজ্জেম চেয়ারম্যানের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন। রঞ্জন সভাস্থলে যেতে চায়নি। রঞ্জন বলেন, আমি ওখানে গেলে আমাকে ওরা মারতে পারে।

পরে দীপ্ত, দিবাস ও তুষারসহ স্থানীয় নেতাকর্মী রঞ্জনকে অভয় দিয়ে সভাস্থলে নিয়ে যাওয়ার পথিমধ্যে মোয়াজ্জেমের উপস্থিতিতে তার লোকজন লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে শুরু করে রঞ্জনকে। এ সময় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান খান এগিয়ে এলে তাকেও লাঞ্ছিত করা হয়। স্থানীয়ও লোকজন আহত অবস্থায় রঞ্জনকে উদ্ধার করেন। পরে চেয়ারম্যান নিজের লোক দিয়ে রাতে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান।

আহতের স্বজনরা জানান, রঞ্জনকে কোনো সরকারি হাসপাতালে ভর্তিরও সুযোগ দেয়া হয়নি। এ ঘটনা নিয়ে এলাকার মানুষ এখন আতঙ্কিত।

রঞ্জন কুমার মজুমদার সাংবাদিকদের জানান, ’মোয়াজ্জেম ভুল করতে পারে’ বক্তব্যে এমন কথা বলায় আমাকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেছে তার লোকেরা। আমি ভেবেছিলাম বাঁচতেই পারব না। আমার হাঁটু ভেঙে দুই ভাগ হয়ে গেছে। আমি মনে হয় পঙ্গু হয়ে যাব। আমি আর রাজনীতি করব না।

পত্তাশী ওয়ার্ড যুবলীগের কর্মিসভায় সাধারণ সম্পাদক কাওসার মাঝির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পত্তাশী ইউপি চেয়ারম্যান হাওলাদার মোয়াজ্জেম হোসেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন- ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী আজগর হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন কুমার, আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান খান, আলতাফ হোসেন, গণপতি হালদার, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আহম্মেদ রানা, আবদুল মজিদ, ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মজিদ ফকির, আলিম ফকির, সেতু হাওলাদার, তরুণ খান প্রমুখ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পত্তাশী ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেনের কাছে একাধিকবার ফোন দিলেও ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।

এ বিষয়ে ইন্দুরকানী থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির জানান, আমি লোকমুখে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আহত রঞ্জন চিকিৎসার জন্য খুলনায় আছেন। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com