বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার অনুপস্থিতি আমাকে পীড়া দেয়: মির্জা আব্বাস
‘খোকার অনুপস্থিতি আমাকে পীড়া দেয়’ গতকাল বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার স্মরণে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সাদেক হোসেন খোকার সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্কে কথা স্মরণ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আগে-পরে, সামনে-পিছনে যে যাই বলুক, খোকাকে সত্যিকার অর্থে আমি ভালোবাসতাম। তার অনুপস্থিতি এখনও আমাকে পীড়া দেয়। বন্ধু হিসেবে আমাদের মধ্যে ছিলো গভীর সম্পর্ক। আমাদের মধ্যে যে ধরণের একটা সম্পর্ক ছিলো, এই সম্পর্কটা আমি এখন কারোর মধ্যে দেখি না।’
‘ওই সময়ে যদি কারও সাথে কোনও রকম মনোমালিন্য থাকে, তার মধ্যে কিন্তু একটা আন্তরিকতা থাকে, যদি মান-অভিমান থাকে সেখানেও কিন্তু একটা আন্তরিকতা থাকে, যদি বন্ধুত্ব থাকে সেখানে কিন্তু একটা আন্তরিকতা থাকে। আর এখন আমাদের দলের বা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে দেখা যায় না, আমাদের মধ্যে সম্পর্কটা আছে খুব বাহ্যিক, এর মধ্যে কোনও গভীরতা নাই। সেই আন্তরিকতা আজকে কেমন জানি বিলিন হয়ে যাচ্ছে। আমি দেখিছি আমার দীর্ঘ দিন রাজনীতিতে কাজ করতে গিয়ে.. ১/১১ পরেই এই পরিবর্তনটা দেখা যাচ্ছে, আগে ছিলো না এরকম পরিবর্তন।’
দলের ঐক্যবদ্ধ শক্তি জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজকে যদি এই স্বৈরাচারী সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হয়, তাহলে সবাইকে পাশাপাশি থাকতে হবে, রাজনৈতিকভাবে থাকতে হবে। একে অপরকে ঠ্যাং মারার যে রাজনীতি আজকে বিএনপির রাজনীতিতে চলছে কিংবা অন্য কোনও রাজনীতি চলছে, এই রাজনীতি করে ঠ্যাং মেরে নিজেদের পা ভাংগতে পারবো কিন্তু শত্রুর আমরা কোনও ক্ষতি করতে পারবো না। আমার এই কথা অনেক ব্যাখ্যা হতে পারে কিংবা বিভিন্ন কথা হতে পারে।’
এখন আমাদের দলের মধ্যে কিছু ভালো ভালো লোক আসছেন, তারা নতুন নতুন, সুন্দর সুন্দর কথা বলেন। কিন্তু সুন্দর সুন্দর কথা আর নতুন নতুন কথা দিয়ে আন্দোলন চাঙ্গা হবে না। আন্দোলন চাঙ্গা করতে হলে যোগ্যতা হলো আন্দোলনের লোক যারা আন্দোলন করেছে। যারা প্রমাণ করেছে ৯০ সালে যে আমরা আন্দোলন করতে জানি, যারা প্রমাণ করেছে ৯৬ সালে আমরা আন্দোলন করতে জানি।’
একাত্তরের বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক মন্ত্রী ও অবিভক্ত ঢাকার নির্বাচিত মেয়র সাদেক হোসেন প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সাদেক হোসেন খোকা ফাউন্ডেশন’ এর উদ্যোগে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়। ২০১৯ সালের ৪ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে তার মরদেহ দেশে এনে জুরাইনের কবরাস্থানে দাফন করা হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বক্তব্য দেন।