কল্যাণপুর বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে মিয়া গোলাম পরওয়ার

0

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ইসলামী সমাজব্যবস্থা বিনির্মাণের স্বপ্ন ও আর্ত-মানবতার সেবার মহৎ লক্ষ্য নিয়ে জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম, ত্যাগ ও মানব সেবার মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী সে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আদর্শবাদী সংগঠনটি বরাবর জনগণের যেকোনো বিপদে-আপদে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছে। আর দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলাম ওই গণমুখী প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।

তিনি রাজধানীর কল্যাণপুর নতুন বাজার বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে আর্থিক সহযোগিতা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বিতরণ অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি অগ্নিদুর্গতদের কল্যাণে কাজ করতে সমাজের সকল স্তরের বিত্তবান মানুষসহ দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

মিয়া পরওয়ার বলেন, আইনের শাসন, নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা, দেশের শান্তিশৃঙ্খলা ও যে কোনো রাষ্ট্রীয় দুর্যোগ মোকাবেলা করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার অধিকারের নিশ্চয়তার দায়িত্ব রাষ্ট্র কোনোভাবে উপেক্ষা করতে পারে না। দুর্যোগ মোকাবেলায় শুধু আমাদের দেশে নয় বরং প্রতিটি রাষ্ট্রে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় রয়েছে। যেকোনো দুর্ঘটনাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু আমাদের দেশে নেতিবাচক রাজনীতির কারণে রাষ্ট্র গণমুখী চরিত্র হারিয়ে ফেলায় রাষ্ট্রের কোনো অঙ্গ আইন ও সংবিধান অনুযায়ী কাজ করতে পারছে না। ফলে রাষ্ট্র সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকারের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

এমতাবস্থায় জামায়াতে ইসলামী সবসময় দুর্গত ও বিপন্ন মানুষের কল্যাণে তাদের পাশে থেকেছে। কিন্তু রাষ্ট্রের অভাব ব্যক্তি বা সাংগঠনিক পর্যায় কোনোভাবে পূরণ করতে পারে না। তবুও আমাদের সীমিত সামর্থ্য নিয়ে সাধ্যমত মানুষের দুর্দশা লাঘবে কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠিত থাকলে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় জনগণের সকল সমাস্যার সমাধান করা সম্ভব হতো। মানুষ মানুষের কাছে হাত পাতার প্রয়োজন হতো না। মূলত কল্যাণ রাষ্ট্র ছাড়া মানুষের কোনো সমস্যার সমাধান হবে না। তিনি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে অগ্নিদুর্ঘটনার সংখ্যা আগের তুলনায় কমে আসলেও আমাদের দেশে তা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। যেকোনো দুর্ঘটনার পর সাধারণ মানুষকে ভবিষ্যতের জন্য অনেক আশার বাণী শোনানো হলেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায় না। আমাদের দেশের অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা আজও সেকেলে রয়ে গেছে। সরকার দেশের উন্নয়ন হয়েছে বলে দাবি করলেও আমাদের দেশে অগ্নিনির্বাপনে এখনো সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নেই। নেই দুর্গতদের দ্রুত চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা। যা এক ধরনের রাষ্ট্রীয় দায়িত্বহীনতা। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই আমাদেরকে এই অশুভ বৃত্ত থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। তিনি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণসহ সম্ভব স্বল্প সময়ের মধ্যে পুনর্বাসন, মৃত ব্যক্তির রাষ্ট্রীয়ভাবে পুনর্বাসন,আহতদের চিকিৎসাসহ আর্থিক সাহায্য ও ঘটনার পূনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।

ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মুসা, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, মহানগরী সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম ও মিরপুর পশ্চিম থানা আমীর আব্দুল্লাহ মুয়াজ ও ফয়েজ আহমদ প্রমুখ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com