নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য অনির্বাচিত আওয়ামী সরকারি দলকে সর্বময় ক্ষমতায় দিয়ে দেয়া: ফখরুল
নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান আইন-২০২০ সরকারি দলকে সর্বময় ক্ষমতা দিতে করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। গতকাল সোমবার দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা জানি যে, এই নির্বাচন কমিশন কেনো কথাই শুনে না। তাদের যে দায়িত্ব সরকারের এজেন্ডাকে বাস্তবায়িত করা। সেই কাজই করে যাচ্ছে তাদের (নির্বাচন কমিশন) গঠনের পর থেকে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নির্বাচনী আইনের তারা যে প্রস্তাব দিয়েছে- এটা অত্যন্ত একটা অসৎ উদ্দেশ্যেই তারা এই আইনের প্রস্তাব করেছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য একটাই- সরকারি দলকে সর্বময় ক্ষমতায় দিয়ে দেয়া এবং নির্বাচন কমিশনকে একটা ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করা। এই নির্বাচন কমিশন তো কোনো রকমের পরিবর্তন হয়নি। উপরন্তু তারা আইন করে বিভিন্নভাবে এই সরকারের যাদের কোনো ম্যান্ডেট নেই তাদের হাতকে শক্তিশালী করার জন্য তারা করে যাচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ উপনির্বাচনের প্রচারণা চলছে। আমি দুঃখের সাথে লক্ষ করেছি, এটা মিডিয়া কোনো কাভারেজ হচ্ছে না। যার ফলে হচ্ছে কি- এখানে চরম অনিয়ম ঘটছে। এখানে নির্বাচন একটা প্রহসনে পরিণত হয়েছে, নির্বাচন কমিশন একটা বংশবদ প্রতিষ্ঠানের পরিণত হয়েছে এটা প্রমাণ হচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ করব, আপনারা দয়া করে একটু কাভার করার ব্যবস্থা নিন। এমনিতেই নির্বাচন চলে গেছে, নির্বাচন প্রক্রিয়া ধ্বংস হয়ে গেছে, এর ওপর থেকে জনগণের আস্থা উঠে গেছে। এটা বিরোধী দলগুলোকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত করে ফেলতে পারে।
ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন এগিয়ে আনা ‘সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন’ বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র সরকারের যে ইচ্ছা সেটাকে তারা পালন করেন। এই যে কিছুটা নিয়ম ভঙ করে যেটা জানুয়ারিতে হওয়ার কথা, সেটা তারা ডিসেম্বরের করতে যাচ্ছে এটার একটা উদ্দেশ্য আছে। সেটা হচ্ছে এই- করোনার ভয়াবহতা নতুন করে দ্বিতীয় ধাপে এসেছে। এসময়ে নির্বাচন করার অর্থ হচ্ছে জনগণের অংশগ্রহণ হবে না, জনগন যাতে না অংশগ্রহণ করে সেটা তারা চাচ্ছে আরকি। পুরো নির্বাচনের সিস্টেমটা তারা নষ্ট করে ফেলেছে। আজকে নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে আমাদের ইচ্ছা করে না। আজকে দুঃখজনকভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন তারা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার শেষ অবস্থা তারা তৈরি করেছে। তারই ফলশ্রুতিতে নির্বাচন কমিশনের এসব কথা।
ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের বিরোধিতা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ইভিএম গ্রহণযোগ্য নয়। এদেশে কোনোদিনই এই মেশিন গ্রহণযোগ্য নয়। এটাতে দারুণভাবে ম্যানুপেলেশনের সুযোগ আছে। এর একটাই উদ্দেশ্য একটা দলকে ক্ষমতায় রাখতে হবে, তার জন্য যা কিছু করা দরকার সেটাই তারা করছে।
স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নির্বাচন আইনের বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, নির্বাচনে কমিশনের প্রস্তাবিত আইনে অনেক মৌলিক বিধানই বদলিয়ে ফেলেছে। তারা যে নতুন আইনের প্রস্তাব করেছে সেই আইনের একটা বড় অংশ… ধারা ৬৬ থেকে আরম্ভ করে প্রায় ৮৪ পর্যন্ত – এর কোনোটাই স্থানীয় সরকারের প্রচলিত যেসব আইন রয়ে গেছে তার কোনোটার মধ্যে নেই।