জনগণ ভোট দিতে পারলে ধানের শীষের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন মেয়র হতেন: ভিপি নূর
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের গত নির্বাচনে যদি জনগণ ভোট দিতে পারতো তাহলে বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের বিজয় কেউ আটকাতে পারতো না বলে মন্তব্য করেছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর। তিনি বলেন, ঢাকার গত দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমরা মাঠে ময়দানে জনগণের যে প্রতিক্রিয়া দেখেছি তাতে যদি সুষ্ঠু ভোট হতো এবং জনগণ ভোট দিতে পারতো তবে তিনিই মেয়র নির্বাচিত হতেন।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, আপনারা জানেন এখন কি প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হচ্ছে। আজকে যারা জনগণের কণ্ঠস্বর তাদেরকে হামলা-মামলা করে বারবার জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে এই সরকার। বাংলাদেশকে একটি পঙ্গু রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে তারা একটি আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অংশ হিসেবে ক্ষমতায় এসেছে।
নূর বলেন, যেখানে ২০০৪ সালে বাংলাদেশের গনমাধ্যমগুলোকে দক্ষিণ এশিয়ার ইমার্জিং টাইগার হিসেবে পত্রিকার হেডলাইন করে নিউজ করা হয়েছিলো, যেখানে সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদের পতনের পরে একটি গণতান্ত্রিক ধারার সূচনা ঘটেছিল, ১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মোটামুটিভাবে যে সাংবিধানিক ভোটগুলো হয়েছিলো তাতে করে বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি ভালো দিকে যাচ্ছিল। বাংলাদেশ শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি তাক লাগানো রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। তখনই যারা বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখতে চায় তারা বাংলাদেশের এই গণতন্ত্রের ধারাকে ব্যাহত করার জন্য একটি অশুভ পরিকল্পনা নিয়ে আগালো। এই অশুভ পরিকল্পনার ফল ছিল এক এগারোর মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকার। সেই কুখ্যাত ফখরুদ্দিন-মইনউদ্দিন সরকারের সহযোগী হিসেবে ক্ষমতায় এসেছে কুচক্রীদের দ্বারা পরিচালিত এই আওয়ামী লীগ সরকার। তারা ক্ষমতায় আসার পরে বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। হেফাজতের আলেম-ওলামাদের হত্যা করা ছিল ওই পরিকল্পনারই একটি অংশ।
ভিপি নূর বলেন, ক্ষমতায় আমৃত্যু টিকে থাকার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা উঠিয়ে দেয়া এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের যে একটি রাজনৈতিক তাণ্ডব এই দুর্বৃত্তপনা একেবারে সেই টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, রূপসা থেকে পাথুরিয়ার গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, সাদ্দাম বাহিনী, সম্রাট, কাউন্সিলর রাজিব এরা আকাশ থেকে আসে নাই এবং মাটি ভেদ করে উপরে উঠে আসে নাই। এরা আওয়ামী লীগেরই তৈরি। সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য এদেরকে তৈরি করেছে।
এ সময় তিনি অভোযোগ করেন, ইসলামী দলগুলোকে সরকার জঙ্গি ও জামায়াত-শিবির ট্যাগ লাগিয়ে রাজনৈতিক থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু সরকার সফল হবে না যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি। আমরা যতদিন বিভাজিত থাকবো ততদিন এই স্বৈরশাসনের স্থায়িত্ব বাড়বে এবং এদের নাটক চলতেই থাকবে। তাই আমি সকল বিরোধী দলগুলোকে বলব আসুন আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্য যদি থেকেও থাকে একটা দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হোন যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন প্রমুখ।