প্রতারণার অভিনব কৌশল
ভদ্রলোক নবম পার্লামেন্টে আমার সহকর্মী ছিলেন। বর্তমানে তিনি কোনো একটি সংসদীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। বয়সে আমার চেয়ে আট-দশ বছরের বড় হলেও আমাদের মধ্যে ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব সুদীর্ঘকালের। তিনি জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতা এবং বেশ সফল আইনজীবী। বর্তমান জমানায় একজন সংসদ সদস্য পদবিধারীকে যদি কেউ সৎ বলতে চান তবে যেকোনো বিচারে তিনি সেই উপাধি পেতে পারেন। ভদ্রলোক বছরখানেক আগে আমাকে ফোন করে জানালেন, জরুরি একটি বিষয়ে আলাপের জন্য তিনি আমার অফিসে আসতে চান। আমি সময় দিলে, তিনি নির্ধারিত সময়ে ঝড়ের গতিতে আমার অফিসে এসে হাজির হলেন। তার মুখপানে চেয়ে দেখলাম, তিনি বেশ উত্তেজিত এবং এক ধরনের আশা-নিরাশার দোলে দোল খাচ্ছেন। আমি রসিকতা করে বললাম, কি খবর, মন্ত্রী হচ্ছেন নাকি! তিনি গম্ভীর হয়ে বললেন, ‘মন্ত্রীর চেয়েও বড় কিছু! উত্তেজনায় গত এক সপ্তাহ ঘুমাতে পারছি না।’
আমার বন্ধুটির সঙ্গে আলোচনা করে তার উত্তেজনার হেতু এবং আমার কাছে আসার উদ্দেশ্য জানার পর রীতিমতো তাজ্জব বনে গেলাম। আমি কোনো উত্তর না দিয়ে অনেক দিন পর প্রাণ খুলে হাসলাম। আমার হাসির সঙ্গে তিনিও হাসতে থাকলেন মনের আনন্দে। তারপর আমি যখন তাকে বিস্তারিত বললাম, তখন ক্ষণেকের তরে তার মন খারাপ হয়ে গেল। তিনি অকপটে স্বীকার করলেন, ‘রনি ভাই, আপনার কথাই ঠিক! কিন্তু মন তো মানছে না। বারবার লোভের দিকে চলে যাচ্ছে।’ এই কথা বলে তিনি আবার হাসতে শুরু করলেন। আমার বিশ্বাস! প্রিয় পাঠক, যদি আমার বন্ধুটির লোভের হেতু এবং কার্যকারণ সম্পর্কে জানেন তবে না হেসে পারবেন না। বর্তমান সমাজ সংসারে সমাজের সর্বোচ্চ স্তর থেকে একেবারে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রতারকরা যে কিভাবে প্রতারণার মায়াজাল ছড়িয়ে রেখেছে এবং সেই জালে আটকা পড়ার উদগ্র বাসনায় মানুষজন যে কিভাবে ছুটছে তার কয়েকটি উদাহরণ দিলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
আজকের শিরোনাম বিষয়ে লিখতে গিয়ে হঠাৎ করেই আমার বন্ধুটির প্রসঙ্গ টানলাম এ কারণে যে, গত কয়েক দিন ধরে পুলিশ ও র্যাবের হাতে বেশ কয়েকটি দেশী-বিদেশী সঙ্ঘবদ্ধ প্রতারক চক্র গ্রেফতার হয়েছে। এদের কবলে পড়ে সাবেক সচিব থেকে শুরু করে গ্রামের কৃষক পর্যায়ের দরিদ্র মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে যখন থানায় মামলা করেছেন, কেবল তখনই আমরা প্রতারণার ছিটেফোঁটা দুই-চারটি কাহিনী জানতে পেরেছি। কিন্তু যেসব ঘটনা অভিযোগ আকারে থানায় লিখিত হয় না কিংবা লোকলজ্জার ভয়ে যেসব বিষয় গোপন থেকে যায় সেসব বিষয়ের মধ্যে অনেক নৃশংস, নির্মম এবং চাঞ্চল্যকর ঘটনা রয়েছে। আমরা যদি এসব বিষয়ে সচেতন হই কেবল সে ক্ষেত্রেই প্রতারকদের মায়াজাল ছিন্ন করা সম্ভব এবং সেই উদ্দেশ্য নিয়েই মূলত আজকের নিবন্ধের কাহিনীগুলো আপনাদের জানাচ্ছি।
শুরুতেই বন্ধুর কাহিনী বলি। বন্ধুর শ্যালক উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া মহাসড়কের পাশে প্রায় শতবিঘা আকৃতির একটি শিল্প প্লট বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছিল। ঢাকা থেকে দামী গাড়ি নিয়ে কেতাদুরস্ত কয়েকজন শিল্পপতি গেল জমি দেখতে। তারা দরাদরির পর প্রতি বিঘা জমির মূল্য নির্ধারণ করল পঞ্চাশ লাখ টাকা। উভয়পক্ষ রাজি হয়ে সাদা কাগজে একটি চুক্তিনামা করল। বন্ধুর শ্যালক বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দাম এবং একসঙ্গে সব জমি কেনার মতো সচ্ছল ক্রেতা পেয়ে মনের আনন্দে নাচানাচি শুরু করল এবং কথিত শিল্পপতিদের জামাই আদরে আপ্যায়ন করল। ঘটনার কয়েক দিন পর ক্রেতাবেশী লোকেরা আরো শান শওকতসহকারে কয়েকজন বিদেশী নিয়ে জমি দেখতে গেল। বিদেশীরাও বলল যে, জমি তাদের পছন্দ হয়েছে। ফলে দ্বিতীয় দফায় খানাপিনা আপ্যায়নের সাথে সাথে ক্রেতাদের সাথে বন্ধুর শ্যালকের মহাখাতির হয়ে গেল।
এ ঘটনার কয়েক দিন পর বন্ধু শ্যালককে ঢাকায় এনে একটি পাঁচতারা হোটেলে আচ্ছা করে রাতের খাবার খাওয়ানো হলো। তারপর দেয়া হলো আরেকটি অভিনব প্রস্তাব। বলা হলো- জমির দাম পঞ্চাশ লাখ টাকা প্রতি বিঘা ঠিক থাকবে। কিন্তু ক্রেতারা তাদের বিদেশী অংশীদার এবং ব্যাংকের নিকট প্রতি বিঘা জমির মূল্য এক কোটি টাকা দেখাবে। বন্ধুর শ্যালককে বলা হলো তার কোনো নিকটাত্মীয় মন্ত্রী বা এমপি থাকলে ডিলটা সহজ হবে। বিদেশী অংশীদাররা সন্দেহ করবে না। শ্যালক বাবু যখন তার দুলাভাইয়ের পরিচয় দিলো তখন ক্রেতারা বলল, তার দুলাভাইয়ের অ্যাকাউন্টে সব টাকা আসবে এবং টাকা পাওয়ার পর জমির দলিল করা হবে। অধিকন্তু জমির প্রকৃত মূল্যের বাইরে যে অর্থ আসবে সেখান থেকেও আরো পঁচিশ ভাগ অর্থ শ্যালক-দুলাভাইকে দেয়া হবে কমিশন হিসেবে।
আমার বন্ধুর শ্যালক সেই রাতেই দুলাভাইয়ের সাথে দেখা করল। শ্যালক-দুলাভাই উভয়েই জেলা পর্যায়ের ধনাঢ্য ব্যক্তি। তারা পৈতৃক জায়গাজমি, স্থানীয় রাজনীতি এবং জেলা পর্যায়ের ওকালতি সম্পর্কে সম্যক অবহিত। ব্যবসা বাণিজ্য-কোটি কোটি টাকার দেশী বিদেশী লেনদেন-প্রতারণা ইত্যাদি সম্পর্কে তেমন কিছু জানতেন না। ফলে উভয়েই সরল বিশ্বাসে মনের আনন্দে কচকচে নতুন টাকার গন্ধে সারাটা রাত জেগে জেগে স্বপ্ন দেখল। পরের দিন কথিত ক্রেতারা আমার বন্ধুর সাথে দেখা করল এবং আলাপ-আলোচনা-কথাবার্তা এতটা আন্তরিকতায় পৌঁছালো যে, উভয়পক্ষ তাদের পরিবারের উপযুক্ত ছেলে-মেয়েদের বিয়েশাদি দিয়ে সম্পর্ককে আজীবনের তরে পাকাপোক্ত করার জন্য খোঁজখবর শুরু করল। ফলে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে এক পয়সার লেনদেন ছাড়াই পক্ষদ্বয় এমন হরিহর আত্মায় পরিণত হলো যা দেখে মনে হবে, তাদের মধ্যে যুগ যুগান্তর-জন্ম-জন্মান্তরের বন্ধন রয়েছে।
কাহিনীর তৃতীয় পর্যায়ে ক্রেতারা আমার বন্ধুর সাথে একান্তে কথা বলতে চাইলেন এবং শর্ত দিলেন যে, সেই একান্ত বৈঠকের কথা শ্যালক বাবুকে জানানো যাবে না। তিনি কোনোরকম পূর্বাপর চিন্তা কিংবা সন্দেহ ব্যতিরেকেই একান্ত বৈঠকের জন্য রাজি হয়ে গেলেন। ক্রেতারা নির্ধারিত দিনে বন্ধুর অফিসে দরজা বন্ধ করে জরুরি গোপন বৈঠকে জানালেন যে, জমি ক্রয়-বিক্রয় তাদের ব্যবসার একটি অংশ মাত্র।
তাদের ব্যবসার দ্বিতীয় অংশ আরো লাভজনক। তাদের নিকট কয়েকটি কষ্টিপাথরের মূর্তি এবং সীমান্ত পিলার রয়েছে সেগুলো রফতানি করার বৈধ অনুমতিপত্র তাদের রয়েছে এবং সেগুলোর বিদেশী ক্রেতাও প্রস্তুত যারা মোট ৯০০ কোটি টাকা তিন কিস্তিতে পরিশোধ করবে। কিন্তু এ জন্য ক্রেতা একজন নির্ভরযোগ্য লোক খুঁজছেন। কারণ ক্রেতা ১০০ কোটি টাকা পরিশোধ করবেন এলসির মাধ্যমে। বাকি ৮০০ কোটি টাকা টিটির মাধ্যমে আসবে, যা মূলত আন্ডার ইনভয়েস ভ্যালু হিসেবে পরিশোধ করা হবে আমদানিকারকের দেশের ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার জন্য। আমার বন্ধু যদি রাজি থাকেন তবে তার অ্যাকাউন্টে ৮০০ কোটি টাকা আসবে এবং এ জন্য তাকে শতকরা পাঁচশ ভাগ অর্থ অর্থাৎ ২০০ কোটি টাকা কমিশন হিসেবে দেয়া হবে।
আমার বন্ধু এই সহজ সরল প্রস্তাবের মধ্যে কোনো ক্রেতা খুঁজে পেলেন না। তিনি মহানন্দে রাজি হয়ে গেলেন এবং সারারাত খোশ মেজাজে বড় বড় স্বপ্ন দেখে নির্ঘুম কাটালেন। হঠাৎ করেই তার মনে হলো ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে তার উচিত বিষয়টি নিয়ে আমার সাথে আলোচনা করা। কারণ তিনি তো ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রফতানি, আন্ডার ইনভয়েস, ওভার ইনভয়েস কিছুই বোঝেন না। তাছাড়া তার অ্যাকাউন্টে কোনো দিন এক কোটি টাকা একত্রে জমা হয়নি। অধিকন্তু ৮০০ কোটি টাকা বিদেশ থেকে এলে তিনি সরকার থেকে কোনো প্রণোদনা পাবেন কিনা তা জানাও জরুরি। তার মুখ থেকে পুরো ঘটনা সোনার পর প্রতারক চক্রটি তাকে কিভাবে বিপদে ফেলতে পারে সে ব্যাপারে বিস্তারিত বললাম এবং এ কথাও জানালাম যে, এরা অত্যন্ত শক্তিশালী আন্তর্জাতিক চক্র। তারা করে না বা পারে না এহেন কুকর্ম নেই। সুতরাং তার উচিত বিষয়টি পুলিশকে জানানো। তিনি আমার কথা শুনে প্রথমে মুখ কালো করে ফেললেন। তারপর হাসতে হাসতে গড়াগড়ি যাওয়ার উপক্রম হলেন এবং বিদায় বেলায় বলে গেলেন যে, পুলিশি ঝামেলায় তিনি যাবেন না। কারণ অপরাধী চক্রকে শত্রু বানিয়ে টিকে থাকার মতো মানুষ তিনি নন।
চলমান সময়ে উল্লিখিত প্রতারণার ফাঁদের মতো আরো অনেক আকর্ষণীয় চিত্রনাট্য রচনা করে এবং সেই চিত্রনাট্যে অভিনয় করার জন্য দক্ষ অভিনেতা অভিনেত্রী সেজে প্রতারকরা এমনভাবে একের পর এক অপকর্ম করে যাচ্ছে যা অনেককে পথে বসিয়ে দিচ্ছে, এমনকি অনেককে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। টাকা-পয়সা, জমিজমা, বাড়ি-গাড়ি ছাড়াও বিয়ে পাগল বয়স্ক নারী-পুরুষের যৌন লিপসাকে টার্গেট করে প্রতারকরা হাজারো ফন্দি ফিকিয়ে দেশ কাল সমাজ ইত্যাদি সব কিছু কলঙ্কিত করে তুলছে। যারা প্রতারণা চক্রের সাথে জড়িত তারাও যেমন তাদের সারাটি জীবন বরবাদ করে ফেলে তদ্রƒপ তাদের প্রতারণার কবলে পড়ে মানুষজন যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তারাও জীবনের হিসাব নিকাশে পরবর্তী জীবনে শুধু পরাজিত হতে হতে একসময় লাঞ্ছিত, অপমানিত ও নিগৃহীত হয়ে ভবলীলা সাঙ্গ করেন। যারা প্রতারক তারা যেমন অপরাধী, তেমনি প্রতারণার শিকারে পরিণত হওয়া লোকগুলোও কম অপরাধী নয়। মানুষের দুর্নিবার লোভলালসা এবং অলসতার সাথে যখন অপরাধপ্রবণ মন, কুচিন্তা এবং কুবুদ্ধি একত্রিত হয় তখনই নারী-পুরুষেরা প্রতারণার মতো জঘন্য কাজে জড়িয়ে যায়। অন্য দিকে, অলস প্রকৃতির লোভী মানুষের মধ্যে দুটি বিপরীতমুখী প্রবণতা কাজ করে, তখন তাদের মধ্যে প্রতারণার জালে আটকা পড়ার উদগ্র বাসনা পয়দা হয়ে যায়। অলস ও লোভী মানুষ যদি সম্পদশালী হয় অথবা বড় কোনো পদপদবিতে আসীন থাকে তখন অধিক ধন সম্পদ বড় পদপদবি বা সুনাম সুখ্যাতির আশায় সর্বদা শর্টকাট রাস্তা খুঁজতে গিয়ে প্রতারণার শিকার পরিণত হন। অন্য দিকে, এই শ্রেণীর মানুষের স্বভাবজাত কৃপণতা; অর্থাৎ মানুষ অবৈধভাবে ধনশালী হলে বা উত্তরাধিকার সূত্রে ধন সম্পদের অধিকারী হলে দুটো বদ গুণ তাদের অলঙ্কারে পরিণত হয়; যার একটি হলো অলসতা এবং অপরটি কৃপণতা।
সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, মানুষের মধ্যে অলসতা ও কৃপণতা যখন প্রবল হয় তখন তাদের বুদ্ধি নাশ ঘটে, বিবেক ভোঁতা হয়ে যায় এবং আত্মমর্যাদাবোধও লোপ পায়।
অন্য দিকে, একজন মানুষ জন্মগতভাবে অলস-কৃপণ ও লোভী তখনই হয় যখন প্রকৃতিগতভাবে তার বুদ্ধিশুদ্ধি খুবই নিম্নমানের হয়ে থাকে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, বুদ্ধিমান মানুষ অলসতা, অবৈধ বা অযাচিত ধন সম্পদ-পদপদবি সুনাম সুখ্যাতির কবলে পড়ে নির্বোধ বা বেকুব হয়ে যায় এবং লোভাতুর হয়ে প্রতারণার জালে গিয়ে মাথা মোটা কাতলা মাছের মতো ধরা পড়ে। আবার, জন্মগতভাবে বোকাসোকা মানুষ যখন কোনো কারণে ধন সম্পদ পদপদবি বা সুনাম সুখ্যাতির অধিকারী হয়ে পড়ে তখন সে আরো অধিক পাওয়ার লোভে সারাক্ষণ অস্থির অবস্থায় প্রতারণার জাল খুঁজতে থাকে আটকা পড়ার জন্য।
এ অবস্থায় প্রতারক চক্র খুব সহজেই তাদের শিকার চিনতে পারে এবং কোন শিকারকে কী ধরনের প্রতারণার জালে আটকাতে হবে তা মোটামুটি মুখস্থ করে ফেলে। একটি সমাজে যখন প্রতারণার সংখ্যা বাড়তে থাকে তখন ধরে নেয়া হয় যে, পুরো সমাজ ব্যবস্থাটাই চলছে প্রতারণার মন্ত্র দ্বারা। ন্যায়বিচার সুশাসন এবং যোগ্যতায় লোকজনকে নির্বাসনে পাঠিয়ে যখন সর্বত্র পুতুলনাচের ইতিকথা জাদুর বাক্সের ভেলকিবাজি এবং গভীর রাতের ফটকাবাজির মধ্যে নিজেদের সফলতা খুঁজে বেড়ানো হয়, তখন সেখানে প্রতারকদের প্রতারণার মায়াবী জাল এবং সেই জালে আটকা পড়ার উদগ্র বাসনায় অস্থির লোকদের ‘স্বর্গরাজ্য’ সৃষ্টি হয়ে যায়।
লেখক : গোলাম মাওলা রনি সাবেক সংসদ সদস্য