আ.লীগ সরকার জানে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে তাদের ভরাডুবি নিশ্চিত: প্রিন্স
বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলেই সরকার ও আওয়ামী লীগের মধ্যে অস্থিরতা শুরু হয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির দপ্তরের চলতি দায়িত্বে থাকা ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
তিনি বলেন, তারা বিএনপিকে যেমন ভয় পায় তেমনি জনগণের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনকেও ভয় পায়।
সোমবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সৈয়দ প্রিন্স বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগে জানে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে তাদের ভরাডুবি নিশ্চিত। সেজন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হওয়া মাত্রই আওয়ামী লীগ নির্বাচনী বিধি-বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দলীয় ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়ে বিএনপি প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা, মামলা, হুমকি, ভয়-ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশকে ধ্বংস করে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে নির্বাচনকে ব্যর্থ করে দিতে চায়।
তিনি অভিযোগ করেন, গত ২২ অক্টোবর ঢাকা-১৮ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনের পক্ষে ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও দক্ষিণখান থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর আলীর নেতৃত্বে দক্ষিণখান গার্লস স্কুল রোডে নুরবিলাস অ্যাপার্টমেন্টের নীচতলায় কর্মীসভা চলাকালে সেখানে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মারাত্মকভাবে আহত করে এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও লুটপাট করেন। গত ২৪ অক্টোবর দিবাগত রাতে কামারপাড়ার রানাভোলায় বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ-সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা জামানের বাড়িতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে বাড়ির ক্ষতি করেন। ২৫ অক্টোবর ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের শাহ কবির মাজার থেকে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল, যা পূর্বেই স্থানীয় নির্বাচনী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হঠাৎ করে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগের স্থানে পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে পুলিশী পাহারায় জায়গা দখল করে রাখেন।
প্রিন্স বলেন, সিরাজগঞ্জ-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মো. সেলিম রেজা গত ২৩ অক্টোবর নির্বাচনী এলাকায় তার নিজ বাড়িতে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডার বাহিনী তাকে বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং তাকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার কাজে বাড়ি থেকে বের হতে দেয়নি।
নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আসন্ন ঢাকা-১৮ এবং সিরাজগঞ্জ-১ জাতীয় সংসদ উপ-নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও কলুষমুক্ত করতে যথাযথ উদ্যোগ নেন। নইলে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার পরিণতি কতটা বিপজ্জনক হতে পারে তা জনগণ বুঝিয়ে দেবেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, রোববার রাজধানীর কলাবাগানে মিডনাইট নির্বাচনের এক সংসদ সদস্যের ছেলে ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা সশস্ত্র বাহিনীর এক কর্মকর্তা ও তার সহধর্মীনির ওপর হামলা, তাদেরকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত করেছে। আমরা এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করছি। এই সরকারের লোকদের ক্ষমতার দাপটে দেশের কোনো শ্রেণী-পেশার মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও সম্মান নেই। কক্সবাজারের ওসি প্রদীপ কর্তৃক সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার হত্যা, সিলেটে পুলিশী হেফাজতে রায়হান হত্যাসহ এ ধরণের ঘটনা এখন নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে।