আশুলিয়ায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ২১
রাজধানীর আশুলিয়ায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চালিয়ে ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪। শনিবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত আশুলিয়ার কাইচাবাড়ি এলাকায় জুয়ার আসরে অভিযান চালিয়ে মদকসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় জুয়ার আসর থেকে প্লেয়িং কার্ডসহ একটি ক্যাসিনো বোর্ড, ১০০ পিস ইয়াবা, ১২ ক্যান বিদেশি বিয়ার, ২২টি মোবাইল এবং নগদ ৩৮ হাজার টাকা জব্দ করে র্যাব।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনিছুর রহমানের উপস্থিতিতে এবং সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাজেদুল ইসলাম সজলের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
র্যাব বলছে, চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মধ্যেই আশুলিয়ায় একটি মিনি ক্যাসিনোর সন্ধান পেয়েছে। এই ক্যাসিনোতে প্রতিরাতে ১০-১৫ লাখ টাকার জুয়া খেলা হতো। আর এই জুয়ার আসরে খেলতেন অধিকাংশ নিম্নআয়ের মানুষ। যাদের অনেকেই জুয়ায় আসক্ত হয়ে হারিয়েছেন সর্বস্ব।
রবিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে মিরপুর পাইকপাড়ায় র্যাব-৪ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক।
গ্রেফতাকৃতরা হলেন- মো. বিল্লাল (৩৮), মো. জুয়েল (২৮), মইদুল ইসলাম (৩২), সবুজ মিয়া (২৮), মো. শরিফ (২৮), মো. লিটন (৪৫), রবিউল মোল্ল্যা (২৪), আবু তালেব (২০), দিয়াজুল ইসলাম (২০), মো. শিপন (২০), আব্দুল আলিম (৩৫), আজাদুল ইসলাম (৫০), সোহেল মোল্ল্যা (৩২), আসাদুল ইসলাম (৩০), মো. এখলাছ (৩৫), মঈন মিয়া (২৮), মাসুদ রানা (২০), হাবিবুর রহমান (৪৭), রুবেল মিয়া (৩৩), ফজলে রাব্বি (২২) ও রনি ভূঁইয়া (২৫)।
সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক বলেন, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, গত দেড় বছর ধরে চলছে জুয়ার এই আসর। প্রতিরাতে ১০-১৫ লাখ টাকার জুয়া খেলা হতো। এ ক্যাসিনোতে জনপ্রতি সর্বনিম্ন ১০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত খেলতেন। রাত যত গভীর হতো ক্যাসিনো তত জমে উঠত।
তিনি বলেন, এই ক্যাসিনো ব্যবসার মালিকানায় রয়েছেন প্লাবন হোসাইন ও ওমর ফারুক নামে দুজন। যদিও তাদেরকে আমরা গ্রেফতার করতে পারিনি। তাদের গ্রেফতার করতে পারলে এই মিনি ক্যাসিনো সম্পর্কে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা জানতে পারব।
দেড় বছর ধরে চলা এই মিনি ক্যাসিনো কাদের ছত্রছায়ায় চলত- এমন প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক বলেন, এটা বলা খুব মুশকিল, কারণ বাইরে প্রদর্শন করা হয়, ক্যারাম বোর্ড আর আড়ালে চলে এরকম জুয়ার আসর কিংবা মিনি ক্যাসিনো। আমরা যখনই গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, তখনই অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে ২১ জনকে গ্রেফতার করেছি।
এই মিনি ক্যাসিনোর বোর্ড কীভাবে আমদানি করা হয়েছে- জানতে চাইলে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, এই বোর্ড আমদানি করা হয়েছে মালয়েশিয়া থেকে। তবে দেখে মনে হচ্ছে- সম্প্রতি আমদানি করা হয়নি। আপনারা জানেন, অনেক বড় বড় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছে র্যাব। সমাজের খুব বড় বড় তথাকথিত গ্যাংস্টারকে আটক করা হয়েছে। তারা কে কীভাবে এই ক্যাসিনো বোর্ড আমদানি করেছে সেগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। অবৈধভাবে যারাই এই বোর্ড আমদানি করুক না কেন, খতিয়ে দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।