অটোপাস বা বিনা পরীক্ষায় পাসে কোনো মর্যাদা নেই: নজরুল ইসলাম খান
অটোপাস বা বিনা পরীক্ষায় পাসে কোনো মর্যাদা নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলেও যারা বিনা পরীক্ষায় পাস করেছিলেন তাদের কোনো সামাজিক মর্যাদা ছিল না।
রোববার (২৫ অক্টোবর) এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসির রেজাল্ট : শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর প্রভাব’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে বাংলাদেশ শিক্ষক সমন্বয় কমিটি (বিএসএসসি)। সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সেলিম ভুইয়ার পরিচালনায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এ গোলটেবিল আলোচনা হয়। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ঢাবির আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, ঢাবি সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক ড. আবদুল করিম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আহসান, অধ্যাপক ড. মো. নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. সোহেল রানা, অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, অধ্যাপক মাসুম শাহরিয়ার, অধ্যাপক এ এস এম মোস্তাফিজুর রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. রইছ উদ্দিন।
এ সময় বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, ছাত্রদলের সাবেক নেতা মো. আবুল হাসান, ঢাবি ছাত্রদলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব, তরিকুল ইসলাম, নাছির উদ্দিন শাওন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, করোনাকালে করুণা পাস। কেউ বলে অটোপাস। এটা জাতির জন্য, শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের জন্য কতটা অনুকূল বা প্রতিকূল? আজকে সেই প্রশ্ন উঠেছে। পরীক্ষা নেয়া হবে না কেন? আসলে সরকার যে যুক্তি দেখিয়েছে সেটা সরকারের মুখে শোভা পায় না। তারা অফিস, কলকারখানা, গার্মেন্টস, গণপরিবহন চালু করেছে।
তিনি বলেন, সবকিছু চালু করেছেন। কোনো কিছু বাদ নেই। মাস্ক পরতে আইন করা হয়েছে। কিন্তু কেবল পরীক্ষা হবে না? অথচ আমাদের অনেক স্কুল-কলেজ রয়েছে। কমিউনিটি সেন্টার আছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুরো না হলেও আংশিক পরীক্ষা নেয়া যেত। কিন্তু সরকার বললো সবাই পাস। এই ঘোষণা আগে দেয়া হলে তো যেসব অভিভাবক টাকা দিয়েছেন সেগুলো লাগতো না। এসব ফেরত দেয়া হবে কি না তা অনিশ্চিত।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, অটোপাস বা বিনা পরীক্ষায় পাসে কোনো মর্যাদা নেই। পাকিস্তান আমলে যারা পাস করেছিল তাদেরও কোনো মর্যাদা ছিলো না। সে সময় অনেকেই অটোপাস করে বিএ তে ভর্তি হয়েছিলেন। তাদের বিয়ে-শাদী এবং সামাজিক কোনো মর্যাদা ছিল না। এবারও তাই হবে। অনার্স আছে, মাস্টার্স আছে। কে কতোটা মেধাবী বা দক্ষ তা বোঝা গেল না। এ ক্ষেত্রে শিক্ষাবিদদের মত নেয়া হলে ভালো মত বেরিয়ে আসতো। কিন্তু তারা এর প্রয়োজন মনে করেনি।
তিনি বলেন, নির্বাচন হলো গণতন্ত্রের বাহন। সেটাকে ধ্বংস করা হয়েছে শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। লোভী কিছু মেরুদণ্ডহীন মানুষকে দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। ঢাকায় কী শতকরা দশভাগ লোক ভোট দিতে যায়? এটাতো একজন মানুষের পরিবারের ভোট। নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি মানুষের অনাস্থা তৈরি হয়েছে। নির্বাচনকে আরও সুষ্ঠু করার ব্যাপারে সরকারের কোনো আগ্রহ নেই।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস, পরীক্ষা হচ্ছে। অধিকাংশ স্কুলেও ক্লাস চলছে। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া হলো না কেন? সবকিছু বন্ধ থাকলে তো সরাসরি পরীক্ষা নেয়া যেত। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরীক্ষা নেয়া যেত। আসলে সরকার সে ব্যাপারে ভাবেনি। পরীক্ষা নেয়াটা খুবই জরুরি ছিল।