যেকোনও মুহূর্তে জনগণ রাজপথ কাঁপিয়ে অবৈধ ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন ঘটাবে
যেকোনও মুহূর্তে জনগণ রাজপথ কাঁপিয়ে অবৈধ ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন ঘটাতে ধেয়ে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
তিনি বলেছেন, ‘সারা দেশে অব্যাহত নারী ও শিশু ধর্ষণ, দ্রব্যমূল্যের ঊধ্বগতি ও সরকারি নানা ব্যর্থতা আড়াল করতেই সরকার দেশব্যাপী বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে বেপরোয়া হামলা ও নির্যাতন-নিপীড়ণ অব্যাহত রেখেছে। তবে এসব হামলা ও নির্যাতন চালিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের স্রোতধারাকে স্তিমিত করা যাবে না।’
বুধবার (২১ অক্টোবর) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘গতকাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও উপ-নির্বাচনে সরকার তাদের দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে বরাবরের মতোই ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপি’র এজেন্টদের বের করে দেয়া, ভোটকেন্দ্র দখলসহ ব্যালট পেপারে গণহারে সিল মারা, জালভোট প্রদান ও সাধারণ ভোটারদের ভোট দিতে প্রচন্ড বাধা দিয়েছে। একতরফাভাবে সরকারদলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করতেই সরকার এধরণের অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। বিএনপি’র সমর্থক ও ভোটারদের ওপর হামলা এবং ব্যাপক ভোট জালিয়াতির আশ্রয় নিলেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকার অনুগত প্রশাসন সেসব দেখেও না দেখার ভান করেছে।’
‘এসব অনিয়ম, ভোট জালিয়াতি ও পেশী শক্তির বিষয়ে অভিযোগ করা হলেও রিটার্নিং কর্মকর্তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি’- বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি মনোনীত প্রার্থীসহ অন্যান্য প্রার্থীদের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া এবং সাধারণ ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা প্রদানসহ আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ব্যাপক তান্ডবের ঘটনায় দেশের নির্বাচনী পরিবেশ ও গণতান্ত্রিক মৃতপ্রায় চেহারা আরও ষ্পষ্ট হয়েছে। সারাদেশে ধানের শীষের গণজোয়ার সহ্য করতে না পারার জন্যই সন্ত্রাসীরা নির্বাচনে ভোট জালিয়তিসহ ধানের শীষের সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদের ভয় পাইয়ে দিতে হামলা চালিয়েছে। বরাবরের মতো নির্বাচনকে একতরফা করতেই গতকাল সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে এই ধরণের ভোট সন্ত্রাসের আশ্রয় নেয়া হয়েছে।’
প্রিন্স বলেন, ‘গতকাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের দ্বারা ঘৃন্য পন্থায় ভোট জালিয়াতিসহ সন্ত্রাসী কার্যকলাপের ঘটনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ধিক্কার জানাচ্ছে, নিন্দা জানাচ্ছে। এসব হামলায় আহত নেতাকর্মীদের আমরা দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি এবং হামলার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এমরান সালেহ প্রিন্স আরও বলেন, ‘গতকাল দেশের যেসব এলাকায় স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে সেসব নির্বাচনে সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের ব্যাপক তান্ডব, ভোট সন্ত্রাস ও নানা অপকর্মের ফলে এটি আরেকবার সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে, নির্বাচন কমিশন সরকারের ঠুটো জগন্নাথে পরিণত হয়েছে। বরাবরের মতোই গতকালের স্থানীয় নির্বাচনগুলোতেও সরকারদলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত নির্লজ্জ। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হলেও নিজেদের স্বাধীন স্বত্তা বিকিয়ে দিয়ে সরকারের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি গতকাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছে এবং পুনঃতফসিল ঘোষণার মাধ্যমে নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু পুনর্নির্বাচনের জোর দাবি জানাচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদিক শিরিন সুলতানা, প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।