সিলেটের রায়হান হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে জনগণকে শান্ত করা যাবে না: নূর হোসাইন কাসেমী
সিলেটের রায়হান হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে জনগণকে শান্ত করা যাবে না। এটা যে পুলিশি নির্যাতনে হত্যাকাণ্ড ছিল, তা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। অবিলম্বে সন্দেহভাজন পুলিশ সদস্যদের গ্রেফতার, নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দায়ীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশর মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী রোববার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
জমিয়ত মহাসচিব বলেন, সিলেটে পুলিশি হেফাজতে রায়হানের মৃত্যুর আট দিন পরেও চিহ্নিত আসামিরা গ্রেফতার না হওয়া গভীর উদ্বেগজনক। এতে অপরাধে জড়িয়ে পড়া সদস্যদের প্রতি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণ প্রকাশ পায়।
তিনি আরো বলেন, রায়হান যে পুলিশি নির্যাতনে নিহত হয়েছেন, তা নিয়ে সিলেটসহ দেশবাসীর কারো মনে বিন্দুমাত্রও সন্দেহ নেই। কিন্তু রায়হানের মৃত্যু নিয়ে শুরু থেকে নানা রকমের বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে সিলেট পুলিশ প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেয়েছে। এখন শোনা যাচ্ছে, ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত এজাহারে কোনো অভিযুক্তের নাম উল্লেখ করা হয়নি। অথচ ঘটনার শুরু থেকে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরের নাম প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে সামনে চলে আসে। ঘটনায় দায়ী থাকায় আকবর হোসেনসহ চারজন পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। তাহলে কেন তাদের নাম আসামি হিসেবে মামলায় উল্লেখ করা হলো না? কেন হেফাজতে থাকা ওই ফাঁড়ির আট পুলিশ সদস্যকে এখনো গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে না? পুলিশ হেফাজতে থাকা সন্দেহভাজন প্রধান আসামি এসআই আকবরকে পালিয়ে যেতে কারা সহায়তা করেছে? তিনি সিলেট পুলিশের কাছে এসব প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর জানতে চেয়েছেন।
আল্লামা কাসেমী বলেন, সারাদেশে খুন-খারাবি, ধর্ষণ, গণধর্ষণ মহামারির রূপ নিয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন অপরাধ ও হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনায় যখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্যের সংশ্লিষ্টতার খবর মিডিয়ায় একের পর এক আসতে থাকে তখন দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি কতোটা অবনতিশীল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
তিনি বলেন, আমরা হতাশা ও ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করছি, নানা অপরাধের বিচার প্রক্রিয়ায় প্রশাসন নিরপেক্ষ পদক্ষেপ নিতে বার বার ব্যর্থ হচ্ছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক প্রভাব ও হস্তক্ষেপের ঘটনা শুনতে পাচ্ছি। এতে করে প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দলের সাথে সংশ্লিষ্ট অপরাধীরা নিজেদেরকে জবাবদিহিতা বা শাস্তির ঊর্ধ্বে ভেবে নির্বিঘ্নে একের পর এক অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। ফলে জনমনে দিন দিন হতাশা ও ক্ষোভের আগুন বাড়ছে।
বাহিনীকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে ও ভঙ্গুর ভাবমূর্তি রক্ষায় পুলিশ প্রশাসনেরও কর্তব্য নিরপেক্ষ আইনপ্রয়োগে পূর্ণ সহযোগিতা করা। অন্যথায় জনমনে বাড়তে থাকা ক্ষোভ থেকে উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতির দায় সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিতে হবে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি।