স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি এখন রীতিমতো রূপকথা
স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি এখন রীতিমতো রূপকথা। একেকজন তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ধরা পড়েন আর আমরা শিউরে উঠি? তাদের সম্পদের হিসাব মিলাতে হিমশিম খান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। পত্রিকার রিপোর্টেও সব লিখে কুলিয়ে ওঠা যায় না। কেউ কেউ আফসোস করেন, আহা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়ি চালকও যদি হওয়া যেতো।
এইসব রূপকথার মধ্যে নতুন খবর হচ্ছে, স্বাস্থ্য খাতের ৭৫ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারির খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ধারণা এদের প্রত্যেকেই কোটিপতি। ইতিমধ্যে অন্তত ৫০ জনকে সম্পদ বিবরণী দাখিল ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস দেয়া হয়েছে। দুদক সচিব দিলওয়ার বখত বলেন, আমরা ৭৫ জনের তালিকা তৈরি করে অনুসন্ধান করছি। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
তালিকাভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আরও অবৈধ সম্পদ উৎস ও অর্থ লোপাটের তথ্য পাওয়া যাবে। তা ছাড়া কমিশনের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলমান। নতুন যাদের নাম আসবে পর্যায়ক্রমে তাদেরও অনুসন্ধানের তালিকায় আনা হবে।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের একজন পরিচালক বলেন, ‘এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর সবাই কোটিপতি বলে আমরা প্রাথমিক তথ্য পেয়েছি। গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর কয়েক কর্মকর্তা ও তাদের স্ত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইতিমধ্যে নোটিস দেওয়া হয়েছে।’
৭৫ জনের মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারির সংখ্যা অবশ্য স্পষ্ট হওয়া যায়নি। কিন্তু কিছু দিন পরপরই আমরা স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতিবাজ ধরার খবর দেখি। এদের প্রায় সবাই কর্মচারী। যদিও তাদের সম্পদ দেখে যে কারওই বিস্মিত হওয়ার কথা। আবজাল এখন কারাগারে। দেশ-বিদেশে তার সম্পদের ফিরিস্তি পত্রিকায় বহুবার প্রকাশিত হয়েছে। কয়দিন আগেই এক গাড়ি চালক পাওয়া যায়। যার ঢাকায় তিনটি বাড়ি, একটিতে আবার ২৪টি ফ্ল্যাট। এমন বা তার চেয়ে বেশি সম্পদের মালিক আরেকজন গ্রেপ্তার হলেন এই তো সেদিন।
এখন কথা হচ্ছে, এই কর্মচারীদের কারও হাতেই আলাদিনের চেরাগ নেই। স্যারদের সহযোগিতা ছাড়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয় কোটিপতি ক্লাবের মেম্বার হওয়া। কেবল এই কর্মচারীদের আইনের আওতায় আনলেই স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি বন্ধ হবে না। কান টানাই দুর্নীতি বন্ধের জন্য যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন, বড় বড় দুর্নীতিবাজদেরও আইনের আওতায় আনা।