বাসা থেকে ডেকে নিয়ে কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ

গাজীপুরে এক কলেজছাত্রীকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গণধর্ষণ করেছে সহপাঠীসহ কয়েক যুবক। এঘটনায় জড়িত থাকায় দুজন গাড়ি চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার গাজীপুর মেট্রো পলিটন পুলিশের সদর থানার ওসি মো. আলমগীর ভূঞা এ তথ্য জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন ময়মনসিংহের গৌরীপুর থানার গলগণ্ডা এলাকার আনন্দ (২২) ও গাজীপুরের শ্রীপুর থানার জয়না বাজার এলাকার আবুল কালামের ছেলে মাসুদ রানা (২৫)। এদের মধ্যে আনন্দ গাজীপুর মহানগরের পশ্চিম চতর এলাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকেন এবং রানা একই এলাকার মেম্বারের চালা খাসের বস্তি এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে গাড়ি চালান।

জিএমপির সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সৈয়দ রাফিউল করিম মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, জামালপুর জেলা সদর থানার তিতপাল্লা এলাকার এক ব্যক্তি গাজীপুর শহরের উত্তর ছায়াবিথী এলাকায় সপরিবারে বাস করেন। তার কিশোরী মেয়ে (১৮) স্থানীয় দক্ষিণ ছায়াবিথী সেন্ট্রাল পাবলিক কলেজের একাদশ শ্রেণীতে বাণিজ্য শাখার ছাত্রী। একই শ্রেণীতে লেখাপড়া করেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের চতর বাজার এলাকার নয়ন মিয়ার ছেলে নাঈম (১৯)।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে দেখা করার কথা বলে নাঈম মোবাইলে ফোন করে তার সহপাঠী ওই কলেজছাত্রীকে শিমুলতলী বটতলা এলাকায় ডাকেন। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর কলেজছাত্রীকে ব্যাটারি চালিত একটি অটো রিক্সায় উঠিয়ে পশ্চিম চতর স্কুল গেইট সংলগ্ন বাংলালিংক মোবাইল ফোনের টাওয়ারের পাশে নিয়ে যান নাঈম। এসময় নাঈমের দুবন্ধু আনন্দ ও মাসুদ রানা উপস্থিত ছিলেন।

পরে তারা ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক টাওয়ারের ভেতর মেইন গেইটের পাশের একটি ভবনে নিয়ে হত্যা করার ভয় দেখায়। এরপর ওই ছাত্রীর মুখ চেপে ধরে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন নাঈম ও তার ওই দুই বন্ধু। ধর্ষণের পর ছাত্রীকে পাশের অটো স্ট্যান্ডে পৌঁছে দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন নাঈম।

ধর্ষণের শিকার ছাত্রীটি হাটতে না পেরে সেখানে বসে কান্নাকাটি করতে থাকলে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে। ঘটনা জানতে পেরে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছাত্রীটির পরিবার ও পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে জিএমপির সদর থানা পুলিশ গুরুতর অসুস্থ্যাবস্থায় ধর্ষণের শিকার ওই কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।

সদর থানার ওসি মো. আলমগীর ভূঞা জানান, এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর মা শুক্রবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে জোরপূর্বক একাধিক ব্যক্তি পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে জিএমপির সদর থানায় তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।

পুলিশ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত আনন্দকে ময়মনসিংহ থেকে ও রানাকে শ্রীপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। মামলার প্রধান আসামি নাঈম ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।