প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে
প্রবাসীর স্ত্রীর কাছে টাকা ধার নিয়েছিলেন নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলজার হোসেন (৩৭)। সময়মতো টাকা ফেরত না দেয়ায় বুধবার বিকেলে শালিস বৈঠক বসে। শালিসের একপর্যায়ে বেরিয়ে আসে এই আওয়ামী লীগ নেতা শুধু টাকা ধার নেয়ায় নয়, ওই গৃহবধূকে ব্ল্যাকমেইল করে একাধিকবার ধর্ষণও করেছেন।
এ ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যায় ওই নারী আওয়ামী লীগ নেতা গোলজার হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। পুলিশ রাতেই অভিযুক্ত গোলজার হোসেনকে গ্রেফতার করে। ভুক্তভোগী ওই প্রবাসীর স্ত্রীর বাড়ি পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামে।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম মামলার বরাত দিয়ে জানান, উপজেলার রামপুর গ্রামের জনৈক যুবক জীবিকার সন্ধানে দুই বছর আগে মধ্যপ্রাচ্যে পাড়ি জমান। তিনি তার আয়ের সব টাকা স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে পাঠাতেন। পার্শ্ববর্তী নাটোর জেলার নাজিরপুর গ্রামের বাসিন্দা গোলজার হোসেন ওই নারীকে বিভিন্ন সময়ে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। একপর্যায়ে তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন।
এরপর তাদের বিভিন্ন সময়ের আলাপচারিতা ও কিছু দুর্বল মুহূর্তের ছবি মোবাইলে ধারণ করে রাখেন। এরপর সেগুলো প্রবাসীর স্ত্রীকে দেখিয়ে সামাজিকভাবে হেয় করার ভয় দেখানো হয়। এভাবে ওই নারীকে ব্ল্যাকমেইল করে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের ছবিও গোপনে ধারণ করে রাখেন গোলজার। সেসব ছবি দেখিয়ে ওই প্রবাসীর স্ত্রীর কাছ থেকে তার স্বামীর পাঠানো পাঁচ লক্ষাধিক টাকা ধারের কথা বলে হাতিয়ে নেন।
ওসি আরও জানান, ওই গৃহবধূর কাছ থেকে তিনি ধারের নাম করে দফায় দফায় পাঁচ লাখ ২০ হাজার টাকা নেন। কিন্তু টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করতে থাকেন। এর মধ্যে সম্প্রতি ওই নারীর স্বামী দেশে ফেরেন। স্বামীর কাছে টাকার হিসাব দিতে না পেরে তার স্ত্রী বলে দেন গোলজার হোসেন নামে একজন টাকা ধার নিয়েছেন।
এরপর গত ২ অক্টোবর ওই নারীর স্বামী গোলজার হোসেনের কাছে গিয়ে টাকা ফেরত চান। গোলজার টাকা দেয়ার বদলে তাকে পিটুনি দেন। এ ঘটনার বিচার চেয়ে বুধবার গ্রাম্য শালিস বসে। শালিসে গৃহবধূ সব খুলে বলেন। তখন ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ পায়। এতে মীমাংসা না হয়ে শালিস ভণ্ডুল হয়।
এরপর বুধবার সন্ধ্যায় ওই গৃহবধূ চাটমোহর থানায় আওয়ামী লীগ নেতা গোলজার হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করলে রাতেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
নাটোরের জোনাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি তোজাম উদ্দিন গোলজার হোসেনের দলীয় পদবি নিশ্চিত করেন। তবে তিনি বলেন, তার ব্যক্তিগত অপকর্মের দায়ভার সংগঠনের নয়।
চাটমোহর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতার গোলজার হোসেনকে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে কারাাগারে পাঠানো হবে।