রাতের ভোটে নির্বাচিত ‘ভোট ডাকাত’ আ.লীগ সরকারকে বিতাড়িত করতে হবে: গয়েশ্বর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘ভোট ডাকাত সরকারকে বিতাড়িত করতে হবে। এই সরকার ভোট ছাড়াই ক্ষমতায় আছে।’
শুক্রবার (০২ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক প্রতিবাদী যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানের অবৈধ অব্যাহতির প্রতিবাদ এবং চলমান খুন-ধর্ষণের পৃষ্ঠপোষকদের বিচারের দাবিতে স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে এই ‘প্রতিবাদী যুব সমাবেশ’ হয়।
গয়েশ্ব বলেন, ‘সরকার জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় আছে। সংসদ হলো ভোট ডাকাতদের অভয়ারণ্য। তারা মুক্তিযুদ্ধের ও স্বাধীনতার মূল চেতনা, গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনষ্ট করেছে। আজকে দেশের সার্বভৌমত্ব আছে কি না দেখা যায় না। আজকে আমরা ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয়েছি। করদ রাজ্য।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘আজকে দেশের সার্বভৌমত্ব থাকা না থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আন্দোলনের কোনো সময় থাকে না। ইস্যুতে আন্দোলন হয়।’
তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমান সম্পর্কে বলেন, ‘শহীদ জিয়া দেশের উন্নয়নের অনেক কিছু শেষ করতে পারেননি। কিন্তু তিনি সবকিছুই শুরু করে গেছেন। তিনি শুরু করেছিলেন বলেই তাঁর অনেক কিছুর শেষ হয়েছে। সেসময় মানুষ চেয়েছিল মুক্তি, কথা বলার অধিকার। কিন্তু করা হলো বাকশাল, সংবাদপত্র নাই। আর জিয়াউর রহমান মানুষ যে গণতন্ত্র চেয়েছে, যে স্বাধীনতা চেয়েছে, যে অধিকার চেয়েছে সেগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। তার জানাজার নামাজে লাখো মানুষের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে তিনি কতটা জনপ্রিয় ছিলেন।’
বিএনপির এই নেতা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনি যোগ্য সন্তান হলে আপনার বাবার জানাজা যারা পড়েনি অথচ এখন ‘বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু’ বলছে তাদের বিচার আগে করুন।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘বর্তমান সরকার তো যৌন চেতনা বৃদ্ধির সুযোগ দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেকে রক্ষা করছেন। অথচ সারা জাতি ছাত্রলীগের সোনার ছেলেদের দ্বারা নিপীড়িত।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ডাক যাদের দেয়ার কথা তারা দেয়নি। দিয়েছেন তৎকালীন সেনাবাহিনীর একজন মেজর। তিনি হলেন জিয়াউর রহমান। ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত জিয়ার নেতৃত্বেই দেশ পরিচালনা হয়েছে।’
গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘আমাদের আরেকবার নামতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে নামতে হবে। বিশাল প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। যার ঢেউয়ে ভেসে যাবে যারা দেশের স্বাধীনতা নিয়ে ছিনিমিনি খেলে।’
দলটির ভাইস-চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ বলেন, ‘ভিন্নমতের কারণে অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। তিনি পত্রিকায় কলামে সত্য কথা লিখে মতপ্রকাশ করেছেন। আজ তাকে যারা চাকরিচ্যুত করেছে তাদরকেও একটা সময় চাকরিচ্যুত করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাবে। ঢাবি সিন্ডিকেট ‘দলদাস’ হয়ে কাজ করছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকারের হাতে দেশ নিরাপদ নয়। পশুপাখির জন্য যেমন অভয়ারণ্য দরকার তেমনি ‘ধর্ষকলীগের’ জন্য ভাসানচরে অভয়ারণ্য করে দেন। পাপিয়াদের মতো যারা আছে তাদেরকে সেখানে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।’
শওকত মাহমুদ বলেন, ‘এই সরকারকে আর বেশি সময় দেয়া যাবে না। আসুন সংগ্রাম করে তাদের সরিয়ে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করি। যার নেতৃত্ব দিবেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রাজীব আহসান, যুবদলের সাইদ হাসান মিন্টু, ছাত্রদলের সাবেক নেতা জহির উদ্দিন তুহিন, জাতীয় মুক্তমঞ্চের ইসমাইল তালুকদার খোকন ও কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।