আওয়ামী লীগ একদিন ইতিহাসের ডাস্টবিনে চলে যাবে: রিজভী
এই সরকার দুই ঠ্যাংয়ের উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দুটো পা’য়ের উপরে নির্ভর করে আছে সরকার। একটা হচ্ছে যুবলীগ ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসী, আরেকটি হচ্ছে তাদের সাজানো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই দুটো পা’য়ের উপরে সরকার দাঁড়িয়ে।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাস এর আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যঙ্গ করে মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট কাহিনী নির্ভর কুরুচিপূর্ণ প্রচারের প্রতিবাদে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, আজকে যখন ক্ষমতার লোভে, হালুয়া-রুটির লোভে, কয়েকজন তথাকথিত সাংস্কৃতিকজীবিরা যাদের কোনো লেখা নাটক, কবিতা অথবা গান মানুষ কোনোদিন শুনেছে কিনা জানি না, তারা একটা নাটক লিখেছে ‘ইনডেমনিটি’। একটা চটি, বস্তা পচা একটা নাটক, সেটা কি কেউ জানে না। কিন্তু যেহেতু ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগকে সন্তুষ্ট করতেই, সরকারকে সন্তুষ্ট করতে এ নাটক বানানো হয়েছে। ধমক দিয়ে, হুমকি দিয়ে গণমাধ্যমকে বাধ্য করছে এটা প্রচারের জন্য।
বিএনপির এ নেতা বলেন, যারাই নাটক লিখেছে তাদের নাম কি আপনারা কেউ শুনেছেন? শোনেন নাই। কত বিখ্যাত বিখ্যাত লোকের নাম আমরা শুনেছি। কিন্তু এদের নাম কেউ শোনেনি। কেউ যখন এগিয়ে আসেনি তখন এদেরকে ভাড়া করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, দেশের বরেণ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যার ঘোষণা না আসলে এই দেশের মানুষ দিকনির্দেশনাহীন থাকতো, মানুষকে যিনি দিশা দেখিয়েছেন। তাদেরকে অপমান করার জন্য এই নাটকটি লিখেছেন।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, ওরা বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে। এইসব সাংস্কৃতিকজীবীরা বেশি বেশি করে এসব কথা বলে। তারা এ নাটক লিখেছে। কারণ এর পিছনে আছে টাকার লোভ, হালুয়া-রুটি লোভ, পোলাও মাংসের লোভ। আরেকদিকে এই সময়ের সাংস্কৃতিক বীর আবু সালেহ নির্দ্বিধায় বুক চিতিয়ে গুম, মামলা-হামলার ভয় উপেক্ষা করে তাদের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করেছে। এই সরকার এই মামলা কখনো কোর্টে ঠিকতে দেবে না, কারণ কোর্ট তাদের, আদালত তাদের। বিরোধীদলকে শাস্তি দেয়ার জন্য, দমন করার জন্য আদালতকে তারা কসাইখানায় পরিণত করেছে। সাংস্কৃতিক বীর আবু সালেহ, অন্যদিকে এই নাটকটি সাথে যারা জড়িত তারা সাংস্কৃতিক কাপুরুষ।
সাংস্কৃতিক সংগ্রাম করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক সংগ্রাম কিন্তু রাজনৈতিক সংগ্রামের থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ। সাংস্কৃতিক সংগ্রামে যদি ওই সাংস্কৃতিক পরজীবীদেরকে আমরা প্রতিহত করতে না পারি তাহলে সার্বভৌমত্ব থাকবে না, স্বাধীনতা থাকবে না।
রিজভী বলেন, আমি সরকারকে বলতে চাই এবং আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক কর্মীদেরকে বলতে চাই, আপনার তো সরকার আছেন নির্ভয়ে এটা করতে পারছেন। আর বিরোধীদল কথা বললে আপনারা জানেন এদের মিথ্যা মামলায় কারাগার, না হলে গুম হতে হয়। সরকারের সাথে জনগণ নেই, আমাদের পিছে জনগণ আছে। আমাদের দেশের জনগণ আছে বলেই, এত অত্যাচার এত এত নিপীড়নের পরও আমরা কণ্ঠে আওয়াজ তুলি। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়াসহ সারা বাংলাদেশে এই আওয়াজ উৎক্ষিপ্ত হয়।
তিনি বলেন, আপনারা ইতিহাস বিকৃত করবেন, করতে পারেন। তোমার নেতা শেখ মুজিব আমার নেতা জিয়া, তার নামেই তো আন্দোলিত টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া। এই আওয়াজ আপনি বন্ধ করতে পারবেন না। জিয়ার নামে, খালেদা জিয়ার নামে কলঙ্ক লেপন করবেন, কিন্তু আওয়াজ বন্ধ হবে না। আমরা এখনো শার্টের বোতাম খুলে তপ্ত সীসার বুলেট ধারণ করতে পারি। আমরা সেই জাতীয়তাবাদী বাহিনী যারা আপনার এত গুম-খুনের পরেও এখনো মাথা উঁচু করে মিছিল করি, আমরা আমাদের বক্তব্য রাখি, আমরা আমাদের কর্মসূচি পালন করি। এই অত্যাচারের প্রতিশোধ একদিন জনগণ ঐতিহাসিকভাবে দিয়ে দিবে। অন্যায় করে বেশিদিন টিকে যায় না।
তিনি আরো বলেন, যে লোক বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছে, যে লোক স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছে, যে লোক সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছে, যার অবদানে আজ এত মিডিয়া তার বিরুদ্ধে নাটক রচনা করে, কুৎসা রটনা করছেন। আপনারা একদিন ইতিহাসের ডাস্টবিনে চলে যাবেন। জিয়াউর রহমান প্রদীপ্ত সূর্যের উদ্ভাসিত আলোর মতোই মানুষের হৃদয়ে হৃদয়ে থাকবেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও উদ্ভাসিত থাকবেন মানুষের হৃদয়ে।