প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণ, ঘটনা ধামাচাপা দিতে তৎপর প্রভাবশালী চক্র
কুমিল্লার বরুড়ায় প্রতিবন্ধী এক বৌদ্ধ তরুণীকে (১৭) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে ধর্ষককে বাঁচাতে সালিশের নামে অর্থের প্রলোভনে নির্যাতিতার বৃদ্ধ বাবা থেকে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে প্রভাবশালী কয়েক সমাজপতির বিরুদ্ধে।
অবশেষে এ ঘটনায় শুধুমাত্র ধর্ষক ইমাম হোসেনকে আসামি করে সোমবার রাত ১১টার দিকে বরুড়া থানায় মামলা রেকর্ড করা হলেও সালিশের নামে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া প্রভাবশালীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।
এদিকে প্রতিবন্ধী বৌদ্ধ এ তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে। পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করতে পারেনি।
স্থানীয় সূত্র ও মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, জেলার বরুড়া উপজেলার শীলমুড়ি দক্ষিণ ইউনিয়নের লগ্নসার গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে ইমাম হোসেন একই গ্রামের হতদরিদ্র মাতৃহারা প্রতিবন্ধী বৌদ্ধ তরুণীকে বাড়িতে ঢুকে বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে।
সর্বশেষ গত শনিবার রাতে ইমাম হোসেন একই কাজে লিপ্ত হলে নির্যাতিতার বৃদ্ধ পিতা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে ধরার চেষ্টা করলে সে পালিয়ে যায়।
সাংবাদিকরা ওই বৌদ্ধ প্রতিবন্ধী তরুণীর বাড়িতে গেলে তার পিতা জানান, রোববার রাত ১১টার দিকে ওই এলাকার খলিলুর রহমান মুন্সি, নয়ন, আবু তাহের, লিটন বড়ুয়া ও রতনসহ কয়েকজন আমার বাড়িতে এসে ঘটনাটি মিটমাটের জন্য সালিশে বসে।
এ সময় তারা আমাকে (নির্যাতিতার বৃদ্ধ বাবা) চল্লিশ হাজার টাকা দেবে বলে খলিলুর রহমান মুন্সি আমার থেকে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে কোনো টাকা পয়সা দেয়নি, তবে শুনেছি তারা ধর্ষক ইমাম হোসেন থেকে মীমাংশার নামে ২ লাখ টাকা নিয়েছে।
এদিকে সাংবাদিকদের উপস্থিতির খবরে বরুড়া থানার এসআই বিকাশ চন্দ্র ঘোষ, এসআই উত্তম কুমারসহ পুলিশের একটি দল নির্যাতিতার বাড়িতে পৌঁছে তার বাবার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করে রাতে তাদের দু’জনকে থানায় নিয়ে যায়।
সোমবার রাতে ধর্ষক ইমাম হোসেনকে একমাত্র আসামি করে থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা রুজু হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় সালিশের নামে অর্থের প্রলোভনে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া খলিলুর রহমান মুন্সিসহ প্রভাবশালীরা।
মঙ্গলবার রাতে বরুড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল বাহার জানান, ইমাম হোসেন নামে একজনকে আসামি করে ধর্ষিতার বাবা সোমবার রাতে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
এছাড়াও তদন্তে অন্যকারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরুড়া থানার ওসি সত্যজিৎ বড়ুয়া জানান, থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে অন্যকেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।