এমসি কলেজে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ

0

সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে নারী নির্যাতনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম।

তিনি বলেছেন, গত ২৫ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগ কর্তৃক সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে নারী নির্যাতনের ঘটনা অতীতের সকল বর্বরতা ও নির্মমতাকে হার মানিয়েছে। এই ঘটনায় জাতি হিসেবে আমরা লজ্জিত ও বাকরুদ্ধ। মায়ের জাতির এই অপমান গোটা জাতিরই অপমানের সামিল।

তিনি ন্যাক্কারজনক ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে দোষীদের ফাঁসি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।

ড. মুহা. রেজাউল করিম মঙ্গলবার রাজধানীতে ছাত্রলীগের কর্মীদের দ্বারা সিলেটের এমসি কলেজসহ সারাদেশে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং অপরাধীদের অবিলম্বে ফাঁসির দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত এক বিক্ষোভের পর সমাবেশে এসব কথা বলেছেন।

বিক্ষোভ মিছিলটি উত্তর বাড্ডা থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে রামপুরায় গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়েছে। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম ও মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য নাজিম উদ্দীন মোল্লা, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, মহানগরী মজলিসে শূরা সদস্য মেসবাহ উদ্দীন নাঈম, আতাউর রহমান সরকার, অ্যাভোকেট ইব্রাহিম খলিল, অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান ও মো: ফজলে হক ফজলু প্রমুখ।

ড. এমআর করিম বলেন, নারী নির্যাতন ছাত্রলীগের অতীত ঐতিহ্য। এর আগে জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রলীগ নেতা নারীর সম্ভ্রমহানীর সেঞ্চুরি উদযাপন করেছিলেন। ২০১৬ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা বদরুল সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে প্রকাশ্য দিবালোকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেছিলেন। মূলত সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের নারী নির্যাতনের সংস্কৃতির কারণে দেশে নারী নির্যাতন এখন করোনার মতো মহামারিতে পরিণত হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে নির্যাতন ও সম্ভ্রমহানীর শিকার হয়েছেন ৬০১ জন নারী ও শিশু। এদের বর্বরতা থেকে রেহাই পায়নি উপজাতি, প্রতিবন্ধী ও বয়োঃবৃদ্ধ নারীরাও। এসব ঘটনায় জাতি রীতিমত উদ্বিগ্ন। অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ার কারণেই এই ধরনের অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে।

তিনি আরো বলেন, সরকার জনগণের জানমাল ও সম্মানের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন অতীতের সকল সময়ের চেয়ে খারাপ পর্যায়ে। অপশাসন-দুঃশাসন, হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ, গুম, অপহরণ, গুপ্তহত্যা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এখন জাতির ঘাড়ে পাথরের মতো চেপে বসেছে। কোনো পেশা ও শ্রেণীর মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। সম্প্রতি টেকনাথে সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো: রাশেদ খান হত্যা সেই সাক্ষ্যই বহন করে।

তিনি বলেন, জনগণের ক্রয় ক্ষমতা না বাড়লেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। মূলত সরকারের ধারাবাহিক ব্যর্থতার কারণে দেশ এখন অপরাধ ও অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। দেশের স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি জনস্বাস্থ্যকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। মাঝে মাঝে সরকার দুর্নীতিবাজদের ধরার কথা বললেও তা শুধু আশ্বাস ছাড়া কিছু নয়। শাহেদ আর সাবরিনারা সরকারেরই সৃষ্টি। তাই এই সরকারের কাছে দুর্নীতিবাজদের বিচার চেয়ে কোনো লাভ নেই। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com