ধর্ষণ আইনের শক্ত প্রয়োগ চাই

0

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, ‘সিলেটের এমসি কলেজে ঘুরতে আসা এক দম্পতিকে আটকে জোর করে ছাত্রাবাসে তুলে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় আমরা দুঃখিত, লজ্জিত ও আতঙ্কিত। এ নিয়ে কলেজের অধ্যক্ষের ব্যাখ্যাও বোধগম্য নয়। আমি মনে করি, ধর্ষকদের বিরুদ্ধে আইনের কঠোর শাস্তির পাশাপাশি এমন কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে তারা সমাজের কোথাও ঠাঁই না পায়। ধর্ষণের শক্ত আইনের শক্ত প্রয়োগ চাই। সিলেটের এমসি কলেজে এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার আমি তীব্র ঘৃণা জানাচ্ছি।’

বি. চৌধুরী বলেন, ধর্ষকদের ব্যাপারে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে, যাতে কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে ধর্ষকরা বেরিয়ে যেতে না পারে। বিশেষ করে রাজনৈতিক ধর্ষকদের বিরুদ্ধে আরও শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের রাজনীতি থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘ধর্ষক যদি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী হয়, তাকে চাকরি থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করতে হবে। তাকে ডিউটিতে রাখা যাবে না। শিক্ষার্থী ধর্ষক হলে তাকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া যাবে না। তার সব শিক্ষাসনদ বাতিল করতে হবে। একইভাবে ধর্ষকদের ব্যাপারে পুলিশের নজরদারি বাড়াতে হবে। আমি মনে করি, সরকার যদি এ ধরনের কিছু পদক্ষেপ নেয়, তাহলে সমাজে কিছুটা হলেও ধর্ষণ কমবে। ধর্ষণকারীরাও ভয় পাবে। তাদের দীর্ঘমেয়াদে শাস্তি দিতে হবে।’

বি. চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক ধর্ষকরা নানাভাবে বেরিয়ে যায়। এরপর তারা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাই তাদের আইনের শাস্তির পাশাপাশি রাজনৈতিক ক্যারিয়ারও শেষ করে দিতে হবে। সিলেটে যারা সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। রাজনীতি থেকে আজীবন তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত। আর কেউ একাধিকবার ধর্ষণ করলে তাকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। সমাজের কোথাও ধর্ষকদের ঠাঁই দেওয়া যাবে না।

সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শুধু শাস্তি দিয়ে ধর্ষণের মতো সামাজিক ও মানসিক অপরাধ বন্ধ করা যাবে না। এ জন্যই আমাদের প্রতিবেশী দেশসহ বাংলাদেশে ধর্ষণপ্রবণতা কমেনি, বরং বেড়েছে। শিশু এবং মা-বোনদের নিরাপত্তা আরও নিশ্চিত করতে হবে। তারা শিক্ষা এবং উপার্জনের অন্বেষণে বেশি সময় বাইরে থাকেন, সে জন্য তাদের বাইরে যেতে হয় বেশি। ধর্ষকের মতো সামাজিক অপরাধীরা সহজেই তাদের হাতের নাগালে পায়। এ ছাড়া অনেক পুরুষ রোজগারের অন্বেষণে দেশের বাইরে যান বলে তাদের গৃহের বেশির ভাগ নারী ও শিশু ‘অরক্ষিত’ অবস্থায় থাকে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সতর্ক হতে হবে। এ বাহিনীতে মহিলা সদস্যের সংখ্যা বাড়াতে হবে। উন্নত প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তাদের আরও ক্ষমতায়ন করতে হবে। গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার বাড়াতে হবে। ধর্ষণের আশঙ্কা কমানোর জন্য আমাদের মা-বোন ও শিশুদের আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ দিতে হবে।’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com