সবচেয়ে বেশি রক্তঝরা সীমান্তের মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত অন্যতম
বৈঠকের পরে বৈঠক চলে, স্বাক্ষর হয় নানাবিধ চুক্তি সমঝোতাও, কিন্তু কোনোভাবেই বন্ধ হয় না সীমান্ত হত্যা। এ দেশে ‘সীমান্ত হত্যা’র সংজ্ঞাই হলো ভারতীয় বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নিরস্ত্র মানুষের হত্যাকাণ্ড। প্রতি বছরের মতো এবারও দু’দেশের ৫০তম সীমান্ত সম্মেলনে আবারও সেই পুরনো ঘোষণা এলো- শূন্যে নামবে এমন হত্যা। যদিও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, এখন পর্যন্ত একটি হত্যারও বিচার হয়নি বলেই এই অমানবিকতা বন্ধ হয় না।
দুনিয়া কাঁপানো ফেলানী হত্যার বিচার ৯ বছর ধরে কেনো ঝুঁলে আছে, সেটি জানা যায় নি-আজও। বলা হয়ে থাকে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছর প্রথম ছ’মাসেই বিএসএফ এর হাতে নিহত হয়েছেন ২৫ বাংলাদেশি।আইন ও শালিস কেন্দ্রের পরিসংখ্যান বলছে, গত ১১ বছরে এই সংখ্যা ৫ শ’র কাছাকাছি। এমনকি চলতি মাসেই বিএসএফ’এর হাতে নিহত বাংলাদেশীর সংখ্যা ৪। এই পরিসংখ্যানের উপর দাঁড়িয়েই সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হলো দু’দেশের সীমান্ত সম্মেলন।
যদিও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি কেউ চোরাকারবারিও হয় তবুও তার বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। সীমান্তে গুলি চালিয়ে নিরস্ত্র মানুষ হত্যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, বার বার পার পেয়ে যাচ্ছে, যারা মারছে। এখানে ভারতীয়রা যখন উদ্যোগ নেবে তখনই এসব বন্ধ হবে।আইনবিদরা মনে করেন, সীমান্ত হত্যা বন্ধে দুদেশের রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা প্রয়োজন। পাশাপাশি ভারত যেমন বৃহৎ রাষ্ট্র, তেমনি এই হত্যা বন্ধে তাকে মহৎ হতে হবে।
ফেলানী হত্যা মামলার আইনজীবী অ্যাড. এস এম আব্রাহাম লিংকন বলেন, বাংলাদেশ তার প্রত্যেকটা বৈঠকে সীমান্তকে প্রাইয়োরিটি দিচ্ছে। তারা যদি মনে করে বাংলাদেশ বর্ডার কাশ্মীর, তাহলে সেটা ভুল হবে। পৃথিবীর যেসব সীমান্তে সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝড়ে তার মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত অন্যতম।
সূত্র : সময় টিভি অনলাইন