রাজধানীতে এক সপ্তাহে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত ১৫ জন
রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় গত এক সপ্তাহে ১৫ জন অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন। এর মধ্যে ব্যবসায়ী, প্রবাসী, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন রয়েছেন। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোঃ বাচ্চু মিয়া এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, শনিবার দুপুরে গুলিস্থান স্টেডিয়ামের কাছ থেকে পথচারীরা এক মামা-ভাগ্নেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করেন। মামা হযরত আলী (৩৫) বিদেশ থেকে গতকাল ভোরে ঢাকার বিমান বন্দরে পৌঁছান। ভাগ্নে আল আমিন (২৫) তাকে রিসিভ করতে বিমানবন্দরে আসেন। পরে বাসে পাশের সিটে বসা একজনের দেয়া বিস্কুট খেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লে সর্বস্ব নিয়ে যায় অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা।
কিছুটা জ্ঞান ফেরার পর আল আামিন বলেন, আমার মামা হযরত আলী চার বছর পর বাহরাইন থেকে শনিবার ঢাকায় আসেন। তাকে রিসিভ করতে দোহার থেকে ঢাকায় আসি আমি। মামা আসার পর তাকে নিয়ে বিমানবন্দর বাসস্টেশন থেকে গুলিস্তানের উদ্দেশে বাসে উঠি আমরা।
মামা ছিলেন সামনের সিটে আর আমি ছিলাম তার পেছনের সিটে। কিছুদূর যেতেই পাশের সিটের এক লোক আমার সাথে কথাবার্তা বলে। জানায় তাদের বাড়িও দোহারে। তারাও দোহারে যাবেন। পরে তারা বিস্কুট খেতে দেয় এবং নিজেরাও খায়। এরপরে আস্তে আস্তে অচেতন হয়ে পড়ি। জ্ঞান ফেরার পর দেখি আমরা হাসপাতালে। সাথে কিছুই নেই। মোবাইল, টাকা ও ব্যাগ সবই নিয়ে গেছে।
অপরদিকে, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার এএসআই আমিনুর রহমান শনিবার সন্ধ্যায় সুনয়ন মণ্ডলকে (৪০) ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
আমিনুর রহমান বলেন, শনিবার দুপুরে পুলিশের রেকার গাড়ির চালক বেগুনবাড়ি লাভ রোডের মোড় থেকে অচেতন অবস্থায় সুনয়ন মণ্ডলকে উদ্ধার করে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তাকে ঢামেক হাসপাতালে নেয়া হয়। খবর পেয়ে সুনয়ন মণ্ডলের খালাতো ভাই পরিতোষ সরকার হাসপাতালে আসেন।
তিনি জানান, তার ভাই কসমেটিকস ব্যবসায়ী। তিনি বরিশাল আগৈলঝরা মৈস্তারকান্দি গ্রামের সুনিল সরকারের ছেলে। সেখানে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সুনয়ন মালামাল কেনার জন্য গত শুক্রবার ঢাকায় আসেন। রাতে মগবাজারে তার বাসায় ছিলেন। সকালে চকবাজারের উদ্দেশে বের হন। সাথে ছিল দেড় লাখ টাকা। তার কাছে কিছুই পাওয়া যায়নি। সবই খোয়া গেছে। পরে তাকে শহিদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসক।
পরিদর্শক মোঃ বাচ্চু মিয়া আরো জানান, গত এক সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে ১৫ জন লোক অচেতন অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। তাদের কাছ থেকে সব কিছু হাতিয়ে নেয় অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা।