ইউএনও ওয়াহিদার ওপর হামলা: রিমান্ড শেষে আদালতে রবিউল

0

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার মুক্তিযোদ্ধা বাবা ওমর আলী শেখের ওপর বাসায় ঢুকে হামলার ঘটনায় করা মামলায় আসামি রবিউল ইসলামকে ৬ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রবিউলকে কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় আদালতে আনা হয়। 

এরপর তাকে সেখান থেকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আঞ্জুমান আরার এজলাসে নেয়া হয়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানে রবিউল ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দিনাজপুর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি ইমাম জাফর এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ হামলার ঘ্টনায় ইউএনও অফিসের বরখাস্ত হওয়া মালি রবিউল ইসলামকে গত ১২ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে ৬ দিনের রিমান্ডে নেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আজ তার রিমান্ডের ৬ দিন শেষ হওয়ায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। 

এর আগে গেল ৯ সেপ্টেম্বর রবিউলকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে এই হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ও একমাত্র হামলাকারী হিসেবে নিজের দোষ স্বীকার করে বলে ১২ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে জানান পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য। 

ওইদিনই তাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

ইউএনও ওয়াহিদা ও তার বাবার ওপর হামলায় করা মামলায় আরও ৪ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই ৪ আসামি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। 

গত ২ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে দুর্বৃত্তরা মই বেয়ে ইউএনও ওয়াহিদার সরকারি বাসায় ঢুকে এবং ভেন্টিলেটর ভেঙে ইউএনওর রুমে প্রবেশ করে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত শুরু করে। একসময় ইউএনও’র চিৎকার শুনে তার মুক্তিযোদ্ধা বাবা পাশের রুম থেকে ছুটে এসে মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাকেও কুপিয়ে জখম করে। পরে পাশের কোয়ার্টারের বাসিন্দারা বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। 

গুরুতর আহত অবস্থায় ওই রাতেই প্রথমে ঘোড়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরদিন সকালে রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর ওয়াহিদাকে ঢাকায় এনে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিন রাতেই প্রায় ২ ঘণ্টার চেষ্টায় ৬ সদস্যের চিকিৎসক দল ইউএনও ওয়াহিদার মাথার জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন। অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হওয়ার পর তাকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। 

এরমধ্যে সবশেষ গেল সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ইউএনও ওয়াহিদার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. আব্দুস সালাম জানিয়েছেন, ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থার আরও উন্নতি হয়েছে। তিনি ডান হাত পুরোটা নাড়াতে পারছেন। এমনকি ডান পাও কিছুটা নাড়াতে পারছেন। 

এদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওয়াহিদা খানমের মুক্তিযোদ্ধা বাবা ওমর আলী শেখকেও গত ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাবা-মেয়ে এখন একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। 

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com