ক্যানসারে মরণাপন্ন স্ত্রীর পাশে বসেই শুনলেন চাকরি নেই
স্ত্রী ক্যানসারে আক্রান্ত। লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে। মরণাপন্ন স্ত্রীর পাশে বসেই মর্মান্তিক খবরটি পেলেন অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান। জানলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে তাকে। তিনি আর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নন। একমাত্র সন্তানকে নিয়ে জীবনের এই কঠিন সময়ে আজ অনেকটা অসহায় তিনি।
এর আগে অবশ্য অনেক ঘটনা ঘটেছে। পত্রিকায় কলাম লিখে ইতিহাস বিকৃতি করেছেন এ অভিযোগ ওঠে অধ্যাপক মোর্শেদ হাসানের বিরুদ্ধে।
তার শাস্তির দাবিতে মাঠে নামে ছাত্রলীগ। নিজের ভুল স্বীকার করেন মোর্শেদ হাসান। প্রত্যাহার করে নেন লেখা। পাশাপাশি দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনাও করেন। কিন্তু এতেও মন গলেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। ‘মুক্তবুদ্ধির চর্চা কেন্দ্র’ বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট তাকে অব্যাহতির সিদ্ধান্তই অনুমোদন করেছে। ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে অধ্যাপক হাসানের এই দণ্ড নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা আলোচনা চলছে। ইতিহাস বিকৃতি অবশ্য কেউই সমর্থন করবে না। কিন্তু ভুল স্বীকার ও মানবতার বিষয়টি দেশের গৌরবময় অধ্যায়ে নেতৃত্বে দেয়া প্রতিষ্ঠান বিবেচনা করবে না তা মানতে নারাজ অনেকেই। তারা বলছেন, ভুল একটি মানবিক বিষয়। আর অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানের সময়টা এখন কাটছে মানবিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে। এ অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিষয়টি হয়তো ভিন্নভাবে দেখলেও দেখতে পারে।
অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষক সংগঠন সাদা দলের নেতা। ২০১৮ সালে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ শিরোনামে তিনি একটি লেখা লেখেন। ওই লেখায় তিনি ইতিহাসের বিকৃতি করেছেন এবং বঙ্গবন্ধুর অবমাননা করেছেন এমন অভিযোগ ওঠে। ওই বছর ২রা এপ্রিল তাকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। ওই কমিটি অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায়। এ ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেয়া যায় তার মতামত চাওয়া হয় এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের কাছে। তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়ার পক্ষে মত দেন এটর্নি জেনারেল। বিষয়টি আরো পর্যালোচনার জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। বুধবার সিন্ডিকেটের সভায় ট্রাইব্যুনালের সুপারিশ অনুযায়ী তাকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।