সেই মসজিদ কমিটির সঙ্গে তিতাসের গোপন বৈঠক!
নারায়ণগঞ্জের তল্লা বাইতুল সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভয়াবহ এ ঘটনায় অভিযোগের আঙুল যখন তিতাস গ্যাস ও মসজিদ কমিটির দিকে, তখন তদন্ত কমিটির জিজ্ঞাসাবাদের নামে অভিযুক্তরাই বৈঠক করেছেন। তবে বৈঠকে কী আলোচনা হলো তিতাস অফিস মুখ না খুললেও মসজিদ কমিটির সভাপতি কিছুটা তথ্য দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত তিতাস গ্যাসের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ে মসজিদ কমিটিকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাদের সঙ্গে বৈঠক করে তিতাসের গঠিত তদন্ত কমিটি। আর বৈঠকের পুরোটা সময় জুড়েই তিতাস অফিসের মূল ফটকে ছিল পুলিশ ও আনসার সদস্যদের পাহারা। সাংবাদিক প্রবেশেও ছিল নিষেধাজ্ঞা। দীর্ঘ এই বৈঠক নিয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর মসজিদ কমিটি দিলেও তিতাস গ্যাসের তদন্ত কমিটি মুখ খুলতে নারাজ।
জানা গেছে, বৈঠকে অংশ নেন তিতাস গ্যাসের পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। আর মসজিদ কমিটি থেকে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি আব্দুল গফুর, সহ-সভাপতি সামসুদ্দিন সরদার, মামুন ও স্বপন।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিতাস গ্যাসের তদন্ত কমিটির সদস্যরা বের হন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়েই গাড়িতে উঠে চলে যান তারা।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈঠকে অংশ নেয়া এক ব্যক্তি জানান, আগে পাইপ বসানো হয়েছে, নাকি মসজিদ হয়েছে সেই প্রশ্নের উত্তরও জানতে চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পাইপ সংস্কারে কে টাকা চেয়েছে? কার কাছে চেয়েছে সে বিষয়েও সুনির্দিষ্ট উত্তর চেয়েছে।
মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল গফুর জানান, তিতাস আমাদের ডেকে এনে একটি ফরম পূরণ করিয়ে নিয়েছে। তিতাসের কর্মকর্তারা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছেন যে, আপনি কোনো অভিযোগ করেছিলেন কিনা। আমি বলেছি আমি না আমাদের কমিটির সম্পাদক করেছেন। কর্মকর্তারা আমাকে বলেছেন আপনি অভিযোগ করেছেন কিনা সেটা বলেন। আমি বলেছি, না। তিনি বললেন তাহলে সেটাই লেখেন। আমি সেটাই লিখেছি।
তিনি আরও বলেন, আজ আমি এবং আমাদের কমিটির সহ-সভাপতি এবং কমিটির বাইরের দু’জন এসেছিলাম। আমি আমার আগের বক্তব্যই বলেছি। কিন্তু কর্মকর্তাদের কথা, আপনি অভিযোগ দেননি সেটাই লেখেন। আর সম্পাদক সাহেব কার সঙ্গে কথা বলেছেন আমি জানি না। কিন্তু সম্পাদক আমাদের বলেছেন ‘আমি তিতাসের অফিসে কথা বলেছি। তারা ৫০ হাজার টাকা হলে কাজ করে দেবে।’ তখন আমাদের কমিটির ফান্ডে এত টাকা ছিলা না। টাকা যোগাড় করার আগেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা এলাকায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরণে ৩৭ জন অগ্নিদগ্ধ হন। এতে ২৮ জন মুসল্লি মারা যান।