বিচারবহির্ভূত হত্যা: চট্টগ্রামে ওসিসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা
বিচারবহির্ভূত ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার ওসিসহ ৬ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বুধবার (২৬ আগস্ট) চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার কৌশিক আহমেদের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভূজপুর থানা পুলিশের ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত প্রবাসী হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী শারমিন আক্তার। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে হাটহাজারী সার্কেলকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আবদুল্লাহ, পুলিশ পরিদর্শক ওবাইদুল ইসলাম, এসআই মো. শাহাদাত হোসেন, মো. রাশেদুল হাসান ও প্রবীণ দেব, এএসআই কল্পরঞ্জন চাকমা এবং ওই গ্রামের আবদুল মান্নান ওরফে ‘কসাই’ মান্নান।
নিহত হেলাল উদ্দিন একই এলাকার জাফর আলমের ছেলে। প্রবাসে থাকলেও বেশ কিছুদিন আগে তিনি দেশে আসেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়, চলতি বছরের ২৩ মে রাতে বাদীর স্বামী মো. হেলাল উদ্দিনকে ধর্ষণ মামলার আসামি দেখিয়ে বাড়ি থেকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। মামলার ৭ নম্বর আসামি আবদুল মান্নানের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পুলিশ ধর্ষণ মামলা সাজিয়ে হেলালকে আটক দেখায়। মান্নানের সঙ্গে হেলালের আর্থিক বিরোধ ছিল। ঘটনার দিন গভীর রাতে হেলালকে নিয়ে অন্য আসামিদের সাজানো গ্রেপ্তারের অভিযানে নামে পুলিশ। এরপর ওসিসহ ছয় পুলিশ সদস্য হেলালকে ক্রসফায়ারে হত্যা করেন। শারমিন আকতার এ বিষয়ে থানায় মামলা দিতে গেলে ওসি ক্ষুব্ধ হন এবং তাকে বিভিন্নভাবে ভয় দেখান।
মামলার বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের কোর্ট ইন্সপেক্টর সুব্রত ব্যানার্জি বলেন, ভূজপুর থানার ওসির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে আমি এখনও কোনো কাগজপত্র হাতে পাইনি। কাগজপত্র হাতে পেলে আদালতের নির্দেশনা মতে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
মামলার আইনজীবী দেওয়ান নজরুল বলেন, ক্রসফায়ারের অভিযোগ এনে ওসিসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলা নম্বর-১১১। মামলায় বিচারক বিষয়টি আমলে নিয়ে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
শারমিন আকতার বলেন, আমার স্বামী ধর্ষণ মামলায় জড়িত ছিলেন না। আমার স্বামীকে মামলার আসামি ‘কসাই’ মান্নানের সহায়তায় পুলিশ ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে। অথচ আমার স্বামীর নামে থানায় কোনো মামলা নেই। এলাকার লোকজন তা একবাক্যে স্বীকার করবে। অর্থের কাছে বিক্রি হয়ে পুলিশই আমার স্বামীর হত্যাকারী। আমি ওই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
এ বিষয়ে ভূজপুর থানার ওসি শেখ আবদুল্লাহ বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। থানায় মামলার কোনো কাগজপত্র আসেনি।