পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আমীরে জামায়াতের বিবৃতি
দশই মহররম পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান শুক্রবার এক বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে পবিত্র আশুরার দিনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময়। মহান আল্লাহ এই দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এই দিনেই পৃথিবী ধ্বংস হবে। আশুরার দিন আল্লাহ পৃথিবীর প্রথম মানব হযরত আদমকে (আ:) সৃষ্টি করেছেন।
এই দিন হযরত নূহের (আ:) আমলের প্লাবন শেষ হয় এবং নূহের (আ:) জাহাজ তুরস্কের ‘জুদি’ নামক পর্বতে গিয়ে থামে। আশুরার দিন হযরত ইব্রাহিম (আ:) জালিম বাদশাহ নমরুদের অগ্নিকুণ্ড থেকে নিরাপদে মুক্তি পান। এই দিন হযরত ইউনুস (আ:) মাছের পেট থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। আশুরার দিনে হযরত আইয়ুব (আ:) দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। এই দিন আল্লাহ জালিম বাদশা ফিরাউনকে দল-বলসহ পানিতে ডুবিয়ে মেরেছেন এবং মুসা (আ:) ও তার অনুসারীরা ফেরাউনের হাত থেকে নাজাত লাভ করেছেন।
আশুরার দিন হযরত সুলাইমান (আ:) তার হারানো রাজত্ব ফিরে পান। এই দিনে হযরত ইয়াকুব (আ:) হারানো ছেলে হযরত ইউসুফকে (আ:) ফিরে পেয়েছিলেন। এই দিনে হযরত ঈসা (আ:) জন্মগ্রহণ করেন এবং এই দিনেই তাকে দুনিয়া থেকে আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয়।
দশই মহররম কারবালা প্রান্তরে বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) দৌহিত্র হোসাইনের (রা:) শাহাদাতের ঘটনা মুসলিম জাতির ইতিহাসে একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণীয় ঘটনা। এই ঘটনার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। আজও মুসলিম উম্মাহ অত্যন্ত ব্যথিত হৃদয়ে কারবালার ঘটনা স্মরণ করে আবেগে আপ্লুত হয়।
হযরত হোসাইন (রা:) অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গিয়ে সেদিন কারবালা প্রান্তরে পরিবার-পরিজন নিয়ে শাহাদাত বরণ করেছিলেন। রাসূল (সা:) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা এবং তার সাহাবীদের প্রবর্তিত খেলাফতি শাসন ব্যবস্থা অক্ষুন্ন রাখার জন্য তিনি শাহাদাত বরণ করেছেন। ইসলামী খেলাফতের ব্যাপারে কোনো ধরনের আপোষ না করার কারণেই কারবালার ঘটনা ঘটেছিল। কারবালার ঘটনা আমাদেরকে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে আপোষহীনভাবে সংগ্রাম করার কথাই শিক্ষা দেয়।
আজকে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে যে শোষণ, জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন চলছে তা থেকে মানুষকে মুক্তি দেয়ার জন্য আপোষহীনভাবে সংগ্রাম করার কথাই দশই মহররমের ঘটনা আমাদেরকে শিক্ষা দেয়। কারবালার ঘটনা থেকে শিক্ষা লাভ করে সেই সংগ্রামী চেতনা ধারণ করে আমরা যদি অন্যায়, অসত্য, শোষণ, জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তুলতে পারি তাহলেই মহর্রমের আলোচনা স্বার্থক হবে এবং হযরত হোসাইনের (রা:) শাহাদাতের প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করা হবে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি