জর্জ ফ্লয়েডের পর জ্যাকব ব্লেক
ক’দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে ‘ব্ল্যাক লাইভ মেটারস’ আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। এ ঘটনাটির রেশ কাটতে না কাটতেই এবার আরেক কৃষ্ণাঙ্গ জ্যাকব ব্লেককে অকারণে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে মার্কিন পুলিশের বিরুদ্ধে। উইসকনসিনের কেনোশা শহরের এই ঘটনায় আবারও উত্তাল আমেরিকা।
ব্লেক এখন প্যারালাইজড
মার্কিন পুলিশের গুলিতে মারাত্মক আহত কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জ্যাকব ব্লেক আর আগের মতো সুস্থ স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করতে পারবেন না। অস্ত্রোপচারের পরও আশার আলো দেখাতে পারেননি চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার এই দুঃসংবাদ দিয়েছেন ব্লেকের আইনজীবী বেঞ্জামিন ক্রাম্প।
অভিযোগ উঠেছে, গত ২৩ আগস্ট আমেরিকার উইসকনসিনের কেনোশা শহরে জ্যাকব ব্লেক নামে ওই কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে অকারণে গুলি করে পুলিশ। রাস্তার ধারে পার্ক করে রাখা তার এসইউভি’র মধ্যে তিন সন্তানকে রেখে, কোনো একটা প্রয়োজনে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে গাড়ির দরজা খুলে চালকের আসনে বসার সময়, পুলিশ পেছন থেকে তাকে বেশ কয়েকটি গুলি চালিয়ে দেয়। সন্তানদের চোখের সামনেই এমন নির্মম ঘটনাটি ঘটে যায়। ঘটনাস্থলের কাছে থেকে এক ব্যক্তি পুরো ঘটনাটি সেলফোনে ভিডিও করেন। পরে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। পর দিন ২৪ আগস্ট থেকে কৃষ্ণাঙ্গ অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আবারও অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে আমেরিকা। কেনোশা শহরে কারফিউ জারি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হয়।
জ্যাকব ব্লেকের পারিবারিক আইনজীবী বলেন, ‘ব্লেকের শরীর প্যারালাইজড হয়ে গেছে। উনি যদি আবার হাঁটতে পারেন, সেটা হবে ওর জন্য এক মিরাকল।’ যে শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা নির্দোষ নিরপরাধ জ্যাকব ব্লেকের শরীরে গুলি চালিয়েছেন, তাকে যাতে গ্রেপ্তার করা হয়, তার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন তার আইনজীবী। এই ঘটনায় জড়িত বাকিদেরও যাতে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়, ব্লেকের পরিবারের তরফে সে দাবিও জানানো হয়েছে।
পুলিশের গুলি খাওয়ার পর ২৯ বছর বয়সী মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ জ্যাকব ব্লেক এখন হাসপাতালে। শরীর থেকে গুলি বের করতে সার্জারি করতে হয়েছে। পুলিশ পেছন থেকে গুলি করায়, গুলি লাগে ব্লেকের মেরুদণ্ডে। গুলির আঘাতে টুকরো টুকরো হয়ে যায় মেরুদণ্ড। তাই অস্ত্রোপচারের পরও শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াতে পারবেন না কেনোশা শহরের ওই কৃষ্ণাঙ্গ যুবক।
ব্লেকের বাবা সিনিয়র ব্লেক ঘটনাটিকে ‘কাণ্ডজ্ঞানহীন হত্যা চেষ্টা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি জানান, তার ছেলেকে পরপর সাতটি গুলি করেছেন ওই অফিসার। যদিও আমেরিকার একটি সংবাদপত্রের কাছে তিনি দাবি করেছেন, তার ছেলের শরীরে আটটি গুলির ক্ষত দেখা গেছে। ফলে, ঠিক কয়টি গুলি লেগেছে, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা অবশ্য জানিয়েছিলেন, তারা পরপর সাতটি গুলির শব্দ শুনতে পেয়েছেন। গুলির আঘাতে ব্লেকের মেরুদণ্ড ভেঙে যাওয়া ছাড়াও একটি গুলি তার বাহুতে আঘাত হেনেছে। গুলিতে তার কিডনি ও লিভারও বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কেনোশার এই গুলি চালনার ঘটনায় বেন ক্রাম্পের নেতৃত্বে লিগ্যাল টিম পুলিশ ডিপার্টমেন্টের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি শুরু করেছে। ঘটনার পর থেকে উইসকনসিনের পুলিশ মুখে কুলুপ এঁটেছে। যে পুলিশ কর্মকর্তারা এ ঘটনায় জড়িত, তাদের নামও প্রকাশ্যে আনা হয়নি। যদিও উইসকনসিন ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস ঘটনার তদন্তে নেমেছে।
সম্প্রতি পুলিশের হেফাজতে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর জেরে উত্তপ্ত হয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু ওই ক্ষোভ নিভে যেতে না যেতেই নতুন করে কেনোশা শহরে জ্যাকব ব্লেককে গুলি করার ঘটনাটি আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ট্রাকসহ একাধিক গাড়িতে আগুন দেওয়াই শুধু নয়, রাস্তায় ভাঙচুরও চালায়। তাদের ঢিলের আঘাতে রাস্তার পাশের বহু ভবনের জানালার কাচ ভেঙে যেতে দেখা গেছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের নিরস্ত্র করতে গেলে সংঘর্ষও বেধে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে দাঙ্গা পুলিশ রাস্তায় নেমে আসে। কারফিউ জারি করে বিক্ষোভকারীদের সরানো হয়।
এই ঘটনার পর উইসকনসিনের ডেমোক্রেটিক গভর্নর টনি এভারস ঘটনার নিন্দা জানান। এক টুইট বার্তায় গভর্নর বলেন, ‘রবিবার জ্যাকব ব্লেককে যেভাবে গুলি করা হয়েছে, তার নিন্দা করছি। নিজের এসইউভির দরজা খুলে চালকের আসনে বসার সময়, তিন শিশু সন্তানের সামনে পেছন থকে ব্লেককে গুলি করা হয়। ব্লেক বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি। তার অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর।’ পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে আশ্বস্ত করেন গভর্নর।
নতুন ভিডিও ফুটেজ
ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থেকে ধারণ করা ২৪ সেকেন্ডের আরও একটি ভিডিও ফুটেজ মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন-এর হাতে এসে পৌঁছেছে। নতুন ভিডিও ফুটেজের বর্ণনা দিয়ে সিএনএন জানায়, নিজের গাড়ির পেছনেই পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কোনো একটি বিষয় নিয়ে তর্কবিতর্ক চলছিল জ্যাকব ব্লেকের। এ সময় ওই স্থানে আরও বেশ কয়েকজন মানুষ জটলা পাকিয়েছিলেন। তারপরই রণেভঙ্গ দিয়ে গাড়ির ড্রাইভিং সিটের দিকে এগিয়ে যান ব্লেক। গাড়িতে তার জন্য ৩, ৫ ও ৮ বছর বয়সী তার তিন ছেলে অপেক্ষা করছিল। পুলিশের সঙ্গে ঠিক কী নিয়ে তর্কবিতর্ক হচ্ছিল তা ভিডিওতে স্পষ্ট না হলেও, ওই ঘটনার পরম্পরায় ব্লেকের ওপর পুলিশের গুলি চালানোর ব্যাপারটি একটু অস্বাভাবিকই ছিল।
ব্লেকের বাবা সিনিয়র ব্লেক বলেন, ‘আমার নাতিরা আমাকে প্রশ্ন করছে- কেন পুলিশ তাদের বাবার পিঠে গুলি করেছে।’
ব্লেকের পারিবারিক আইনজীবী বেঞ্জামিন ক্রাম্প দাবি করেছেন, রবিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় সারি সারি ভবনের মাঝখানে কেনোশার রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন জ্যাকব ব্লেক। রাস্তার পাশে দুই নারী কলহে জড়িয়ে পড়েছে দেখে তিনি গাড়ি থামান এবং তাদের বিবাদ থামানোর চেষ্টা করেন। এদিকে, ঝগড়ার খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে হাজির হয় কেনোশার পুলিশ।
ঘটনাস্থলের কাছাকাছি ছিলেন রায়সিন হোয়াইট নামে এক পথচারী। তার সেলফোনে ধারণ করা ভিডিওটিই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। রাস্তা পার হওয়ার সময় তিনি দুই নারীর ঝগড়া-বিবাদ শুনতে পান। এ সময় সেখানে ব্লেক এসে হাজির হন। ঠিক কী নিয়ে দুই নারী ঝগড়া করছেন তা তার জানা ছিল না। গাড়ি থেকে নেমে ঝগড়ারত নারীদের পেছনে এক বাড়িতে প্রবেশ করেছিলেন ব্লেক। এরপর সেখান থেকে খানিক দূরে চলে গিয়েছিলেন হোয়াইট। কিন্তু কিছুক্ষণের মাঝে ফিরে এসে দেখতে পান পুলিশের সঙ্গে কিছুটা ধস্তাধস্তির মতো হচ্ছে ব্লেকের। এক পুলিশ সদস্য এ সময় তার দিকে পিস্তল তাক করে ছিল। পুলিশের সঙ্গে ঠিক কী কারণে ব্লেকের বিবাদ শুরু হলো তা জানা নেই হোয়াইটের। বিবাদের মাঝখান থেকে ব্লেক যখন নিজের গাড়ির দিকে এগিয়ে আসছিলেন তখন থেকেই সেলফোনে ভিডিও করতে শুরু করেছিলেন তিনি। ভিডিওতে দেখা যায়, ব্লেক তার গাড়ির দরজা খুলে ড্রাইভিং সিটে বসতে যাচ্ছেন ঠিক এমন সময়ই খুব কাছ থেকে এক পুলিশ অফিসার তাকে পর পর সাতবার গুলি করেন। ভিডিওতে গাড়ির ভেতরেই অদৃশ্য হয়েছিলেন গুলিবিদ্ধ ব্লেক। কিন্তু ভিডিওটি যখন থেকে শুরু হয় তার আগ মুহূর্তে পুলিশের সঙ্গে তার কী এমন ঘটেছিল যে তাকে গুলি করা হয়? এ প্রসঙ্গে আইনজীবী বেঞ্জামিন ক্রাম্প বলেন, দুই নারীর ঝগড়া থেমে যাওয়ার পরই সেই স্থান ত্যাগ করতে যাচ্ছিলেন ব্লেক।
বর্তমানে উইসকনসিনের মিলোউকি হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ারে রয়েছেন ব্লেক। একের পর এক অস্ত্রোপচার চলছে তার শরীরে। তার চাচা জাস্টিন ব্লেক সিএনএনকে বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ যে সে এখনো বেঁচে আছে। প্রার্থনা করছি, সে যেন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে।’
কেউই অন্যের চেয়ে শ্রেষ্ঠ নয়
ব্লেককে গুলি করার প্রতিবাদে ঘটনার পরদিন রাতে বিক্ষোভকারীরা যখন রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর ও ভবনগুলোর দিকে চড়াও হয়েছেন তখন তাদের শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান ব্লেকের মা জুলিয়া জ্যাকসন। তিনি বলেন, ‘ভাঙচুর ও সহিংসতার কথা শুনলে আমার ছেলে অসন্তুষ্ট হবে। শহরে এ ধরনের বিশৃঙ্খলায় আমার ছেলে কিংবা আমার পরিবারের আসল চেহারাটি দেখা যায় না।’
জুলিয়া জ্যাকসন শুধু তার ছেলের জন্য নয়, বরং সমগ্র দেশের সুস্থতার জন্য সবার প্রতি প্রার্থনার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘কেউই অন্যের চেয়ে শ্রেষ্ঠ নয়। শ্রেষ্ঠত্ব কেবল একজনেরই। তিনি ঈশ্বর। আমাদের জাতির সুস্থতার জন্য আপনারা প্রার্থনা করুন। আমাদের দেশ যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু আমরা কি আসলে যুক্ত হতে পেরেছি?’
পরিবার অন্তপ্রাণ
পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানা গেছে, পুলিশের গুলিতে মারাত্মক আহত ২৯ বছর বয়সী জ্যাকব ব্লেক ইলিয়ানস অঙ্গরাজ্যের এভেনস্টোনে বড় হয়েছেন। এভেনস্টোনে হাইস্কুলে পড়ার সময় তিনি রেসলিং দলের সদস্য ছিলেন। জীবনকে নতুন করে সাজাতেই উইসকনসিনের কেনোশা শহরে এসেছিলেন ব্লেক।
অধিকার আদায়ের লড়াই সংগ্রামে অতীত ঐতিহ্য রয়েছে ব্লেকের পরিবারের। ১৯৬০ ও ৭০-এর দশকে এভেনস্টোনে ন্যায্য বসতি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ব্লেকের দাদা। চার্চে সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামেও তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। কৃষ্ণাঙ্গ নেতা মার্টিন লুথার কিং আত্মঘাতীর গুলিতে নিহত হওয়ার পরও তিনি এর প্রতিবাদ জানিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। তার আন্দোলনের জের ধরেই এভেনস্টোন সিটি কাউন্সিলের সদস্যরা শহরে বসতি নির্মাণের ক্ষেত্রে বর্ণবাদী সিদ্ধান্ত বাতিল করেছিল।
ব্লেকের ওপর গুরুতর কোনো অভিযোগ ছাড়াই গুলি চালানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে রাস্তায় নেমেছিলেন তার বোন মেগান বেশারও। ভাইয়ের সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরিবারের সদস্যদের প্রতি ব্লেকের মমতা ও যতেœর কথা উল্লেখ করেন তিনি। বেশার বলেন, ‘দুঃখ পেয়েছি বলে আমি কাঁদছি না। আমি কাঁদছি পরিবারের সদস্যদের কথা ভেবে সে (ব্লেক) এই মুহূর্তে কতটা বিচলিত হয়ে উঠেছে সেই কথা ভেবে। কারণ তার পরিবার এখন দুঃখ ভারাক্রান্ত। সে তার পরিবারকে ভালোবাসে।’
ব্লেকের আরেক বোন জিয়েথা ব্লেক জানান, জ্যাকব ব্লেকের সঙ্গে কতটা ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। তারা দুজন একসঙ্গে এমনভাবে বেড়ে উঠেছেন যে, অনেকেই তাদের যমজ ভেবে ভুল করে বসত। তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অনেক বিষয়েই মিল রয়েছে। এমন অনেক কিছুই ছিল যা আমরা দুজনই ভালোবাসতাম। প্রায় প্রতি রাতেই ব্লেকের সঙ্গে ফোনে কথা হতো। শুধু মজা করার জন্যই সে কল দিত।’
জিয়েথা আরও বলেন, ‘তার সন্তানরা ছিল তার পৃথিবী। শুধু তাই নয়, তার পরিবারও তার পৃথিবী।’ বড় বোন মেগান বেশারের মতো তিনিও বলেন, ‘আমরা এখন খুব মর্মাহত এই কথা ভেবে সেও না জানি কতটা ভেঙে পড়েছে। যতটা সে আমাদের নিয়ে ভাবে ততটা মনোযোগ সে তার নিজের দিকে কখনোই দেয়নি।’
পুলিশ পুনর্গঠনেই থামবে আন্দোলন
ব্লেকের ওপর গুলি চালোনো দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রশাসনিকভাবে ছুটি দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ ইউনিয়ন সাধারণ মানুষকে তদন্ত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। ব্লেকের ওপর গুলি চালানোর ঘটনাটি এমন এক সময় ঘটেছে যখন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ সমর্থকরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড ও ব্রিয়ন্না টেইলর নিহত হওয়ার জের ধরে ওই আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করেছিল। ব্লেকের ওপর গুলি চালানোর ঘটনাটি সেই আন্দোলনকে আবারও উসকে দিয়েছে।
এ বিষয়ে ব্লেকের পারিবারিক আইনজীবী বেঞ্জামিন ক্রাম্প বলেন, ‘আমরা যদি পুরো সিস্টেম না বদলাই তবে একের পর এক ভুক্তভোগীর সৃষ্টি হবে। আন্দোলনের পর আন্দোলন হবে এবং আমেরিকা জুড়ে অসংখ্য শহর এর ফলভোগ করবে।’
ব্লেকের ওপর গুলি চালানোর প্রতিবাদে উইসকনসিনের কেনোশায় বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উইসকনসিনের ডেমোক্রেট দলের গভর্নর টনি এভারস ন্যাশনাল গার্ড নিরাপত্তারক্ষীদের মোতায়েন করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। কেনোশা থেকে দুই ঘণ্টার দূরত্বে ইউসকনসিনের রাজধানী শহরে ৬ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে। শুধু উইসকনসিন নয়, ব্লেককে গুলি করার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি ও মিনিয়াপলিসেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনে দাঁড়িয়ে এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘তারা যতদিন আমাদের খুন করা বন্ধ না করছে, ততদিন আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।’