মা-মেয়ে নির্যাতনের ঘটনায় সেই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা
কক্সবাজার জেলার চকরিয়ায় আলোচিত হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিরানুল ইসলাম (মিরান) সহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতনের শিকার পারভীন বেগম বাদী হয়ে চকরিয়ায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মঙ্গলবার বিকাল ৫ টার দিকে বাদীনিসহ তার ২ মেয়ে থানায় হাজির হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযুক্ত আসামি হলেন হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম (মিরান) (৪৫), উত্তর হারবাং বৃন্দাবনখিলের জিয়াবুল হকের পুত্র নাছির উদ্দিন (২৮), মাহবুবুল হকের পুত্র নজরুল ইসলাম (১৯), এমরান হোসেনের পুত্র জসিম উদ্দিন (৩২) সহ ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০/৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বাদীনি পারভীন বেগম (৪৫) তার দায়ের করা মামলায় দাবী করেছেন, গত ২১ আগস্ট তার ছেলে এমরান, মেয়ে সেলিনা আক্তার (২৮) ও রোজিনা আক্তার (২৫) কে নিয়ে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কুসুমপুর ইউনিয়নের শান্তিরহাট থেকে মাইক্রোবাস যোগে সাতকানিয়ার কেরানীহাটে আসেন। কেরানীহাট থেকে একটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা নিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হায়দারনাশী গ্রামে তার মেয়ে বেবী আক্তারের শ্বশুর বাড়ীতে যাচ্ছিল। এ সময় তারা চকরিয়ার উত্তর হারবাং বৃন্দাবনখিল লালব্রিজ এলাকায় পৌঁছলে ২টি মোটর সাইকেল যোগে ৬ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তাদের ভাড়া করা সিএনজিকে ধাওয়া করতে থাকে। এক পর্যায়ে তাদের বহনকারী সিএনজি চালক ভয়ে ভিন্ন পথে হারবাংয়ের দক্ষিণ পহরচাঁদা নির্মাণাধীন রেললাইনে চলে যায়।
এ সময় মোটর সাইকেল নিয়ে আসা ব্যক্তিরাসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা তাদেরকে গরু চোর অপবাদ দিয়ে আটকিয়ে ফেলে। তাদের কাছে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল কেড়ে নেয়। এরপর আসামিরা বাদীনিসহ ২ মেয়ে, ১ ছেলে ও সিএনজি চালককে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করতে করতে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। এরপর ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম তাদেরকে চেয়ার দিয়ে মারধর করে। পরে ২১ আগস্ট শুক্রবার বিকাল ৬ ঘটিকার সময় হারবাং ফাঁড়ির পুলিশ খবর পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে তাদেরকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। পুলিশ তাদেরকে চকরিয়া হাসপাতালে এনে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থানায় নিয়ে যায়। বেশ ক’দিন ধরে এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও সংবাদপত্রে সমালোচনার ঝড় বইছে।
এ মামলায় ২, ৩ ও ৪নং আসামি পুলিশের হাতে আটক হয়ে বর্তমানে কক্সবাজার কারাগারে আটক রয়েছে।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, মামলায় উল্লেখিত আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান শুরু হয়েছে।
গত সোমবার উত্তর হারবাং বৃন্দাবনখিলের জিয়াবুল হকের ছেলে নাছির উদ্দিন (২৮), মাহবুবুল হকের ছেলে নজরুল ইসলাম (১৯), এমরান হোসেনের ছেলে জসিম উদ্দিন (৩২) কে গ্রেফতার করেছেন। তবে প্রধান আসামি হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামকে গ্রেফতারের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এছাড়া কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দী রেকর্ড করেছে। তদন্ত কমিটির প্রভাবশালী সদস্য চকরিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।