খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে প্রোপাগান্ডা চলছে: ফখরুল
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছে এমন মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আধিপত্যবাদ, সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে থাকায় দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে প্রোপাগান্ডা চলছে। বিভিন্ন ঘটনায় তাদের মিথ্যাভাবে জড়ানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরাতে গল্পকাহিনি তৈরি করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন ও বিশেষ মোনাজাত শেষে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ঘটনায় জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়াকে জড়িয়ে সম্প্রতি রাজনীতিতে যে আলোচনা-সমালোচনা চলছে সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র চক্রান্ত চলছে, তারই এটা অংশ এটা। এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।
তিনি বলেন, ‘বারবার এদেশের সত্যিকার অর্থে যারা মুক্তিযোদ্ধা, যারা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেন, নতজানু পররাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বাস করেন না, তাদের ওপর আঘাত বারবার এসেছে। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যেহেতু ইতিহাসে গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যেহেতু তিনি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড় করানোর জন্য কাজ শুরু করেছিলেন, সেজন্য তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে এবং অত্যন্ত সচেতনভাবে একটা প্রচারণা প্রোপাগান্ডা বেশ কিছুদিন ধরেই চালানো হচ্ছে যে, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জিয়ার যে অবদান সেটাকে খাটো করে দেখানোর প্রচারণা চলছে এবং তাকে ওই ১৫ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা চলছে। বারবার বলেছি, এটা একটা ষড়যন্ত্র। ষড়যন্ত্রটা পুরোপুরি প্রমাণ হয়েছে। ১৫ আগস্টের হত্যার বিচার হয়েছে। রায় হয়েছে এবং আদালত ফাঁসি কার্যকর করেছে। সেই ক্ষেত্রে আবার নতুন করে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম জড়ানোর চেষ্টা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের অপচেষ্টা এবং এই দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের চিন্তার প্রতি অবমাননা বলে আমি মনে করি।’
‘২১ আগস্টের সঙ্গে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জড়িত করার অপচেষ্টা সেটাও তারই একটা অংশ। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান তারা এদেশের স্বাধীনতার পতাকা তুলে ধরেছেন। আধিপত্যবাদীদের বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান। সেই কারণে তাদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। তাদেরকে বিভিন্ন ঘটনায় মিথ্যাভাবে জড়ানোর অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে তো ২১ আগস্টের কোনো প্রশ্ন উঠতে পারে না। সেটা তো প্রমাণিত হয়েছে। সেই মামলা তদন্ত হয়েছে চারবার এবং রায় হয়েছে। সে রায় কার্যকর শুরু হয়ে গেছে। সেখানে খালেদা জিয়াকে আবার নিয়ে আসা মানে হচ্ছে, এই সরকার জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তারা আজকে নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য, একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করার জন্য, ফ্যাসিবাদ স্বৈরাচারকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য, জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে এই সমস্ত গল্পকাহিনি তৈরি করছে।
তিনি আরও বলেন, ২১ আগস্টের ঘটনায় বিএনপি আলামত নষ্ট করিনি, শেখ হাসিনা সাক্ষী দেননি। অর্থাৎ তিনি সহযোগিতা করেননি। যে গাড়িটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সেই গাড়িটাও দেয়নি। এটা রাজনৈতিক হিসেবে ব্যবহার করছে। এই ঘটনায় যদি কেউ লাভবান হয়ে থাকে সেটা আওয়ামী লীগ।
শূন্য হওয়া পাঁচটি আসনে বিএনিপ অংশ নেবে কি-না, সে ব্যাপারে এখনো দলের সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান ফখরুল।
এ সময় দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাৎসহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।