শ্রিংলার আকস্মিক সফরে দেশবাসীর মনে সন্দেহ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে : নূর হোসাইন কাসেমী

0

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধণ শ্রিংলার আকস্মিক ঢাকা সফরকে ঘিরে দেশবাসীর মনে সন্দেহ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সাথে কী আলোচনা হয়েছে দুই দেশই গোপন রেখেছে। দেশবাসীর সংশয়-সন্দেহ দূর করতে সরকারকে এই বৈঠকের সবিস্তার প্রকাশ করতে হবে।

আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, কূটনৈতিক প্রটোকল অনুযায়ী ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের বৈঠক হওয়ার কথা বাংলাদেশের পরারাষ্ট্র সচিববের সাথে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সাথে একজন সচিব পদমর্যাদার ব্যক্তি বৈঠকে বসার সুযোগ পায় কী করে? তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে ভারত বাংলাদেশের চাওয়া-পাওয়ার প্রতি কোনরূপ ভ্রূক্ষেপ না করে একতরফাভাবে একে একে সব আদায় করে নিচ্ছে। অথচ ভারতের সাথে বাংলাদেশের প্রতিকূলে বিশাল বাণিজ্য বৈষম্য রয়েই গেল। এটা নিরসনে ভারত বাংলাদেশকে কোনরূপ ছাড় দেয় না। বাংলাদেশকে তিস্তার পানি দেয় না। সীমান্তে বাংলাদেশীদের লাগাতার হত্যা করে যাচ্ছে। সংকটের সময় পেঁয়াজ, চাল বন্ধ করে বাংলাদেশকে বিপদে ঠেলে দেয়। এসব সুস্পষ্ট সংকট নিয়ে আলোচনা না করে ভারতের পরাষ্ট্র সচিব কী নিয়ে আলোচনা করতে আসলেন এবং কিসের ভিত্তিতে বৈঠক সফল হওয়ার দাবি করা হয়, জাতিকে সেটা জানাতে হবে।

আল্লামা কাসেমী বলেন, বলা হচ্ছে হর্ষবর্ধন শ্রিলংকা বলে গেছেন ভারত বাংলাদেশকে অক্সফোর্ডের টিকা দিবে। কিন্তু আজকে ভারতের পত্রিকায় দেখলাম তারা রাশিয়ার কাছে টিকা চায়, আরো বিভিন্ন দেশে টিকা খুঁজছে। যে দেশ নিজেদের সংকটই মিটাতে পারছে না, তারা কী করে আমাদেরকে টিকা দেবে? আর অক্সফোর্ডের টিকার দরকার হলে বাংলাদেশ নিজেই তো ব্রিটেন থেকে সেটা সংগ্রহ করতে পারে, ব্রিটিশ টিকা ভারতের কাছ থেকে নিতে হবে কেন?

জমিয়ত মহাসচিব বলেন, মিডিয়ায় দেখলাম ভারত তাদের অবিক্রিত নিম্নমানের তুলা বাংলাদেশকে গছিয়ে দিতে ওঠেপড়ে লেগেছে। এর কারণ, ভারতে চলতি বছর আগের তুলনায় তুলা উৎপাদন বেশি হয়েছে। অথচ করোনা পরিস্থিতির কারণে একদিকে দেশটির রফতানি ও অভ্যন্তরীণ বাজারে কাপড়ের চাহিদা কমে গেছে, অন্যদিকে চীন ভারত থেকে তুলা কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। যে কারণে ভারতে বিপুল পরিমাণ তুলা জমে গেছে। অক্টোবরে তুলা উৎপাদনের নতুন মৌসুম শুরুর আগে আগে গুদাম খালি করতে ১৫ থেকে ২০ লাখ বেল পুরনো তুলা বাংলাদেশে বিক্রি করতে চায়।

তিনি বলেন, এই পুরনো তুলা গছাতে ভারত প্রচলিত বিটুবি (ব্যবসায়ী থেকে ব্যবসায়ী) প্রক্রিয়ায় না গিয়ে, জিটুজি (সরকার থেকে সরকার) প্রক্রিয়ায় টিসিবির কাছে বিক্রি করতে চায়। অথচ গত ৩০ বছরে টিসিবির তুলা আমদানির অভিজ্ঞতা নেই। এতে একদিকে মানহীন তুলা আমদানির যেমন ঝুঁকি আছে, তেমনি এসব পুরনো তুলা দিয়ে তৈরি কাপড় বিশ্ব দরবারে দেশের পোশাকখাতের সুনামহানীর জোর আশঙ্কা রয়েছে।
আল্লামা কাসেমী বলেন, যখন ভারতের নানা অন্যায় ও আগ্রাসী পদক্ষেপের ফলে দেশের জনগণ উদ্বিগ্ন ও বিক্ষুব্ধ, তখন আমরা দেখেতে পাচ্ছি ঢাকার সেগুন বাগিচা দপ্তর দিল্লির সাউথ ব্লকের প্রতি গভীর অনুগত্য প্রদর্শনে ব্যস্ত। দেশবাসী এতে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com