রাবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে গণশুনানি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে শিক্ষকদের দেয়া অভিযোগ আমলে নিয়ে শুনানি করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
গত সোমবার (১৭ আগস্ট) ইউজিসির জেনারেল সার্ভিসেস অ্যান্ড এস্টেট ডিভিশনের সিনিয়র সহকারী পরিচালক গোলাম দস্তগীর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে শুনানির বিষয়টি জানানো হয়েছে। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর ইউজিসি অডিটোরিয়ামে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে অভিযোগকারী ও অভিযুক্তদের উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দিয়েছে ইউজিসি। এদিন বিকেল ৩টায় অভিযোগ ও দলিলপত্রসহ সংশ্লিষ্টদের সেখানে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো.জাকারিয়ার বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও নিয়োগ বাণিজ্য এবং উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান কর্তৃক মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে ধোঁকা দেয়া ও শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা শিথিল করে উপাচার্যের মেয়ে ও জামাতাকে নিয়োগ প্রদান, অ্যাডহক ও মাস্টাররোলে কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্য, উপাচার্যের বাড়ি ভাড়া নিয়ে দুর্নীতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩ লঙ্ঘন করে বিভিন্ন বিভাগের সভাপতি নিয়োগ ইত্যাদি অভিযোগসমূহ তদন্ত করার নিমিত্তে কমিশন কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আপনাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের জন্য তদন্ত কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি উপাচার্যের দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত সংবলিত ৩০০ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে (ইউজিসি) জমা দেয়া হয়। উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের বিরুদ্ধে মোট ১৭টি অভিযোগ আনেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের একাংশ দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজ।
প্রতিবেদন তৈরি ও জমা দেয়ার আগে থেকেই উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ‘দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজ’র ব্যানারে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষকরা। তাদের মধ্যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মজিবুল হক আজাদ খান। শুনানির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দফতর, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসিসহ চার দফতরে আমরা অভিযোগ দিয়েছিলাম। সে অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযোগ তদন্তের জন্য ইউজিসি একটি শুনানির আয়োজন করেছে। সেখানে উভয়পক্ষকে ডাকা হয়েছে৷ এটি আসলে একটি ত্রিপক্ষীয় শুনানি। যারা অভিযোগ দিয়েছিলেন তাদের তিনজনকে সেখানে উপস্থিত হওয়ার জন্য চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে।
অধ্যাপক মজিবুল হক আজাদ খান আরও বলেন, চিঠিতে কারও নাম উল্লেখ করেনি ইউজিসি। যাদেরকে ডাকা হয়েছে শুধু তাদেরকেই চিঠি দেয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে অভিযুক্তদের মধ্য থেকে কাদেরকে ডাকা হয়েছে সেটি জানাতে পারেননি তিনি।