জিয়াউর রহমানের সুশাসন মানুষকে দিয়েছিল প্রশান্তি এবং নির্ভরতা
জিয়াউর রহমানের সবচেয়ে বড় অপরাধ সম্ভবত সততা, সুশাসন, ব্যক্তিত্ব, আভিজাত্য, সুশিক্ষা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, সর্বোপরি বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে ভ্রান্ত বাঙালি জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ প্রবর্তন করে সকল ক্ষেত্রে শেখ মুজিবুর রহমানকে পিছনে ফেলে দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। স্বাধীনতার পূর্বের শেখ মুজিবুর রহমান এবং স্বাধীনতাত্তোর শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে বিস্তর ফারাক। স্বাধীনতার আগের মুজিব সাড়ে সাত কোটি মানুষের জনপ্রিয় নেতা, কিন্তু স্বাধীনতার পরের মুজিব কেবলই একজন ক্ষমতালোভী, অত্যাচারী, স্বৈরতান্ত্রিক নেতা যিনি আজীবন ক্ষমতার মসনদে বসে দেশটাকে পৈতৃক সম্পত্তির মতোই ভোগ করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন।
জিয়াউর রহমান তাঁর মেধা, দেশপ্রেম, প্রজ্ঞা এবং সততা দিয়ে স্বাধীনতা পরবর্তী শেখ মুজিবুর রহমানকে শুধু পিছনেই ফেলে দেননি, একেবারে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করেছেন। যেখানে শেখ মুজিবুর রহমানের দুঃশাসনে পিষ্ট হয়ে মানুষ তাঁর প্রতি অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিল, সেখানে জিয়াউর রহমানের সুশাসন মানুষকে দিয়েছিল প্রশান্তি এবং নির্ভরতা। দুই নেতার প্রতি জনগণের অশ্রদ্ধা, অনীহা এবং শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ লক্ষ্য করা গেছে দু-জনের নিহত হওয়ার পর। একজনের সপরিবারে মর্মান্তিক নিহত হওয়ার ঘটনায় দেশের মানুষ আনন্দে মিষ্টি বিতরণ করেছে, অন্য জনের নিহত হওয়ার খবরে দেশের মানুষ কেঁদে বুক ভাসিয়েছে। জিয়াউর রহমানের অপরাধটা ঠিক ঐ জায়গায়। জিয়াউর রহমান যদি নিজেকে এমন অসামান্য উচ্চতায় নিয়ে না যেতেন তাহলে তাঁর মৃত্যুর চল্লিশ বছর পরেও শেখ মুজিব হত্যার সাথে জড়িত থাকার মিথ্যা অভিযোগ আনা হতোনা।
আওয়ামী লীগের লোকজনই শেখ মুজিবুর রহমানকে খুন করেছে, এরকম অনেক বক্তব্য দিয়েছেন সরকারের এমপি মন্ত্রীরা। তারা এ-ও বলেন যে, স্বাধীনতা বিরোধীরা মুজিবকে হত্যা করেছে; যা সম্পূর্ণ বানোয়াট। শেখ মুজিবকে যাঁরা সপরিবারে হত্যা করেছিলেন তাঁদের সকলেই ছিলেন খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের অনেকেই ছিলেন জাসদ সমর্থক। খন্দকার মোশতাক আহমেদ ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এইচটি ইমাম মোশতাক সরকারের শপথ পাঠ করিয়েছিলেন, তিনি আজও শেখ হাসিনার উপদেষ্টা। ইনু-মতিয়াদের কথা বলে লেখার ব্যাপ্তি ঘটাতে চাইনা। তাহলে মূল খুনীদেরকে কোলে বসিয়ে রেখে একজন নিরপরাধ জিয়াউর রহমানের প্রতি কেন তাদের এতো ক্ষোভ?
কারণ হচ্ছে চল্লিশ বছর আগে নিহত জিয়াউর রহমানের জনপ্রিয়তাকে আজও তাদের মোকাবেলা করার রসদ নেই, সাহস নেই, ক্ষমতা নেই। জিয়াউর রহমানের আদর্শকে তারা আদর্শ দিয়ে মোকাবেলা করতে অক্ষম। জিয়াউর রহমানের ভয়ে এখনও তাদেরকে দিনের ভোট রাতে করতে হয়। তাইতো জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান জিয়াউর রহমানকে নিয়ে তাদের এতো অপপ্রচার, এতো মিথ্যাচার। তবুও কি কিঞ্চিৎ লাভ হবে আওয়ামী লীগের? অবশ্যই না, কারণ সত্য হচ্ছে আগুনের মতো, যতোই চাপা দিতে চাও, ধোঁয়া উড়বেই। জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকবেন গণতন্ত্রকামী শান্তিপ্রিয় মানুষের হৃদয়ে অনন্তকাল তাঁর অনন্য কীর্তির মাধ্যমে………………….
©