শিশুর প্রশ্নে অনেক রহস্য
ছোট্ট শিশুর হাজারো প্রশ্নে অনেক সময় বাবা-মা বিরক্ত হয়ে যান। উত্তর দিতে না পেরে বাবা-মা শিশুকে বকাও দেন। শিশুর প্রশ্নের উত্তর না দিলে কিংবা প্রশ্ন করায় তাকে শাস্তি দিলে শিশুর সম্ভাবনা একটু একটু করে নষ্ট হয়ে যায়। অনেক সময় বাবা-মা তা বুঝতেও পারেন না। তাই আসুন জেনে নিন শিশুর প্রশ্নের মধ্যে কী কী রহস্য রয়েছে। জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালযের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ও সহযোগী অধ্যাপক তানজির আহম্মেদ তুষার
বুদ্ধি বেশি তো প্রশ্নও বেশি
যে শিশুদের বুদ্ধি বেশি তারা প্রশ্নও বেশি করে। কারণ শিশুটির জানার আগ্রহ থাকে, সে তার চারপাশের সবকিছু সম্পর্কে সচেতন হতে চায়, বুঝতে চায় ও পরখ করে দেখতে চায়। কোনো বিষয় ‘এমনি এমনি হয়’ মনে না করে কারণ খুঁজতে চায়। বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক দেখতে চায়। যে শিশু যত বেশি কার্যকারণ সম্পর্ক খুঁজে পায় সে তত বেশি বুদ্ধির পরিচয় দিতে থাকে।
প্রশ্নেই জ্ঞানের বিকাশ
শিশু প্রশ্ন করলে ও সেই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর পেলে তার জ্ঞানের ও বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটে। কেননা সে তার পৃথিবীকে আরও ভালো করে চিনতে পারে, বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে তার ধারণা সৃষ্টি হয় ও তাদের মধ্যে সম্পর্কগুলোও বুঝতে পারে। তখন তার নতুন জ্ঞান অর্জন করাটা শুধু সহজই হয় না, তা আনন্দেরও হয়।
ভাষার বিকাশ
শিশুকে তার প্রশ্নের উত্তর সুন্দর করে দিলে শিশুর শব্দভা-ার সমৃদ্ধ হয়। শুধু তাই নয়, সে শব্দের ভালো ব্যবহারও করতে শিখতে পারে। তার ভাষার সার্বিক বিকাশ ঘটে।
আন্তরিক সংযোগ
শিশুর প্রশ্নের উত্তর দিলে শিশু আনন্দিত হয়। শিশু এতে মনোযোগ পায়। শিশুর সঙ্গে বাবা-মায়ের ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। শিশুর বেড়ে ওঠা ও ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
উত্তর না দিলে
শিশুর প্রশ্নের যথাযথ উত্তর না দিলে শিশু সন্তুষ্ট হয় না। ইতিবাচক আচরণে মনোযোগ না পেয়ে শিশু রাগ-জিদসহ নানা নেতিবাচক আচরণ করতে পারে। ইতিবাচক দিকে আগ্রহের বৃদ্ধি না ঘটলে সে নেতিবাচক বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে। শুধু তাই নয়, শিশুর বাবা-মা বা পরিবারের সঙ্গে কথা শেয়ার না করে শুধু বন্ধু-বান্ধবদের কাছে বিভিন্ন প্রশ্ন করে কৌতূহল নিবারণের চেষ্টা করে। ভুল তথ্য পেয়ে ভুলভাবে পরিচালিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাবা-মা ও অভিভাবকদের উচিত প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে দেওয়া। বয়স অনুযায়ী ও শিশুর কাছে বোধগম্যভাবে উত্তরগুলো দিতে হবে। বুঝতে না পারলে প্রয়োজনে অন্য বাবা-মায়েদের সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে কিংবা বিভিন্ন বইপুস্তকের সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে।