রাজনৈতিক দলগুলোতেও গণতন্ত্রচর্চা চায় বিএনপি
সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও গণতন্ত্রচর্চা থাকাটা জরুরি বলে মনে করেন বিএনপি নেতারা। তাদের ভাষ্য, সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা গণতান্ত্রিক। চাইলে রাজনৈতিক দলগুলোকেও গণতান্ত্রিকভাবে বিনির্মাণ করা যেতে পারে। সেটা করাই এই সময়ে সবচেয়ে জরুরি।
শুক্রবার (১৪ আগস্ট) রাতে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সদ্য প্রয়াত আব্দুল মান্নানের ভার্চুয়াল স্মরণ সভায় অংশ নিয়ে দলের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
গত ৪ আগষ্ট বার্ধক্যজনিত কারণে ৭৮ বছর বয়সে আব্দুল মান্নান মারা যান। ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া সরকারের বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন আবদুল মান্নান। এর আগে তিনি বিমানের এমডিও ছিলেন। ঢাকা-২ আসনে (নবাবগঞ্জ-দোহার) ১৯৯১ সালে থেকে চার বার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির সংসদ নির্বাচিত হন তিনি।
স্মরণসভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এখানে আলোচনায় উঠে এসেছে, গুণী লোককে জীবিত অবস্থায় সম্মান দেয়া, মূল্যায়ন করা। যোগ্য লোককে অর্থাৎ যারা যে কাজটি করতে পারেন তাকে সে কাজটি করতে দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া।’
ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘একটা রাজনৈতিক কালচারের বিষয় আছে। রাজনৈতিক দলে সেই কালচার আমাদের আনতে হবে। রাজনৈতিক সংগঠনগুলোতে যারা কাজ করছি, নেতৃত্বে আছি, সহযোগিতা করছি সেখানে কিন্তু এই গণতান্ত্রিক চর্চা আমাদেরকেই আনতে হবে। এটা অত্যন্ত সত্য কথা। আমরা সমাজ চাইবো গণতান্ত্রিক, রাষ্ট্রব্যবস্থা চাইবো গণতান্ত্রিক কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিকভাবে বিনির্মাণ করবো না- এটা হতে পারে না। এটা অত্যন্ত জরুরী বিষয় অবশ্যই। গণতন্ত্রকে টেকসই করতে হলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে গণতান্ত্রিকভাবে বিনির্মাণ করাও জরুরি। বিচার বিভাগ, আদালত, প্রশাসন, জাতীয় সংসদ, রাজনৈতিক দল সব প্রতিষ্ঠান গণতান্ত্রিক হতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোই তো দেশ চালায়। আমাদের আরও উদ্যোগী হতে হবে। যে পরিবর্তন হচ্ছে তা বুঝতে হবে। আমরা আশাবাদী।’
ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে সারা পৃথিবীতে একটা পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। সেই পরিবর্তন বাংলাদেশেও হবে। সেই পরিবর্তন হবে ইতিবাচক পরিবর্তন। সেই পরিবর্তন হবে গণতন্ত্রের মুক্তির, সেই পরিবর্তন হবে ন্যায়ের পক্ষে। এই অবস্থায় আমাদের জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে ফলাফল গণতন্ত্রের পক্ষে নিতে প্রস্তুতি নিতে হবে।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমাদের যোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্য স্থানে বসাতে হবে।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘রাজনীতিতে আমাদের অনেকেই আনেক অবদান রাখতে চায়। কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি সে অবদান রাখতে দেয় না। অবদান রাখা থেকে বিরত রাখতে বাধ্য করে। রাজনীতিতে কর্তৃত্ববাদই প্রতিহিংসার জন্ম দেয়। অন্যের অবদান, উপস্থিতি স্বীকৃতি দিতে চায় না। এই কর্তৃত্ববাদী অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। পাশাপাশি জীবিত অবস্থায় গুণীজনকে মূল্যায়ন করতে হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে সাবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন- দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমান, ফজলুল হক মিলন, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক প্রমুখ।