অগণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা চালু থাকলে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটতেই থাকবে: নজরুল
আরাফাত রহমান কোকোর ৫১তম জন্মদিন উপলক্ষে বুধবার (১২ আগস্ট) সকাল ১০টায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে বনানী কবরস্থানে মরহুমের কবর জিয়ারত করতে যান বিএনপি ও দলটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতাকর্মী।
এসময় বনানী কবরস্থানের সামনে অবস্থান নিয়ে পুলিশ নেতা-কর্মীদের ভেতরে যেতে বাধা প্রদান করে। পরে বিশেষ অনুরোধে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক শরফুদ্দিন সপু, ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন ও ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ফুল নিয়ে সমাধিস্থলে প্রবেশের অনুমতি পান।
কবরস্থানে গিয়ে নেতৃবৃন্দ ফুল দিয়ে প্রয়াত কোকোর প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।
কবর জিয়ারত শেষে বাইরে এসে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিতি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আজকে আমাদের নেতা মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও এদেশের জনগণের ভোটে প্রথম নির্বাচিত নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোট পুত্র আরাফাত রহমান কবর জিয়ারত করতে এসেছিলাম। অনিবার্য কারণে আমরা সবাই যে আবেগ নিয়ে এসেছিলাম সেই আবেগ নিয়ে সবাই কবরস্থানের পাশে গিয়ে দোয়া করতে পারিনি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের পক্ষ থেকেও তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করেছি। আমরা শুনেছি, আপনারাও বাইরে বসে মোনাজাত করেছেন। আমরা আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়া করেছি। আমরা দোয়া করেছি খুন, গুম ও নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীদের জন্য। আমরা যেন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পারি, সেজন্যও দোয়া করেছি।’
এসময় ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ প্রসঙ্গে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা বিচারবহির্ভূত হত্যাকে একটি অপরাধ মনে করি। এই বিচার বহির্ভূত হত্যা বন্ধের একমাত্র উপায় জনগণের ভোটে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক একটি সরকার ব্যবস্থা। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়- এমন অগণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা চালু থাকলে সেখানে জনগণের প্রতি সরকারের কোনও দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা থাকে না। আর তখন এরকম বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটতেই থাকে।’
এসময় কবরস্থানের গেটের বাহিরে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব খাইরুল কবির খোকন, সহ-জলবায়ুবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার, শায়রুল কবির খান, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন প্রমুখ।
১৯৬৯ সালের ১২ আগস্ট তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) কুমিল্লায় আরাফাত রহমান কোকোর জন্ম। আরাফাত রহমান শর্মিলা রহমানকে বিয়ে করেন। তাদের দুই মেয়ে হয় যাদের নাম জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমান।
২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন আরাফাত রহমান কোকো। ওই দিন বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল হাসপাতালে নেয়ার পথে মাত্র ৪৫ বছর বয়সে মারা যান তিনি। পরে ২৮ জানুয়ারি তার মরদেহ দেশে আনা হয়। ওই দিনই বনানী কবরস্থানে চিরঘুমে শায়িত হন জিয়া-খালেদা দম্পতির ছোট ছেলে।