বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শতাধিক কম্পিউটার চুরি!
গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) আবারও কম্পিউটার চুরির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে গত তিন বছরে চার বারে দুই শতাধিক কম্পিউটার চুরির অভিযোগ পাওয়া গেলো।
এর আগে আরও তিন বার কম্পিউটার চুরির কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। ২০১৭ সালে ৫০টি, ২০১৮ সালে ৪৭টি ও ২০১৭ সালের আগেও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বেশ কিছু কম্পিউটার চুরির অভিযোগ ওঠে। এবার একুশে ফেব্রুয়ারি গ্রন্থাগার (কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার) থেকে ৯১টি কম্পিউটার চুরি হয়েছে বলে রেজিস্ট্রার দফতর সূত্রে জানা গেছে।
আজ সোমবার (১০ আগস্ট) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. শাহজাহান ও রেজিস্ট্রার ড. মো. নূরউদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তারা জানান, ঈদের ছুটি শেষে গতকাল রবিবার (৯ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর বিষয়টি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ অবগত হয়। এসময় দেখা যায়, গ্রন্থাগারের পেছনের দিকের জানালা ভেঙে কম্পিউটারগুলো চুরি করা হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, ‘চুরির বিষয়ে জানার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করেছি। সিসিটিভিতে ২৭ জুলাই থেকে গতকাল রবিবার (৯ আগস্ট) পর্যন্ত ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। এ সময়ে কোনও চুরির ঘটনা ঘটেনি। আর এর আগে ২০ তারিখ উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব)) গ্রন্থাগার পরিদর্শন করেছিলেন। তখনও সব কম্পিউটার যথাস্থানে ছিল। তাই আমরা ধারণা করছি ২০ থেকে ২৭ তারিখের মধ্যবর্তী সময়ে এই চুরির ঘটনা ঘটেছে।’
তিনি আরও জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ জন গার্ডের মধ্যে ২০ জন ২৩ তারিখ থেকে কোনও নির্দিষ্ট কারণ না জানিয়েই অনুপস্থিত ছিলেন। তাই নিরাপত্তাজনিত কিছুটা সমস্যা ছিল। তবে আমরা চেষ্টা করেছি অবশিষ্ট গার্ড ও আনসারদের সমন্বয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি (চলতি দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মো. শাহজাহান বলেছেন, এ ঘটনায় রেজিস্টার বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর আগেও তিন বার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিটার চুরি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে চুরির ঘটনার একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি বর্তমানে সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে।’
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখনও মামলা দায়েরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থানায় আসেনি। তবে প্রাথমিকভাবে এই চুরিকে রহস্যজনক চুরি বলে মনে হচ্ছে। মামলা হলে তদন্ত করে দেখা হবে, আসলে বিষয়টি কী হয়েছে।’
এদিকে কম্পিউটার চুরির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইন বিভাগের ডিন মো. আব্দুল কুদ্দুছ মিয়াকে প্রধান করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এই কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।