আ.লীগ সরকার রাতের ভোটে নির্বাচিত: ড. কামাল
বিশিষ্ট আইনজীবী ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল। এটাই ছিল আমাদের চাওয়া। কাজেই কোন প্রেক্ষাপটে এই জোট গঠিত হয়েছিল তা কারও কাছেই অজানা নয়। আমাদের চাওয়া বাস্তবায়নে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিলাম। আ.লীগ সরকার রাতের ভোটে নির্বাচিত, আগের রাতেই ভোট না হলে ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতো।
শুক্রবার সাক্ষাৎকারে ড. কামাল হোসেন এ কথা বলেন।
প্রবীণ এই আইনজীবী বলেন, আমরা একটি নির্বাচন চেয়েছি। যেখানে স্বাধীনভাবে মানুষ ভোট দেবে। মানুষ তার পছন্দমতো জনপ্রতিনিধি ঠিক করবে। এর আগে আমরা ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন দেখেছি। ওই নির্বাচনে দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ছিল না। তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় নির্বাচনের বিকল্প ছিল না। আমরা ভেবেছিলাম, পরে তারা সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেবে। কিন্তু তার বদলে গায়ের জোরে পুরো পাঁচ বছর কাটিয়ে দিল।
ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা আরও একটি ৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচন ঠেকাতে প্রথম থেকেই কাজ করছিলাম। সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে জনমত গড়ে তুলতে সারা দেশে সভা-সমাবেশসহ সাধারণ মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। রাষ্ট্রের মূল মালিক জনগণ- এটা বোঝাতে চেয়েছি। সে অনুযায়ী জনমত গড়ে তুলতে কাজ করেছি। একসঙ্গে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে পথ চলেছি। তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে বিএনপিসহ সবাই একত্রিত হওয়ার চেষ্টা করেছি। গড়ে উঠল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য কি ছিল তাও সবার জানা।
এদিকে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভেঙে গেলে লাভ হবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। এর বাইরে আর কারও লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ড. রেজা কিবরিয়া আরও বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার আন্দোলন করে যাচ্ছি। এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৩০ ডিসেম্বরের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল। আমরা চেয়েছিলাম একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। কিন্তু সরকারের অপকৌশলের কারণে তা আর হল না।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। সুসম্পর্কও বিদ্যমান। করোনাভাইরাসের কারণে দেখা-সাক্ষাৎ নেই। বাস্তবতাকে মেনে নিয়েই আমাদের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ হচ্ছে না। এটাকে রাজনৈতিক দূরত্ব বলা যাবে না। বড়জোর সামাজিক দূরত্ব বলা যেতে পারে। ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আছে, এখনও এই জোটের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়নি। আশা করি আগামী সেপ্টেম্বরে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বসব। সেখানেই নতুন করে কর্মসূচি ঠিক করা হবে। যদি একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আমাদের সবার দাবি থাকে, তাহলে এই দাবি বাস্তবায়নের সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টও টিকে থাকবে।