বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান শিবির সভাপতির
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, ভারী বর্ষণ ও উজানে ভারতের পাহাড়ি ঢলের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এ অবস্থায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় জরুরিভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আজ সিরাজগঞ্জে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করার সময় এসব কথা বলেন। এসময় কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা শাহিনুর আলম, ছাত্রশিবির সিরাজগঞ্জ শহর ও জেলা শাখার সভাপতিদ্বয়সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শিবির সভাপতি বলেন, ভয়াবহ বন্যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ১৩টি নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে অবস্থান করছে। ফলে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নাটোর, রাজবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বিভিন্ন জায়গায় নদী ভাঙ্গনও ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে বাড়ী-ঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
অন্যদিকে দুই দফা বন্যায় দেশের ৩৪ জেলায় দেড় লাখ হেক্টরেরও বেশি ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। একই সাথে প্লাবিত হয়েছে অসংখ্য মাছের ঘের, পুকুর ও ফসলের জমি । যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। চর, দ্বীপচর ও নদী তীরবর্তী এলাকাগুলো থেকে পানিবন্দি মানুষজন তাদের গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগিসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে সরকারি রাস্তা ও বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছেন। অনেক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিন যাপন করছেন। তাদের মাঝে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বাঁধ ও পাকা রাস্তাসহ বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেওয়া লোকজন বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য ও শৌচাগারের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গবাদি পশুর খাদ্যের অভাব আরো করুন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এমন অবস্থায় দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও চাহিদা মতো ত্রাণ পাচ্ছেন না অসহায় মানুষেরা। সহায়তার জন্য হাহাকার উঠলেও এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে বন্যা দূর্গতদের জন্য সহায়তার তেমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা। এমনকি লক্ষ লক্ষ মানুষ পবিত্র ঈদও কাটিয়েছে অনাহারে অর্ধাহারে। এদিকে বন্যা আরো দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেয়া হচ্ছে।
তিনি সরকার ও জনগণের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, সরকার বলছে, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় পর্যাপ্ত সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রানের জন্য হাহাকার উঠলেও সরকারের নিষ্ঠুর নিরবতা চরম দায়িত্বহীনতার বহিঃপ্রকাশ। বিপর্যস্ত মানুষদের উপর এমন অমানবিক আচরণ মেনে নেয়া যায়না। অবিলম্বে বন্যার্তদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রানের ব্যবস্থা করতে হবে। পানিবন্দি ও ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারী মানুষের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। একইভাবে সামর্থবানদের উচিৎ যার যার অবস্থান থেকে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানো।
নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রতিটি নেতাকর্মীকে যার যতটুকু সুযোগ আছে তা নিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তাদের সহায়তার জন্য ছাত্রজনতাকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি যার যার অবস্থান থেকে সবাই সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলে বন্যার্তদের কষ্ট লাঘব করা সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।
নেতৃবৃন্দ বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে সরকার, সামর্থবান জনগণ ও নেতাকর্মীসহ সবার প্রতি আহ্বান জানান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি