বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান’র মৃত্যুতে তারেক-ফখরুলের শোক
বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী, বিমানের সাবেক এমডি, সাবেক সংসদ সদস্য, ঢাকা জেলার সাবেক সভাপতি ও বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান জনাব আব্দুল মান্নান বার্ধক্যজনিত কারনে মঙ্গলবার রাত ৯:১৫ মিনিটে রাজধানীর এভার কেয়ার (অ্যাপোলো) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)। আব্দুল মান্নান এর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান।
এক শোকবার্তায় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান এর মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকার্ত ও মর্মাহত। তাঁর মতো একজন বিদগ্ধ ও গুনী রাজনীতিবিদের দেশের এই সংকটকালে পৃথিবী থেকে চলে যাওয়াতে সৃষ্টি হবে গভীর শুন্যতা। একজন মেধাবি ছাত্র হিসেবে তাঁর শিক্ষা জীবন ছিল সাফল্যে পরিপূর্ণ। পেশাগত জীবনেও তিনি বহু কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছিলেন মরহুম আব্দুল মান্নানের আদর্শপুরুষ। শহীদ জিয়ার রাজনৈতিক দর্শণকে বুকে ধারণ করে বিএনপিতে যোগদান করে সাংগঠনিক তৎপরতার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে তিনি একটি ইতিবাচক ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্যই তিনি নিজ এলাকা থেকে বার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতেন। মানব সেবাই ছিল মরহুমের রাজনীতির মূল লক্ষ্য। জনকল্যানমূলক কাজের জন্য তিনি এলাকাবাসির নিকট হয়েছিলেন প্রসংশিত। প্রাজ্ঞ, বিনয়ী ও আত্মপ্রত্যয়ী এই মানুষটি গভীর সংকটকালেও বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে অবিচল আস্থা রেখে গণতান্ত্রিক সংগ্রাম বেগবান এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করতে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। মৃদুভাষি ও ঋজু এই মানুষটি সরকারের অবিশ্বাস্য অবিচারের মুখোমুখি হয়েও নাগরিক ও মানবিক অধিকারের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। বিপন্ন গণতন্ত্রের এই দু:সময়ে বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে তাঁর কন্ঠ ছিল উচ্চকিত। তিনি বিএনপি সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। পেশা ও রাজনীতিসহ সকল কর্মকান্ডে দেশ ও দশের প্রতি তাঁর অঙ্গিকার সর্বদায় স্মরনীয়। তাঁর মৃত্যুতে যে ক্ষতি হলো তা সহজে পূরণ হবার নয়।
আমি মরহুম আব্দুল মান্নান এর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গ, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।”
অপর এক শোকবার্তায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, “মরহুম আব্দুল মান্নান ছিলেন একজন গণমুখী রাজনীতিবিদ। তাঁর রাজনীতির মূলে ছিল বহুদলীয় গনতন্ত্র ও দেশের সার্বিক উন্নয়ন। বিলম্বে রাজনীতিতে অংশ্রগ্রহণ করলেও ক্রমান্বয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনের এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বে পরিনত হন মরহুম আব্দুল মান্নান। তিনি ছিলেন একজন জনঘনিষ্ঠ রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনকল্যানমুল কাজেও তিনি যে অবদান রেখেছেন সেজন্য এলাকাবাসী তাঁকে একজন আস্থাভাজন নেতা হিসেবে বরণ করেছিলো। এই কারনেই বারবার তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দর্শণ ও গণতান্ত্রিক বহুত্ববাদে বিশ্বাসী রাজনীতিবিদ মরহুম আব্দুল মান্নান বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে নীতিহীনতা, যুক্তিহীনতা ও আদর্শহীনতা ছিল ঘোরতর অপছন্দের। সরকারি হুমকির মুখেও রাজনৈতিক মত ও পথ থেকে তাঁকে বিচ্যুত করা যায়নি। তাঁরমতো বিনয়ী ও শিষ্টাচারমন্ডিত মানুষের না ফেরার দেশে চলে যাওয়াতে শুধুমাত্র নবাবগঞ্জবাসিই নয়, দেশবাসি ও বিএনপি পরিবারের ওপর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর নীতি ও চিন্তার অনুসারী হিসেবে দেশের মানুষের সামষ্টিক স্বার্থকেই বেশি গুরুত্ব দিতেন। জাতীয়তাবাদী রাজনীতির একজন অনুসারী হিসেবে বিএনপিকে সুসংগঠিত করাই ছিল তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। বিভিন্ন সময়ে জাতির ঘোর দুর্দিনে মরহুম আব্দুল মান্নান গনতন্ত্র পুণ:রুদ্ধারের আন্দোলনে অত্যান্ত নিষ্ঠার সাথে দায়িত্বপালন করেছেন। গণতান্ত্রিক সংগ্রামের আপোষহীন নেত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। বর্তমান দু:সময়ে ভয় ও আশঙ্কার বিরাজমান পরিবেশে আব্দুল মান্নান সাহেবের মতো একজন বলিষ্ঠ নেতার উপস্থিতি খুবই আবশ্যক ছিল। তাঁর ইহধাম ত্যাগ আমাদের মধ্যে গভীর শুন্যতার সৃষ্টি করবে।
আমি মরহুম আব্দুল মান্নান এর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যবর্গ, আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্খীদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা।