এই প্রথম মহাকাশে হাঁটলেন শুধু দুই নারী নভোচারী ক্রিস্টিনা কখ্ আর জেসিকা মায়ার
এই প্রথমবারের মতন মহাকাশে হাঁটলেন শুধুই নারী নভোচারীদের একটি দল। এই মিশনে অংশ নিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন দুই নভোচারী ক্রিস্টিনা কখ্ ও জেসিকা মায়ার।
বিকল হয়ে যাওয়া একটি ‘পাওয়ার কন্ট্রোল ইউনিট’ প্রতিস্থাপন করতে গিয়ে তারা আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের বাইরে সাত ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন।
এর আগেও আরও চারবার মহাকাশে হেঁটেছেন মিজ কখ্ । তবে, মিজ মায়ারের জন্য এটিই ছিল প্রথম মহাকাশ মিশন।
নাসা জানিয়েছে, জেসিকা মায়ার হলেন মহাকাশ হাঁটায় অংশ নেয়া ১৫তম নারী।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভিডিও কল দিয়ে এই দুই নভোচারীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
অভিনন্দন জানাতে গিয়ে মি. ট্রাম্প এই দুই নভোচারীকে ‘সাহসী ও মেধাবী নারী’ বলে বর্ণনা করেছেন।
মিজ কখ্ একজন ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার। আর মিজ মায়ার মেরিন বায়োলজিতে ডক্টরেট করেছেন।
শুক্রবার গ্রিনিচ মান সময় বেলা ১১:৩৮ মিনিটে তাঁরা আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের বাইরে যান।
এ সময়ে তাদের গায়ে ছিল নাসার স্পেস-স্যুট বা মহাকাশযাত্রায় ব্যবহারের উপযোগী বিশেষ পোশাক।
এই দুই নভোচারীর হাঁটার গন্তব্য ছিল আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের পোর্ট-৬ ট্রাস স্ট্রাকচার নামক একটি স্থান।
সেখানে পৌঁছে তারা ব্যাটারি চার্জ-ডিসচার্জ ইউনিট (বিসিডিইউ) প্রতিস্থাপন করেছেন।
প্রতিস্থাপন শেষ করে তারা বিকল হয়ে যাওয়া সেই যন্ত্রাংশ নিয়ে ফিরে আসেন।
দুই নারী নভোচারীর এই মহাকাশ-যাত্রাকে ‘ঐতিহাসিক ঘটনার চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কামালা হ্যারিস।
এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ইতিহাসে এই প্রথমবারের মত শুধু নারী নভোচারীদের একটি দল মহাকাশে হাঁটলেন। এটি কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনাই নয়। নারীরা যে আকাশকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে, এই ঘটনা তাকেই মনে করিয়ে দিচ্ছে।
মার্চ মাসে নাসা এক ঘোষণায় জানিয়েছিল যে, এই প্রথম শুধু নারীদের দিয়ে গঠিত একটি দল মহাকাশ যাত্রায় যাচ্ছে। সেই দলে মিজ কখ্ ও তার সহকর্মী অ্যানি ম্যাকক্লেইন-এর নাম ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু তখন সেই মিশন স্থগিত করা হয়েছিল। কারণ মিজ ম্যাকক্লেইনের গায়ের উপযোগী মধ্যম আকৃতির মহাকাশ-স্যুট পাওয়া যাচ্ছিলো না।
https://twitter.com/KamalaHarris
মহাকাশে প্রথম যে নারী হেঁটেছিলেন তিনি হলেন রাশিয়ার নাগরিক স্ভেৎলিনা সাভিৎস্কায়া।
১৯৮৪ সালের ২৫শে জুলাই তিনি স্পেস স্টেশনের বাইরে ৩ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট সময় কাটিয়েছিলেন।
আর মহাকাশে হাঁটা প্রথম মানুষটির নাম অ্যালেক্সি লিওনভ। এই মাসের শুরুর দিকেই ৮৫ বছর বয়সে মি. লিওনভ মারা গেছেন।
এই মঙ্গলবারেই নাসা নতুন এক ধরণের স্পেস স্যুটের ঘোষণা করেছে। পৃথিবী থেকে চাঁদে পরবর্তী যে মিশনটি যাবে, সেটির নভোচারীরা হয়তো নতুন এই মহাকাশ-বর্মটি পরার সুযোগ পাবেন।
নাসা বলছে, নতুন এই স্পেস স্যুট এমনভাবেই নকশা করা হয়েছে যে, এটি যেই নভোচারী পড়বেন তার আকার বা আকৃতি নিয়ে ভাবতে হবে না।
কারণ ব্যক্তির গায়ের গড়ন যাই হোক না কেন, নতুন এই পোশাকে রয়েছে নভোচারীর শরীরের সাথে প্রয়োজন-মাফিক কাস্টমাইজড করে নেয়ার সুবিধা।