কোন চুলে কোন রং
গায়ের রং অনুযায়ী একটু বদল আনুন চুলের রঙেও। তাই বলে বিদেশি কায়দায় চুল রং করবেন না যেন। কেমন হবে রঙের ধরন? পরামর্শ দিলেন হেয়ার এক্সপার্ট জাভেদ হাবিব।
চুল রঙের নানা রকম
প্রথমেই চুলের রঙের ধরন সম্পর্কে দু’-এক কথা বলি। আমরা সাধারণত দু’টি কারণে চুল রং করি। প্রথমত, পাকা চুল ঢাকতে আর দ্বিতীয়ত, স্টাইল করতে। পাকা চুল ঢাকতে যেভাবে রং করা হয়, তার মধ্যে কোনো পেশাদারি কেরামতি নেই। ফলে তা বাড়িতেই করা যায়। কিন্তু লুক বদলাতে বা স্টাইল করতে যদি চুল রং করতে চান, তাহলে অবশ্যই স্যালঁয় গিয়ে রং করাবেন। মনে রাখবেন চুলের স্টাইল বদল কিন্তু একমাত্র পেশাদার হাতেই করা সম্ভব।
চুলের রঙে বদলে ফেলুন ব্যক্তিত্ব
হ্যাঁ, চুলের রঙের মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিত্ব বদলানো সম্ভব। অনেক সময় সাধারণ চুলে অল্প একটু হাইলাইট করে মুখশ্রী বদলে ফেলা যায়। পাল্টানো যায় চোখের চাউনি। ন্যাচারাল ব্ল্যাক হেয়ার কালারের চল ক্রমশ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এটা হাইলাইটের যুগ। চুলের সামনের দিকের লকসগুলো হয়তো একটু উজ্জ্বল রঙে হাইলাইট করলেন, আর ওমনি অন্যধরনের মাধুর্য ধরা পড়ল আপনার চোখে। একইভাবে কারো হয়তো চুলের ঘনত্ব ফুটিয়ে তোলার জন্য পিছন দিকের চুলের রং বদলানো দরকার। আবার কেউ বা কর্পোরেট লুক আনতে বদলান চুলের রং। আপনার জন্য কোনটা দরকার, তা একমাত্র বলতে পারবেন একজন অভিজ্ঞ চুল বিশেষজ্ঞ। তাই নিউ লুক যদি চান, চুল রং করান স্যালঁয়।
রং বাছুন বুঝে শুনে
এখানকার লোকদের গায়ের রং অনুযায়ী চুলের রং বাছা দরকার। বিদেশিদের মতো গাঢ় সোনালি, সাদাটে সোনালি, টুকটুকে লাল চুল আমাদের গায়ের রঙের সঙ্গে মানায় না। এই কথা মনে রাখবেন চুলের রং বাছার সময়। আমাদের ত্বকের সঙ্গে সাধারণত গাঢ় খয়েরি, তামাটে, বাদামি ইত্যাদি রং বেশি মানানসই হয়। তবে তারও মধ্যে আবার ফর্সা, অতি ফর্সা, কালো ইত্যাদির তারতম্য আছে। সেগুলোও মাথায় রাখা দরকার।
গায়ের রং যদি খুব ফর্সা হয়, তাহলে গাঢ় লাল ও মেরুন রং আপনার চুলে মানানসই। সেক্ষেত্রে গ্লোবাল হেয়ার কালার করুন। অর্থাৎ গোটা চুলই এই রঙে রাঙিয়ে তুলুন।
মোটামুটি ফর্সা হলে আপনার জন্য বাদামি বা খয়েরি রং সবচেয়ে উপযুক্ত।
আপনার গায়ের রং যদি কালো হয়, তাহলে চুলে করুন একাধিক রং। হালকা খয়েরি ও গাঢ় খয়েরির শেড পাশাপাশি ব্যবহার করতে পারেন। বাদামির সঙ্গে সোনালিও চলতে পারে। আবার বার্গেন্ডি, হানি ও চকোলেট এই তিনটি শেডও চলতে পারে পাশাপাশি। সেক্ষেত্রে খয়েরি, বাদামি বা বার্গেন্ডি রঙের ওপর প্রাধান্য থাকবে আর বাকিগুলো হবে সাপোর্টিং কালার।
আপনি যদি কর্পোরেট লুক আনতে চান, তাহলে চুলে তামাটে রং করুন। আবার বিয়েবাড়ি বা পার্টিতে যাওয়ার সময় চুলে করুন হালকা লালচে রং।
সোনালি রং ভালো লাগলে একটু তামাটে সোনালি, ক্যারামেল মেশানো সোনালির দিকে ঝুঁকবেন। হলদেটে সোনালি কিন্তু ভারতীয় গায়ের রঙে ভালো লাগে না।
রঙিন চুলের যত্ন
চুল রং করার পর তার সঠিক যত্ন না নিলে তা রুক্ষ হয়ে যায়। ফলে রঙিন চুলের চাই ঠিকমতো দেখভাল।
প্রথমত, শ্যাম্পুর দিকে বিশেষ নজর দিন। সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এতে রং বেশিদিন টিকে থাকে। তাছাড়া সালফেটযুক্ত শ্যাম্পু চুল ড্রাই করে দেয়, তাতে রঙিন চুল আরও রুক্ষ হয়ে ওঠে।
দিনে একবারের বেশি পানি দেবেন না চুলে। মনে রাখবেন, যত বেশি পানির ব্যবহার করবেন ততই আপনার চুল থেকে রং উঠে যেতে থাকবে। ফলে দিনে একবার চুল ধোয়াই যথেষ্ট।
কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। প্রতিবার শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই চুলে কন্ডিশনার লাগাবেন। তাহলে চুল মোলায়েম ও উজ্জ্বল থাকবে।
মাসে একবার স্যালঁয় গিয়ে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করান। তাহলে রঙিন চুলের জেল্লা থাকবে অটুট।
এই কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে চুল রং করতে পারেন অনায়াসে। তবে সঠিক ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলতে ও
স্টাইল স্টেটমেন্ট বজায় রাখতে গায়ের রং বুঝে সেই অনুযায়ী রাঙিয়ে তুলুন নিজের চুল।